
দুর্নীতি, দুঃশাসন, টেন্ডার ও চাঁদাবাজমুক্ত সুখী-সমৃদ্ধ নতুন বাংলাদেশ গড়া কেবল জামায়াতে ইসলামীর পক্ষেই সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন। তিনি গতকাল রাত ৯টায় রাজধানীর একটি মিলনায়তনে রামপুরা উত্তর থানা জামায়াত আয়োজিত পবিত্র মাহে রমজানের তাৎপর্য ও যাকাত শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। থানা আমীর ফজলে আহমদ ফজলুর সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি হাফিজুর রহমানের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান,উপস্থিত ছিলেন থানা নায়েবে আমীর ভিপি শাহাবুদ্দিন, আবুল হাসনাত পাটোয়ারী, তসলিম আলম প্রমূখ। মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, সুদ ভিত্তিক অর্থনীতির কারণেই আমাদের জাতীয় অর্থনীতি আজ বিপর্যস্ত। এতে পুঁজিপতির পুঁজি বাড়ছে; দরিদ্ররা হয়ে পড়ছেন আরো হতদরিদ্র। দুর্নীতিও বাড়ছে অপ্রতিরোধ্য গতিতে। তাই দেশের অর্থনৈতিক সেক্টরে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে দেশকে দুর্নীতি ও বেকারত্বমুক্ত করতে যাকাত ও কর্জে হাসানাভিত্তিক ইসলামী অর্থনীতি চালুর কোন বিকল্প নেই। আর তা করতে পারলেই দারিদ্র, দুর্নীতি, অনিয়ম ও লুটপাটকে বঙ্গপোসাগরে পাঠিয়ে দেওয়া সম্ভব হবে। জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতায় গেলে বেকার, দুর্নীতিবাজ ও চাঁদাবাজদের রাষ্ট্রের যাকাত তহবিল থেকে কর্জে হাসানা; প্রয়োজনে আর্থিক অনুদান প্রদান করা হবে। যাতে তারা অনৈতিক কাজ থেকে বিরত থাকতে পারেন। আর এভাবে পাঁচ বছর কাজ করা হলে দেশে যাকাত নেওয়ার মত কোন লোক থাকবে না। দেশ পুরোপুরি দারিদ্রমুক্ত হবে। তিনি সে স্বপ্নের সমাজ প্রতিষ্ঠায় সকলকে জামায়াতে পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
তিনি বলেন, ইসলাম আল্লাহর মনোনীত একমাত্র ও অদ্বিতীয় জীবন বিধান। মূলত, মানবজীবনের সকল সমস্যার ন্যায়সঙ্গত সমাধান ইসলামে রয়েছে। আর যুগে যুগে এ দ্বীনে হক্বকে বাতিলের ওপর প্রতিষ্ঠিত করার জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামীন দুনিয়াতে নবী -রাসূলগণকে প্রেরণ করেছেন। কিন্তু তাদের ওপর নেমে এসেছিলো অবর্ণনীয় জুুলুম-নির্যাতন। কিন্তু তারা কোন ভাবেই লক্ষ্যচ্যুত হননি। আর আল্লাহর তা’য়ালার খলিফা হিসাবে সে দায়িত্ব এখন আমাদের ওপর বর্তেছে। মূলত, আল্লাহর পথে নিজের জান ও মাল দিয়ে সর্বাত্মক সংগ্রাম চালানো সবচেয়ে বেশি মর্যাদার। তাই এপথে হতোদ্যম হওয়া যাবে না বরং সকল প্রকার ভয়ভীতির উর্ধ্বে থেকে সকলকে দ্বীনি দায়িত্ব পালনে ঐক্যবদ্ধ থাকবে হবে।
মহানগরী আমীর বলেন, জামায়াত দেশকে একটি মডেল ইসলামী রাষ্ট্রে পরিণত করতে বদ্ধপরিকর। জনগণ আমাদেরকে ভোট দিয়ে ক্ষমতায় পাঠালে আমরা ইসলামী আদর্শেরভিত্তিতে দেশের শিক্ষা, অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও সামাজিক সহ রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রেই বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধন করবো। মূলত, মানবরচিত জীবনবিধান মানুষের জন্য কোনভাবেই কল্যাণকর নয়। আর মানবরচিত মতবাদই ভোগবাদ, পুঁজিবাদ, সেকুলারিজম ও ধর্মহীনতার জন্ম দিয়েছে। কিন্তু এসব মানুষের জন্য মোটেই কল্যাণকর হয়নি বরং জুলুমের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে। তাই আগস্ট বিপ্লব পরবর্তী সময়ে দেশকে ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে নতুন করে ঢেলে সাজানোর সময় এসেছে। তিনি রাষ্ট্রের কাক্সিক্ষত ও প্রয়োজনীয় সংস্কার সাধনে সকলকে সচেতন ও সোচ্চার থাকার আহবান জানান।