ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২ই মে ২০২৪ , বাংলা - 

ওয়াসার মিটার রিডারের সম্পদের পাহাড়

স্টাফ রিপোর্টার ।।ঢাকাপ্রেস২৪.কম

2023-10-19, 12.00 AM
ওয়াসার মিটার রিডারের সম্পদের পাহাড়

ওয়াসার ভিআইপি সাবেক মিটার রিডার বর্তমানে রাজস্ব পরিদর্শক হারুন অর রশিদ রানা আন্ডার বিলিং, মিটার টেম্পারিং ও অবৈধ পানির লাইন সংযোগ প্রদানে সহযোগিতার মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে হাতিয়ে নেওয়া বিপুল পরিমান অর্থ দ্বারা গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়। ঢাকার মোহাম্মদপুরে চার চারটে বহুতল বাড়ি, একাধিক প্লট ও ফ্লাট এবং প্রাইভেট কার আছে তার। এছাড়া নিজ গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার পাগলা থানাধীন মাখল গ্রামে রাজকীয় প্রাসাদ গড়ে তুলেছেন তিনি।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মোহাম্মদপুরের টিক্কাপাড়ার ৭/এ/১৫ নং, ঢাকা উদ্যানের ৩ নং রোডের ৩৯ নং (চারতলা), নুরজাহান রোডের রম/৮ নং (দ্বিতল), চান মিঁয়া হাউজিংয়ের ২ নং রোডে একটি, মোট চারটি বাড়ির মালিক তিনি। এছাড়া গাজিপুর'র শ্রীপুরে, মাওনায়, ময়মনসিংহের ভালুকা, পাইথল ও গফরগাঁওয়ে রয়েছে তার অঢেল সম্পদ। 

যেখানে দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ দিশেহারা, তখন মৃত রোছমত আলীর সন্তান অল্প বেতনের এই কর্মচারির বিত্ত বৈভব দেখে তার সহকর্মী এবং পাড়া-প্রতিবেশীরা তো অবাক হয়েছেনই বটে। একইসঙ্গে তারা বিস্মিত এই কারণে যে হাতভরা প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং ওয়াসা কর্তৃপক্ষ তাকে দায়মুক্তি দিয়েছে। কেননা অতি নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তান রানার হঠাৎ আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যাওয়া আলাদিনের চেরাগ পাওয়া ছাড়া সম্ভব ছিল না। কিন্তু কথায়ই আছে, চোরের দশদিন তো গেরস্তের একদিন। দুদক ও ওয়াসা ছাড় দিলেও, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর এবং ডিজিএফআই সদরদপ্তরেও। 

 নাম প্রকাশ না করার শর্তে তার এক সহকর্মী বলেন, রানা দম্ভ করে বলেন-তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন সহ প্রশাসনে অভিযোগ করে কোন লাভ হবেনা। তিনি অর্থ দিয়ে প্রশাসন ম্যানেজ করে নিবেন। রাজস্ব পরিদর্শক হারুন অর রশিদ রানা বর্তমানে ঢাকা ওয়াসার ২নম্বর রাজস্ব জোনে কর্মরত রয়েছেন। পূর্বে যে সকল জোনে ছিলেন সেখানেও দুর্নীতি করেছেন। ওয়াসার পিপিআই প্রকল্পের অন্যতম সুবিধাভোগী ছিলেন রানা। বিত্তশালী এই রাজস্ব পরিদর্শক নিজে কোন ডিউটি করেন না। ব্যক্তিগত নিয়োগকৃত সহকারী মো: জাকিরসহ একাধিক ডুপলি কে দিয়ে সাইট পরিচালনা করেন। অথচ বহিরাগত দিয়ে কাজ করানো সম্পূর্ণ বেআইনী। ৫ জুলাই ২০১৮ ইং তারিখে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ এক আদেশের মাধ্যমে বহিরাগত নিয়োগ নিষিদ্ধ করে। যার স্মারক নং রা/৮২০২ প্র:রা:ক:-৫/৭/২০১৮ইং। তার সহকারী ডুপলির বেতন ২৫ হাজার টাকা ও ড্রাইভারের বেতন ২৫ হাজার টাকা। অথচ তার নিজের বেতন ৩৫হাজার টাকা। রাজস্ব পরিদর্শক হারুন অর রশিদ রানা’র সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, প্রথমে তিনি বিব্রত হয়ে পড়েন। কিন্তু সহজেই নিজেকে সামলে নিয়ে তিনি প্রতিবেদককে বলেন, আপনার যা ইচ্ছা লিখেন। যা ইচ্ছা করেন।