ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। একই সাথে দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। ফলে দেশটি বর্তমানে কঠিন সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে কীভাবে এই সংকট মোকাবিলা করতে হবে- সে বিষয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লিখলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং। পরিস্থিতি মোকাবিলায় পাঁচটি পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
চিঠিতে বর্তমান কোভিড পরিস্থিতিকে ‘অভূতপূর্ব জরুরি অবস্থা’ বলে উল্লেখ করেছেন মনমোহন। ভ্যাকসিন কর্মসূচি নিয়ে মোদিকে পরামর্শ দিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, যদি আমরা এই সময়ের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক মানুষকে ভ্যাকসিন দিতে চাই, তা হলে আমাদের আগে থেকেই পর্যাপ্ত অর্ডার দেওয়া উচিত। তবেই প্রস্তুতকারী সংস্থা ঠিক সময়ে তা জোগান দিতে পারবে। আগামী ছয় মাসের জন্য সংস্থাগুলোকে কী পরিমাণ ভ্যাকসিনের অর্ডার দেওয়া হয়েছে, তার ভিত্তিতে ভ্যাকসিন কর্মসূচি ঘোষণা করা উচিত।
মনমোহন আরও লিখেছেন, জরুরি ভিত্তিতে ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার ১০ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রা ধার্য্য করতে পারে। তবে একইসঙ্গে রাজ্যগুলোর চাহিদার কথাও মাথায় রাখা উচিত। তারা কী পরিমাণ ভ্যাকসিন পেলে কর্মসূচিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে, সেটাও ভেবে দেখতে হবে। আগামী দিনে রাজ্যগুলো ঠিক কী পরিমাণ ভ্যাকসিন পাবে, সেটাও তাদের জানানো উচিত।
তিনি লিখেছেন, কত ভ্যাকসিন কীভাবে আমদানি হচ্ছে? কোথায় তৈরি হচ্ছে? সরকারি সেই নির্দেশিকা প্রকাশ্যে আনুক কেন্দ্র। কোন রাজ্যের কত ডোজের চাহিদা? কীভাবে সেই ভ্যাকসিন সরবরাহ হবে? সেটাও স্বচ্ছতা বজায়ে প্রকাশ্যে আনা হোক।
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মতে, ৪৫ বছরের কম বয়স হলেও সামনের সারির কর্মীদের মধ্যে আরও বেশি ভ্যাকসিন প্রয়োগ করতে হবে। গণপরিবহণ চালাচ্ছেন যারা, পঞ্চায়েত ও পৌরসভার কর্মী এবং আইনজীবীরাও এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। এদের ৪৫ বছরের নীচে হলেও টিকা দেওয়া উচিত।
পাশাপাশি আরও কিছু সংস্থাকে টিকা তৈরির অনুমতি দেওয়া যেতে পারে। এইচআইভি বা এইডস রোগের সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য ওষুধের ক্ষেত্রে এমনটা আগেও করা হয়েছিল বলে উল্লেখ করেন তিনি। জরুরি অবস্থার কথা বিবেচনা করে এই শিথিলতা এখন প্রয়োজন।