
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবেদিন ফারুক বলেছেন, শেখ মুজিব এক মিনিটে গণতন্ত্র হত্যা করে বাকশাল কায়েম করার মত নেতা। শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ভাবমূর্তি সকল কিছু হিন্দুস্তানের কাছে ইজারা দেওয়ার সরকার ছিল। তাই তিস্তার পানি আনতে পারে নাই। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে তৃণমূল নাগরিক আন্দোলন আয়োজিত "প্রতিবাদী অবস্থান" কর্মসূচি অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। গণতন্ত্র হরণকারী সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনারের গ্রেপ্তারের দাবিতে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।তিনি বলেন, আজকে পদ্মা শুকিয়ে যাচ্ছে। তিস্তা শুকিয়ে যাচ্ছে। জাগো বাহে তিস্তার জনগণ জাগো, এই শ্লোগান তারেক জিয়াকে দিতে হয়।প্রধান উপদেষ্টার প্রতি প্রশ্ন রেখে ফারুক বলেন, আইজিপি, কমিশনার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, ডিজিএফআই, এনএসআই, কেন মেহেদী হারুনরা গ্রেপ্তারের আওতায় আসলো না। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে সৎ ব্যক্তি দাবি করে সাবেক এই বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ বলেন, আমি চিৎকার দিয়ে বলব জাহাঙ্গীর একজন সৎ ব্যক্তি। আপনি কেন এই সততার প্রমাণ দিতে পারছেন না। কারা আপনাকে আটকাচ্ছে। এদেরকে গ্রেফতার করার জন্য তাদের নাম আমাদের কাছে প্রকাশ করুন। আমরা আন্দোলনের ভয় পাই না। আমরা আনায় ঘরকে ভয় পাই নাই। উপদেষ্টা মহোদয় আপনার কোন ভয় নাই। এদেরকে যদি গ্রেপ্তার করতে পারেন, এদের রহস্য যদি উদ্ধার করতে পারেন, এদেরকে গ্রেপ্তার করে এদের মুখ থেকে তথ্যগুলো বাহির করুন। কার নির্দেশে, কার অনুরোধে, আমাদের শীর্ষে নেতাদের গ্রেপ্তার করে মাস কি মাস কারাগারে রেখেছেন। আমরা এই দাবি তুলতেই পারি।
"আমি এমন দাবি আপনার কাছে করি না- আমাকে লাইসেন্স দেন, আমি তো এমন দাবি আপনার কাছে চাই না- বিএনপির তারেক রহমানকে বিনা ভোটে প্রধানমন্ত্রী বানিয়ে দেন। আমি এমন দাবি আপনার কাছে করতে চাই না- আমাকে চিনি সিন্ডিকেট, ছোলা, বুট সিন্ডিকেটের প্রধান করে দেন। আমি আপনাকে পরিষ্কার করে বলে দিতে চাই, যারা গরীব দুঃখী মানুষের ২৮ হাজার কোটি টাকা বিদেশে লুট করে নিয়ে গেছে, সেই পরিবারের কয়জনকে গ্রেফতারের আওতায় আনতে পেরেছেন? একজনও না।"
তিনি বলেন, যারা বিদেশে ডলার পাউন্ড নিয়ে পালিয়েছে তারা কিন্তু কারো বাসায় থাকে না। তারা বিদেশে ভিক্ষা করে না। তারা বিদেশের ফাইভ স্টার হোটেলে থাকে। আর হাসিনা ঠিকমত ২৮ টি সোকেস নিয়ে ভারতে মোদির কাছে আশ্রয় নিয়েছে। তাই তাদের কাছে অভাব নাই। অভাব, ডক্টর ইউনূসের শাসন আমলের ১৮ কোটি মানুষের অভাব। কোন বিনিয়োগ নাই। গার্মেন্ট সেক্টর অস্থিতিশীল করে তুলেছে।
'আমার ছোট্ট একটা কারখানা ছিল, ১৬ বছর বন্ধ করে দিয়েছে। চালু করতে চাইলে আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মা, কিছু সংখ্যক লোক আবারও ষড়যন্ত্র শুরু করে শ্রমিক অশান্তি সৃষ্টি করে বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা করছে। এই সরকারকে অস্থিতিশীল করবে তুলবেই, কারণ তাদের টাকার অভাব নাই, তাদের কাছে অস্ত্রের অভাব নাই, তাদেরকে ঢাকা শহরে লুকিয়ে রাখার মত লোকেরও অভাব নাই।'
জাতীয় নাগরিক পার্টির আহবায়ক নাহিদ ইসলামকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, নতুন দল নিয়ে মাঠে যান, গ্রামে গঞ্জে যান, পৌরসভায় যান, উপজেলায় যান, জেলা সদরে যান, বিভাগে যান। নিজের জনপ্রিয়তা যাচাই করুন। ভাইয়ে ভাইয়ে আর রক্তক্ষরণ করতে চাই না। গণতন্ত্রের জন্য একই মাঠে থাকি। স্বাধীনতা রক্ষার জন্য একই মাঠে থাকি। মত ভিন্ন হতে পারে কিন্তু লক্ষ্য এক। আমাদের মধ্যে আর মতবিরোধ নয়, আমরা যেন সংসদ নির্বাচনে আর মতনৈক্য না করি। সকল সমস্যার সমাধান ওই জাতীয় স্পিকারের সভাপতিত্বে হবে। এমন স্পিকার হবে যেটা আব্দুল হামিদ নয়। এমন স্পিকার হবে যেটা হুমায়ুন রশিদের মত নয়। এমন স্পিকার হবে না যেটা পাবনার টুকুর মতন।
কর্মসূচির সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মুহাম্মদ মফিজুর রহমান লিটন। সঞ্চালনা করেন কৃষকদলের নেতা আব্দুল্লাহ আল নাইম। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষকদলের কেন্দ্রীয় নেতা খলিলুর রহমান ইব্রাহিম, এম জাহাঙ্গীর আলম, মৎসজীবি দলের নেতা ইসমাইল হোসেন সিরাজী প্রমুখ।