ঢাকা, শনিবার ২৩ই নভেম্বর ২০২৪ , বাংলা - 

শাজাহান খানের কড়া সমালোচনা বিএনপির

স্টাফ রিপোর্টার।।ঢাকাপ্রেস২৪.কম

2021-02-17, 12.00 AM
শাজাহান খানের কড়া সমালোচনা বিএনপির

ঢাকা : ​আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানের কড়া সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষক। শাজাহান খান কী ছিলেন জানি না। ১৯৭২ সালের পর থেকে নিজেকে ‘মুক্তিযোদ্ধা’ বলে দাবি করেন তিনি। জিয়াউর রহমান ও শাজাহান কি এক জিনিস? এই শাহাজান এখন মিটিং করছেন, কীভাবে জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিল করা যায়।’

তিনি প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী হাসিনাকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, আপনাকে প্রস্তুত থাকতে হবে। শাজাহান খান শুধু খেতাব নয়, আপনার জীবনের জন্যও হুমকি হতে পারে। যদি একটা পটপরিবর্তন ঘটে, এদের ভূমিকা কী হবে জানি না। কারণ ১৯৭২ থেকে ৭৫ সময়কালে আওয়ামী লীগের লোকজনদের খুঁজে খুঁজে মেরেছে এই শাহজাহান। কারণ তিনি একজন গণবাহিনীর নেতা ছিলেন। মাদারীপুরে জাসদের নেতা ছিলেন।’

আজ বুধবার (১৭ ফেব্রয়ারি) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ‘বীর উত্তম’ খেতাব বাতিলের প্রতিবাদে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি আয়োজনে এ প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়।

জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) সদস্য শাজাহান খানের প্রতি ইঙ্গিত করে রিজভী বলেন, ‘যে লোকের কোনও ধরনের ভদ্রতা, সভ্যতা, দৃঢ়তা নেই সে খেতাব বাতিল করবে না তো কে করবে? ডাকাতের কি কোনও মনুষ্যত্ব থাকে? জিয়াউর রহমানের মত একজন মুক্তিযোদ্ধার নাম জনগণের ধমনীতে বয়, তাঁর মতো একজন বীরের খেতাব শাহজাহান খানের মত একজন ডাকাত কেড়ে নিতে চায়।’

‘শাজাহান খান সভ্যতার ধার ধারে না’ এমন মন্তব্যের ব্যাখাও দিয়ে রিজভী বলেন, ‘আপনাদের মনে আছে, পরিবহনের বাস যখন মানুষ চাপা দিয়ে মারে তখন সেটাকে তিনি ‘বৈধ’ মনে করেন। পরিবহনের বাস শিশুদের থেঁতলে দিয়ে যায়, আর তিনি হাসতে হাসতে বলেন ‘এগুলো কিছুই না’। ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম একজন নন্দিত আইনজীবী, এক টকশোতে উনাকে শাজাহান খান বলেন, ‘আপনার চোখ তুলে নেবো’। যে লোকের মুখ থেকে ‘চোখ তুলে নেবো, মারব, রক্তাক্ত করবো’ এসব শব্দাবলি বের হয়, সে তো ‘ডাকাত, সন্ত্রাসী, মাফিয়া’।’

ভারতের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘ভারতের বিজেপি প্রধান ও স্বরাষ্টমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি সরকার গঠন করতে পারলে বাংলাদেশ থেকে একটা পাখিকেও ঢুকতে দেবে না। আমি বলি, বাংলাদেশের পাখিরা যাবে কেন? আপনাদের দেশের গবেষকরা বলছেন, শতকরা ৫০ ভাগের ঊর্ধ্বে ভারতে কোনও স্যানিটেশন নাই। রেললাইনের ধারে, রাস্তার ধারে মানুষ বাথরুম করে। আমাদের পাখিরা তো পরিষ্কার-পরিছন্ন। তারা কেন ইন্ডিয়াতে যাবে।’

এসময় বিএনপির এই শীর্ষনেতা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের নাম সবার হৃদয়ে আছে। কয়েকজন সন্ত্রাসী মাফিয়া এই মহান নেতার খেতাব বাতিলের কথা বললেই তাঁর ঐতিহাসিক অবদান মুছে ফেলা যাবে না।’

রিজভী আরও বলেন, ‘গতকাল থেকে একটি খবর পড়ে আমার মনটা খুব খারাপ। আজকে গাড়ির ভেতরে আসার সময়ও খবরটি পড়লাম। আমার একটা ধারণা ছিল, আওয়ামী লীগ বেশ বড় ধরনের চোর। তারা বাংলাদেশ ব্যাংক চুরি করেছে, সোনালী ব্যাংকে চুরি করেছে, বেসিক ব্যাংক চুরি করেছে, বায়ান্নটি ক্যাসিনো করেছে। যাদের অর্থমন্ত্রী চার হাজার কোটি টাকা চুরিকে বলেন- ‘এটা কোনও টাকাই না’, এদের সম্পর্কে আমার ধারণা ছিল এরা বড় ধরনের চোর। কিন্তু গতকালকে ফেনীর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বলেছে সংবাদ সম্মেলন করে কাদের মির্জা ছিল গরু চোর। আওয়ামী লীগের নেতারা যে গরু চোর হতে পারে এটা আমার ধারণা ছিল না আগে। এটা কিন্তু বিএনপির লোকেরা বলেননি, তাদের দলের নেতারাই প্রেস কনফারেন্স করে বলেছেন যে, কাদের মির্জা ছিল গরু চোর। এই খবরটা গতকাল থেকে পড়ে আমার মনটা খারাপ। কারণ আমার ধারণা ছিল ওরা বড় ধরনের চোর, কিন্তু সেই ধারণা মিথ্যা প্রমাণ হয়েছে। এত নিম্নমানের চুরির সাথে আওয়ামী লীগের নেতারা জড়িত থাকতে পারে, এই ধারণা আমার কখনোই ছিলো না।’

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ ও শহিদুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।