ঢাকা, শনিবার ২৩ই নভেম্বর ২০২৪ , বাংলা - 

স্বপ্নের অস্ত্র কেন মুখ থুবড়ে পড়ল?

ডেস্ক নিউজ।। ঢাকাপ্রেস২৪.কম

2022-12-15, 12.00 AM
স্বপ্নের অস্ত্র কেন মুখ থুবড়ে পড়ল?

লোককথা এবং কিংবদন্তিতে মোড়া আমেরিকার এক জন বিখ্যাত সেনানায়ক ছিলেন ডেভি ক্রোকেট। লোককথা অনুযায়ী, তিনি আমেরিকার ইতিহাসে অন্যতম নায়ক এবং বীর যোদ্ধা। প্রচলিত আছে, ক্রোকেটের লক্ষ্য ছিল অব্যর্থ। তিনি নাকি কুঠার দিয়ে বন্দুকের গুলিকেও সহজে আটকে দিতেন। আমেরিকার সেনার কাছে তাঁর নামে তৈরি এমন এক অস্ত্র ছিল যার আঘাতে মুহুর্তে ধূলিস্মাৎ হতে পারত একটি গোটা শহর।ঠান্ডা যুদ্ধের সময় তৈরি সেই রকেট লঞ্চারের নাম ছিল ‘এম২৮/২৯ ডেভি ক্রোকেট ওয়েপন সিস্টেম’।‘এম২৮/২৯ ডেভি ক্রোকেট ওয়েপন সিস্টেম’ ছিল একটি মানববাহী রকেট লঞ্চার। এই লঞ্চার ৩৪ কেজির পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র ডব্লু৫৪ প্রায় ৪ কিমি পর্যন্ত ছোড়ার ক্ষমতা রাখত।তিন জন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ অনায়াসে এই গোটা রকেট লঞ্চার এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় বয়ে নিয়ে যেতে পারতেন।মনে করা হয় ঠান্ডা যুদ্ধের আবহে নেটো এবং সোভিয়েট ইউনিয়নের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির ফলে বিপুল সংখ্যক পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করা হয়েছিল। এই পারমাণবিক অস্ত্রগুলি নাকি পৃথিবীর মতো ২০টি গ্রহকে ধ্বংস করার জন্য যথেষ্ট ছিল।১৯৬৭ সাল নাগাদ আমেরিকাতে নাকি ৩১,২৫৫টি পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র মজুদ ছিল। এর মধ্যে কয়েক হাজার শুধু কৌশলগত পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র ছিল, যা সাধারণ যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য রাখা ছিল।এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলির মধ্যে ছিল যেমন ১৫৫ মিলিমিটারের ডব্লু৪৮ পারমাণবিক আর্টিলারি মিসাইল।১৯৫০-এর দশকে হেসে-থুরিংয়ান সীমান্ত এবং ফ্রাঙ্কফুর্ট অ্যাম মেনের মধ্যে ফুলদা গ্যাপ নামে একটি জায়গায় ডেভি ক্রোকেট মিসাইলের ব্যবহারের পরিকল্পনা করা হয়েছিল।মনে করা হয়েছিল তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে এই ফুলদা গ্যাপেই তার প্রথম ছাপ পড়বে। কূটনীতিকদের একাংশ এ-ও মনে করেছিলেন যে এই পথেই পশ্চিম জার্মানিতে হামলা চালাবে সোভিয়েট।

তবে ফুলদা গ্যাপে সোভিয়েটকে কোণঠাসা করে রাখতে আমেরিকার হাতে তৈরি ছিল ‘এম২৮/২৯ ডেভি ক্রোকেট ওয়েপন সিস্টেম’। পাশাপাশি রাখা ছিল কিছু পারমাণবিক ল্যান্ডমাইনও।ডেভি ক্রোকেট মিসাইল দ্বারা ব্যবহৃত ডব্লু৫৪ ক্ষেপণাস্ত্রের ক্ষমতা বাকি পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্রের তুলনায় অনেক ছোট ছিল। এর বিস্ফোরণ ক্ষমতা ছিল ০.০১-০.০২ কিলোটন, যা ১০ থেকে ২০ টন টিএনটি বিস্ফোরকের সমতুল্য। হিরোশিমায় যে বোমাটি ফেলা হয়েছিল তার বিস্ফোরণ ক্ষমতা ছিল ১৫ কিলোটন যা ১৫ হাজার টন টিএনটির সমতুল্য।