কোন বন্ধু রাষ্ট্র বাংলাদেশের জনগণের হত্যাকারী শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ফেলানী হত্যা দিবস উপলক্ষে ‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন’ আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।শামসুজ্জামান দুদু বলেন, বাংলাদেশে যেন ভালো নির্বাচন না হয়, রাজনৈতিক সরকার যেন ক্ষমতায় না আসে সেই চেষ্টায় করছে ভারত। ওই ফাঁদে আপনারা (অন্তর্র্বতী সরকার) পা দেবেন না। শেখ হাসিনা ওই ফাঁদে পা দিয়েছিল বলে সে নির্বাচনের বাইরে চলে গিয়েছিল। ড. মুহাম্মদ ইউনূস নির্বাচনের কথা যেটা বলেছেন এই বছরের শেষে এবং আগামী বছরের শুরুতে সেটা আমরা সমর্থন জানাই।তিনি বলেন, বাজারে আগুন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি ব্যবসা-বাণিজ্যের অচলাবস্থা, জনগণের মধ্যে অস্থির অবস্থা এগুলো কাটিয়ে উঠতে নির্বাচনের দিকে হাঁটতে হবে। যদি এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন করতে পারি, তাহলে আমার প্রত্যাশা আমরা এসব সংকট থেকে মুক্ত হব। তাই এখন সরকারের উচিত অনতিবিলম্বে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা।কৃষকদলের সাবেক এই আহ্বায়ক বলেন, বাংলাদেশ ভারতকে বন্ধু রাষ্ট্র মনে করে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে এমন কোন পদক্ষেপে নেইনি, যেটা বন্ধু রাষ্ট্রের প্রতি কোন রেশ নিয়েছে। কিন্তু ভারত বাংলাদেশকে বন্ধু রাষ্ট্র মনে করেনি। ৫৩ বছরের ঘটনাবলি সামনে আনলে মনে হবে, ভারত এযাবৎকালে যখনই যে পদক্ষেপ নিয়েছে সেটা কোনো বন্ধু রাষ্ট্র নিতে পারে না। অথচ ভারত দাবি করে তারা আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র।
১৯৭১ সালে পাকিস্তানিরা যে অস্ত্রগুলো ফেলে গিয়েছিল সেগুলো ভারতের সেনাবাহিনী লুটপাট করে নিয়ে গেছে। দেশের সম্পদ নানান ভাবে লুটপাট করে নিয়েছে বলে জানান তিনি।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম নেতা স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশকে উন্নত করার লক্ষ্যে ভুটান, নেপাল, আফগানিস্তান বন্ধুত্ব সম্পর্ক স্থাপন করেন এবং সার্ক গঠন করেন। কিন্তু ভারতের অসহযোগিতার কারণে সার্ক বিলুপ্তির পথে।
ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, গত পাচ মাস আগে ছাত্র-জনতা গণঅভ্যুত্থানে যে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে। সেই হত্যাকারী স্বৈরাশাসক শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়েছে আরেকটি হত্যাকারীদের দেশ যে ফেলানীকে হত্যা করেছে সীমান্তে বাংলাদেশীদের কে হত্যা করছে। আমাদেরকে বন্ধুত্ব দাবি করা রাষ্ট্র ভারত আমার দেশের সাধারণ জনগণের হত্যাকারীকে আশ্রয় দিয়েছে।
তিনি বলেন, বাঙালি বীরের জাতি যদি একবার ভারতের এই অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়ায় ভারত রেহাই পাবে এটা আমি মনে করি না। এই জাতি প্রশিক্ষিত পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে পরাজিত করেছে। সাতদিন দশদিন যুদ্ধ করে ভারত আমাদেরকে স্বাধীন করে দিয়েছে এটা তারা বলে। তাদের ১০-১৫ হাজার সৈন্য মারা গেছে তারা দাবি করে আমি তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।
‘কিন্তু তার অর্থ এই নয় এই ১৪-১৫ হাজার মানুষ আমাদেরকে স্বাধীনতা দিয়ে গেছে। এই দেশে ৩০ লক্ষ শহীদের বিনিময়ে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে। আর এই ৩০ লক্ষ শহীদ এদেশের নাগরিক। ভারতের দাবী অসার দাবি, ভারত যে দাবি করে সেটা কোন বন্ধুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রের দাবি নয়। ফেলানী একটা কিশোরী তাকে গুলি করে হত্যা করে পাঁচ দিন কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রেখেছিল। শেখ হাসিনা যেমন ক্ষমতায় থাকার জন্য তামাশা করেছে ভারত ও ফেলানী হত্যা বিচারে তামাশা করেছে। একজন খুনিকে তারা মুক্ত করে দিয়েছে।’
দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন সভাপত্বিতে নাগরিক সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমান, কৃষক দল নেতা এসকে সাদী, আব্দুর রাজী প্রমুখ।