যানজট, কোলাহল, মোড়ে মোড়ে গাড়ি, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, রিকশার জট— সাধারণত এমনই চিত্র রাজধানীবাসীর নিত্যসঙ্গী। তবে, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীর সরকারি ছুটির সঙ্গে শুক্র ও শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটি যোগ হওয়ায় ঢাকা অনেকটাই ফাঁকা হয়ে গেছে। তিনদিন ছুটি উপলক্ষে অনেকেই বেড়াতে গেছেন। বুধবার অফিস করে রাতেই অনেকে গ্রামের বাড়িতে চলে গেছেন।তিনদিনের এ ছুটির কারণে ঢাকার রাস্তায় যানবাহনের আনাগোনা কম। অন্যদিনের তুলনায় নেই বললেই চলে। রাজধানীর কোথাও ব্যস্ততা নিয়ে ছুটে চলা মানুষের জনজট নেই। সবখানেই প্রায় ফাঁকা ফাঁকা ভাব।হইহল্লা, হর্ন আর যান্ত্রিক শব্দের চিরচেনা ঢাকার রূপ যেন অনেকটাই বদলে গেছে আজ। তিন দিনের ছুটি পেয়ে অনেকেই গ্রামের বাড়িতে চলে গেছেন আবার অনেকে বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে দেশের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে ঘুরতে গেছেন। সব মিলিয়ে ঢাকা হঠাৎ ফাঁকা হয়ে গেছে।রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মূল সড়কে গাড়ি অনেক কম পাশাপাশি গণপরিবহনের সংখ্যাও কম। তবে মূল সড়কে রিকশার দাপট রয়েছে। সকালের দিকে ব্যক্তিগত কিছু যানবাহন ছাড়া রাজধানীতে চলেছে একেবারে কমসংখ্যক গণপরিবহন। সড়কে মাঝেমধ্যে দুই-একটি বাস দেখা যাচ্ছে। যে বাস চলছে, তাতে যাত্রী নেই বললেই চলে।মিরপুর থেকে থেকে সায়েদাবাদগামী একটি বাসের চালক জাকির হোসেন বলেন, যাত্রী কম হলেও ফাঁকা রাস্তায় গাড়ি চালাইয়া আরাম পাচ্ছি। কোনো প্যারা নাইক্কা।একই ধরনের অভিজ্ঞতার কথা জানালেন মোটরবাইকে রাইড শেয়ার করা মিথুন মিয়া। তিনি বলেন, সাধারণত উত্তরা থেকে ফার্মগেট আসতে কমপক্ষে দেড় ঘণ্টার মতো লেগে যায়। আজ এসেছি মাত্র ২০ মিনিটে।তিনি আরও বলেন, বুধবার রাত থেকেই মূলত ঢাকা ফাঁকা হতে শুরু করে। আজ আরও বেশি ফাঁকা লাগছে। সব রাস্তাই একদম খালি। রাস্তায় মানুষের আনাগোনা নেই বললে চলে।রামপুরা, মালিবাগ, কাকরাইল, পল্টন, গুলিস্তান, মতিঝিল অঞ্চল ঘুরে দেখাগেছে এসব অঞ্চলের রাস্তাগুলোতে যানবাহনে তেমন চাপ নেই। ফলে কোনো ধরনের ট্রাফিক সিগন্যাল ছাড়াই যাতায়াত করতে পারছে পরিবহনগুলো।
তিনি বলেন, রাস্তায় যানবাহনের সংখ্যা যেমন কম, তেমনি মানুষের চলাচল কম দেখা যাচ্ছে। ফলে কোনো ধরনের ঝুঁকি ঝামেলা ছাড়াই গণপরিবহনে উঠতে পারছেন ঘর থেকে বের হওয়া মানুষগুলো এবং যানজট মুক্তভাবে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াত করতে পারছেন তারা। আসাদগেট মোড় সিগন্যালের পুলিশ বক্সে কথা হয় ট্রাফিক পুলিশ সদস্য আকরামের সঙ্গে। তিনি বলেন, সকাল থেকেই গাড়ির তেমন চাপ নেই। তাই বলা যায় এক ধরনের অলস সময় পার করছি।বুধবার পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলন, টানা তিনদিনের ছুটির জন্য বিকেল থেকেই বাসস্ট্যান্ডে ভিড় করছে মানুষ। সন্ধ্যা গড়াতে না গড়াতেই চাপ আরও বাড়তে থাকে। আজ রাতেও ঢাকা ছেড়ে যাওয়া যাত্রীদের এমন চাপ থাকবে বলেও মনে করছেন তারা।