আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় নির্বাচনী প্রতীক ‘নৌকা’ মার্কায় ভোট চেয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ দেশের স্বাধীনতা এনেছে, দেশের অর্থনৈতিক মুক্তি, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং দেশবাসীর জন্য খাদ্য, বস্ত্র ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করেছে। তাই আগামী সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক ‘নৌকা’ প্রতীকে ভোট দিন।শনিবার (১ জুলাই) গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগ অফিসে ঈদুল আজহা উপলক্ষে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী, জনপ্রতিনিধি ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে সাধারণ মানুষের ভাগ্য বদলে যায় উল্লেখ করে শেখ হাসিনা গত সাড়ে ১৪ বছরে দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে তার সরকারের প্রচেষ্টা সংক্ষেপে তুলে ধরেন। একই সঙ্গে এসব উন্নয়ন যারা দেখতে পায় না, তাদের কঠোর সমালোচনা করে তিনি তাদের উদ্দেশে বলেন, তারা এ উন্নয়নের সুফল কিন্তু ঠিকই ভোগ করছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা আওয়ামী লীগকে কখনো ক্ষমতায় দেখতে চায় না এবং দেশের উনয়নও দেখতে পায় না, তাদের ব্যাপারে আমার কিছুই বলার নেই। যারা দেশের উনয়ন চায় না, তাদের চ্যালেঞ্জ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি অবশ্যই দেশের এ উন্নয়ন অব্যহত রাখবেন।শেখ হাসিনা বলেন, আমি নিজের বাবা-মা ও ভাই হারিয়েছি। আপনারাই (কোটালীপাড়ার মানুষ) আমার আপনজন। আপনারা সবসময় আমার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।তিনি বলেন, আমি নিজের আত্মীয়-স্বজন ও অন্যদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় না করেই কোটালীপাড়ার মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে গোপালগঞ্জে এসেছি।এর আগে প্রধানমন্ত্রী কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়ায় তার দুদিনের সফরের অংশ হিসেবে শনিবার সকালে গণভবন থেকে তিন ঘণ্টার সড়কপথে গাড়িতে পদ্মা সেতু পার হয়ে সকাল ১১টা ২৭ মিনিটে কোটালীপাড়ায় পৌঁছান। এসময় প্রধানমন্ত্রীর আইসিটিবিষয়ক উপদেষ্টা ও একমাত্র ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় তার সঙ্গে ছিলেন। তার সফরকে কেন্দ্র করে গোটা গোপালগঞ্জ উৎসবের আমেজে বর্ণিল পোস্টার, ব্যানার ও প্ল্যাকার্ডে সেজেছে এবং জেলাজুড়ে বিরাজ করছে আনন্দঘন পরিবেশ।প্রধানমন্ত্রী কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে পৌঁছানোর পর নিম, বকুল এবং আম- এ তিনটি গাছের চারা রোপণ করেন। ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়কালে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের অধিকাংশ নেতা এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা প্রধানমন্ত্রীর সামনে তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান এবং তার দীর্ঘায়ু কামনা করেন।
শেখ হাসিনা দেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হবেন বলেও স্থানীয়রা আশাবাদ ব্যক্ত করে শুভেচ্ছা জানান এবং আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক ‘নৌকা’কে বিজয়ী করতে কাজ করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। জবাবে প্রধানমন্ত্রী সবাইকে তার জন্য প্রার্থনা করার আহ্বান জানান, যেন তিনি জনগণের সেবা করতে পারেন।
পরে সরকারপ্রধান নবনির্মিত কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় উদ্বোধন করেন। এসময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ এবং সঞ্চালনা করেন কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখ।অনুষ্ঠান শেষে বিকেলে প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশে কোটালীপাড়া ত্যাগ করার কথা রয়েছে। টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছানোর পর প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন, ফাতেহা পাঠ ও মোনাজাতে অংশ নেবেন। রাতে প্রধানমন্ত্রীর টুঙ্গিপাড়ায় থাকার কথা।
রোববার সকালে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ঈদুল আজহা উপলক্ষে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও জনসাধারণের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। রোববার (২ জুলাই) বিকেলে তার টুঙ্গিপাড়া থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা রয়েছে।