ঢাকা, শনিবার ২৭ই এপ্রিল ২০২৪ , বাংলা - 

পূজার পরে ‘দূর্বার গণআন্দোলন:ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার ।।ঢাকাপ্রেস২৪.কম

2023-10-14, 12.00 AM
পূজার পরে ‘দূর্বার গণআন্দোলন:ফখরুল

খালেদা জিয়ার মুক্তি ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনকে এক করেই দূর্গা পূজার পরে ‘দূর্বার গণআন্দোলন’ হবে বলে ঘোষণা দিলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।শনিবার দুপুরে তিন ঘন্টার অনশন কর্মসূচি সমাপ্তির আগে বিএনপি মহাসচিব এই ঘোষণা দেন।তিনি বলেন, ‘‘ আজকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আর গণতন্ত্রের মুক্তি ৃ দুইটা সমার্থক, অবিচ্ছেদ্য, একই। তাই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য যে আন্দোলন করছি, একই সঙ্গে গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য যে আন্দোলন করছি এই দুইটিকে এক করে আমাদেরকে দূর্বার গণ-আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে এই সামনের দিনগুলোতে।”‘‘ সবাই বলছেন, সামনে পূজা আছে। এই পূজার মধ্যে আমরা সবসময় বলছি যে, আমরা সর্বোতভাবে একটা শান্তিপূর্ণ অসাম্প্রদায়িক ব্যবস্থায় বিশ্বাস করি। কারণ আমরা চাই না যে. কোনো আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে তারা এই সমস্যার সৃষ্টি করবে।”গতকাল কুমিল্লায় হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের মিছিলে ক্ষমতাসীন দলের হামলার ঘটনা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ গতকাল কুমিল্লাতে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ মিছিলে পুলিশ বাধা দিয়েছে পরে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা হামলা করেছে।”

 

তিনি বলেন, ‘‘ আজকে এখানে সকল বক্তারা পরিস্কারভাবে জানিয়েছেন, এখানে শুধু বিএনপি নয়, সকল রাজনৈতিক দলের নেতারা এখানে ছিলেন, সবাই বক্তব্য দিয়েছেন, সংহতি প্রকাশ করেছেন। তারা শপথ নিয়েছেন যে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত না করে এই ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় না করে কেউ বিশ্রাম করবেন না।”

‘‘ এই সরকারকে জনগনের নির্বাচিত সরকার নয়, জনগনের সরকার বলা যায় না। এরা শাসক। তাদের কথার মধ্যে তা প্রকাশ পায়। বিএনপি একটা বড় রাজনৈতিক দল যে দল তিনবার ক্ষমতায় ছিলো। তারা ঘোষণা দেয় বিএনপি আমাদের শত্রু। অর্থাত তারা গণতন্ত্রের বিশ্বাস করে না, গণতন্ত্রের বিশ্বাস করলে কোনো রাজনৈতিক দলকে শত্রু বলতে পারে না।”

 

‘তলে তলে কিছুই হয়নি, ওরা মিথ্যাচার করছে’

 

মির্জা ফখরুল বলেন,‘‘ তারা(সরকার) গণতন্ত্রের বিশ্বাস করে না এটা বার বার প্রমাণিত হয়েছে। গতকাল তারা ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটের ছাত্রদের কনভেনশন থেকে নরসিংদীর ছাত্র দল নেতাকে কমান্ডো কায়দতায় সম্পূর্ণ আইন-কানুন ভঙ্গ করে গ্রেফতার করেছে।”

 

‘‘ আবারও তারা বলে, তলের তলে নাকি সব সাবার হয়ে গেছে। বার বার এই কথাটা কেনো বলে? এজন্য বলে যে, আসলে কিছুই হয় নাই। গোটা বিশ্বের গণতান্ত্রিক বিশ্ব আজকে তাদেরকে ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার জন্য পরিস্কার করে বলছে এবং একটা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন করতে বলেছে।”

 

‘এখন লক্ষ্য একটাই’

 

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘‘ আজকে আমরা অনেক চরাই উতরাই পার হয়ে এসেছি। এখন আমাদের সামনে লক্ষ্য মাত্র একটাইৃ আজকে আমাদের দেশকে বাঁচাতে হলে, অর্থনীতিকে বাঁচাতে হলে, একই সঙ্গে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ আমাদের সকল রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের বাঁচাতে হলে আমাদের এদেরকে পরাজিত করা ছাড়া কোনো রকমের বিকল্প নাই।”

 

‘‘ আসুন এই লক্ষ্যে আমরা ঐক্যবদ্ধ হই এবং দেশের মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ। সকলের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমরা তাদেরকে পরাজিত করে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিতসা করে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করব।”

 

নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিনের উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তাকে উন্নত চিকিতসার জন্য দ্রুত বিদেশে পাঠানোর দাবিতে বেলা ১১টা থেকে তিন ঘন্টার এই ‘অনশন’ কর্মসূচি হয়। সড়ক ও ফুটপাতে মাদুর বসে কয়েক হাজার নেতা-কর্মী এই অনশনে অংশ নেন।

 

দুপুর ২টায় বিএনপি মহাসচিবকে জুস পান করিয়ে অনশন ভঙ্গ করান এলডিপির চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত অলি আহমেদ এবং স্থায়ী কমিটির সদস্যদের জুস খাওয়ান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচায্র্ অধ্যাপক আনোয়ারউল্লাহ চৌধুরী ও অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ।

 

রাজধানী ছাড়াও সারাদেশের মহানগর ও জেলাগুলোতে তিন ঘন্টার এই কর্মসূচি হয়।

 

বিএনপির পাশপাশি রাজধানীতে ১২ দলীয় জোট ফকিরেরপুল পানির ট্যাংকের কাছে এবং জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট বিজয় নগরে আলরাজী কমপ্লেক্সের কাছে ও গণফোরাম(মন্টু-পিপলস পার্টি) আরামবাগে দলীয় অফিসের সামনে তিন ঘন্টার অনশন করে জোট নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে।

 

ঢাকা মহানগর দক্ষিনের আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক ও দক্ষিনের ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব লিটন মাহমুদের সঞ্চালনায় গণঅনশনে দলের এলডিপির অলি আহমেদ, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, জাতীয় পার্টি(কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, জনসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, জেএসডির শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, গণঅধিকার পরিষদ(নূর) নুরুল হক নূর, গণঅধিকার পরিষদ (রেজা কিবরিয়া) ফারুক হাসান, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাগপার খন্দকার লুতফুর রহমান, এনডিএমের ববি হাজ্জাজ,  জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এনডিপির আবু তাহের, সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টির শামসুল আলম, জমিয়তে উলামে ইসলামের মুফতি মহিউদ্দিন ইকরাম, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান প্রমূখ।

 

এই কর্মসূচিতে সাবেক বিচারপতি ইফতেদার আহেমেদ, সাবেক কেবিনেট সচিব এএসএম আবদুল হালিম, সাবেক সেনা কর্মকর্তা অবসরপ্রাপ্ত বিগ্রেডিয়ার জেনারেল জহিরুল আলম, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা নাজমুল করিম খান, নির্বাচন কমিশনের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এজেড এম জাহিদ হোসেন বক্তব্য রাখেন।

 

এছাড়া সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান কল্যাণ ফ্রন্টের বিজন কান্তি সরকার, পেশাজীবী নেতা অধ্যাপক একেএম আজিজুল হক, অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, কাদের গনি চৌধুরী, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, অ্যাডভোকেট মহসিন রশিদ, অধ্যাপক এবিএস ওবায়দুল ইসলাম, অধ্যাপক সিদ্দিকুর রহমান, অধ্যাপক শামসুল আলম, অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, অধ্যাপক হারুন অর রশিদ, অধ্যাপক এজেডএম পারভেজ, রিয়াজুল ইসলাম রিজু, রাশেদুল হাসান হারুন, ফখরুল আলম, রফিকুল ইসলাম, রাশেদুল হক প্রমূখ নেতৃবৃন্দ।

গণঅনশনে আবদুল্লাহ আল নোমান, বরকত উল্লাহ বুলু, ্আহমেদ আজম খান, জয়নুল আবদিন ফারুক, আতাউর রহমান ঢালী, শাহজাদা মিয়া, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, নূর মোহাম্মদ খান, রুহুল কবির রিজভী, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খানসহ কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।