ঢাকা, সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫,
সময়: ০৯:৫৬:৪৮ AM

শিক্ষার্থীদের দলের ৩টি নাম বেশি আলোচনায়

স্টাফ রিপোটার।। ঢাকাপ্রেস২৪.কম
14-02-2025 12:14:40 PM
শিক্ষার্থীদের দলের ৩টি নাম বেশি আলোচনায়

জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক দলের ঘোষণা আসতে পারে আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি। তবে দলটির নাম ও প্রতীক কী হবে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। একটি সূত্রে জানা গেছে, নামের জন্য সম্ভাব্য আটটি বিকল্প রয়েছে ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের কাছে। আর সমর্থনের বিচারে এগিয়ে আছে তিনটি প্রতীক। তবে আরেকটি সূত্র বলছে, বিএনপির মতো ইংরেজি নাম খুঁজছেন তারা।সূত্র জানায়, সম্ভাব্য আটটি নামের মধ্য থেকে জুলাই আন্দোলনের নেতাদের মতামতের ভিত্তিতে একটি নাম চূড়ান্ত হবে। এগুলো হলো—বিপ্লবী জনতা সংগ্রাম পার্টি, জাতীয় বিপ্লবী শক্তি, বৈষম্যবিরোধী নাগরিক আন্দোলন, বাংলাদেশ নাগরিক দল, জাতীয় নাগরিক কমিটি, ছাত্র-জনতা পার্টি, জাতীয় জনশক্তি পার্টি ও জাতীয় নাগরিক শক্তি। এই নামগুলোর মধ্যে আবার জাতীয় বিপ্লবী শক্তি, বিপ্লবী জনতা সংগ্রাম পার্টি ও বৈষম্যবিরোধী নাগরিক আন্দোলনের পক্ষেই বেশি সমর্থন মিলছে বলে জানিয়েছে ওই সূত্র। তবে আরেকটি সূত্রের দাবি, এই আট নাম আর বিবেচনায় নেই। বাংলা-ইংরেজির মিশেলে একটি নাম পাবে শিক্ষার্থীদের দল। কারণ, তাদের আন্দোলনের প্রতিটি কর্মসূচির নামই ছিল ইংরেজিতে। এ কারণে দলের নামও ইংরেজিতে করার কথা ভাবা হচ্ছে।

এদিকে নতুন দলের নির্বাচনী প্রতীক কী হবে, তা নিয়েও চলছে জোর আলোচনা। এখন পর্যন্ত সম্ভাব্য চারটি প্রতীক নিয়েই বেশি কথা হয়েছে। এগুলো হলো—মুষ্টিবদ্ধ হাত, হাতি, রয়েল বেঙ্গল টাইগার ও ইলিশ। এর মধ্যে ইলিশ বাদে বাকি তিনটি প্রতীকই বেশি সমর্থন পাচ্ছে বলে জানা গেছে।

সূত্র জানিয়েছে, শিক্ষার্থীদের দলের মূল নেতৃত্বে থাকবে দেশের তরুণ সমাজ। যাদের বয়স ২১ থেকে সর্বোচ্চ ৪৫ বছর। তবে দলে অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রবীণদের দায়িত্ব না দেওয়া ঘিরে সমালোচনা রয়েছে। সমালোচকদের যুক্তি, যে কোনো সংগঠন কিংবা রাজনৈতিক দলে অভিজ্ঞতা গুরুত্বপূর্ণ ‘ফ্যাক্টর’ হিসেবে কাজ করে।

শিক্ষার্থীদের সমর্থন দিচ্ছেন যারা: বিশিষ্ট রাষ্ট্রচিন্তক ও বুদ্ধিজীবী ফরহাদ মজহার, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, একটি জাতীয় পত্রিকার সম্পাদক, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি প্রমুখ শিক্ষার্থীদের দল গঠনে সমর্থন দিচ্ছেন বলে জানা গেছে। তবে শিক্ষার্থীরা তা স্বীকার করছেন না।

জেলা-উপজেলায় ৪০০ কমিটি: নতুন রাজনৈতিক দল আত্মপ্রকাশের উদ্দেশ্যে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা এরই মধ্যে দেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে চার শতাধিক কমিটি গঠন করেছেন। এসব কমিটিতে প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থীকে পদ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মেডিকেল কলেজ, সাংস্কৃতিক অঙ্গনসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কমিটি গঠন অব্যাহত রয়েছে।

পুলিশ, সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাদের দলে টানার চেষ্টা: সূত্র জানিয়েছে, এরই মধ্যে বেশ কয়েকজন সাবেক সেনা কর্মকর্তা নতুন দলে যোগ দিতে ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। এ ছাড়া তালিকায় আছেন প্রবীণ সাংবাদিক ও বেশ কয়েকজন শীর্ষ ব্যবসায়ীও। এর বাইরে ছাত্র নেতারা ব্যক্তিগতভাবেও সাবেক সেনা কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, এনজিও ব্যক্তিত্বদের টার্গেট করে দলে ভেড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। নির্বাচনে প্রার্থী দেওয়া হবে যাদের: সূত্র জানায়, আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী সমন্বয়ক, অবসরপ্রাপ্ত সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, সুশীল সমাজের গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি, এনজিও এবং বিভিন্ন সামাজিক আন্দোলনে জড়িত ব্যক্তিদের আগামী নির্বাচনে দলের প্রার্থী করবে ছাত্ররা। এ ছাড়া স্বচ্ছ ভাবমূর্তি সম্পন্ন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও পরিচিত মুখ, অনিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সভাপতি/সেক্রেটারি যারা নিজ নিজ এলাকায় প্রভাব বিবেচনায় ভোটের মাঠে জয়ী হতে পারেন এবং অনিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের বাইরে ধর্মীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গকেও নির্বাচনে মনোনয়ন দেবে ছাত্রদের গঠিত দল।

যে কারণে দল করছেন শিক্ষার্থীরা: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা জানান, দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে অন্তর্র্বতীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর অতীতের অনিয়ম, দুর্নীতি, লুটপাট, আইনের অপপ্রয়োগ, বিচারহীনতা, নির্বাচন ব্যবস্থার ক্ষতিসাধন, সংবিধান সংশোধনের নামে কাটাছেঁড়া ইত্যাদির মতো গণবিরোধী কর্মকাণ্ড ভবিষ্যতে যেন ঘটতে না পারে, সে বিষয়কে অগ্রাধিকার দিয়ে সরকার দেশের উল্লেখযোগ্য সেক্টরগুলোতে সংস্কারে হাত দিয়েছে। এজন্য শিক্ষার্থীরাও বিগত সময়ের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নতুনভাবে দেশ গঠনের লক্ষ্যে রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছে।