স্বাধীনতার ৫০তম বার্ষিকীতে পদার্পণ করছে ৩০ লাখ মানুষের আত্মত্যাগে অর্জিত বাংলাদেশ। সৃষ্টির শুরুতে যে দেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ হিসেবে আক্ষায়িত করা হয়েছিল সে দেশ আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে উন্নত দেশগুলোর কাতারে জায়গা করে নেওয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে। এই শুভক্ষণে অসাধারণ সব অর্জনের জন্য বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়েছে বিএটি বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের ৫০ বছর উদযাপনের পাশাপাশি বিএটি বাংলাদেশও এবছর প্রতিষ্ঠানটির ১১০ বছর পূর্তি উদযাপন করবে। একইসঙ্গে বাংলাদেশের পথচলা থেকে অনুপ্রেরণা গ্রহণের মাধ্যমে পরিবেশ, সামাজিক ও সুশাসনের (ইএসজি) উদ্যোগগুলো সামনে রেখে ৫০ লাখের বেশি মানুষের জীবন-জীবিকা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সমৃদ্ধ করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অর্জনের জন্য বিগত ৪০ বছর ধরে চলা সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
বিগত এক দশকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বেশ কিছু উন্নত দেশের জন্যও ঈর্ষণীয় উদাহরণ হিসেবে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বহু বছর ধরেই বিএটি বাংলাদেশ সর্বোচ্চ আয়কর প্রদানকারী সংস্থা, যেটি বিগত ১০ বছরে প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়ার মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।
দেশের দারিদ্র্যতা দূর করার জন্য কৃষিক্ষেত্রে সবুজ বিপ্লব এখন আর স্বপ্ন নয়। বরং বাস্তবতা হলো দেশের দারিদ্র্যতা এখন দূর হওয়ার পথে। বাংলাদেশ এখন খাদ্য উৎপাদনেও স্বয়ংসম্পূর্ণ । বিএটি বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর থেকে কৃষিক্ষেত্রে সকল কার্যকরী উপায় অবলম্বন করে আসছে এবং কৃষকদের টেকসই উন্নয়নেও সফল উদ্যোগ গ্রহণ করে যাচ্ছে, যা পরবর্তীতে কৃষক সম্প্রদায়ের দারিদ্র্যতা দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।এছাড়া আমাদের কৃষকদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের জন্য জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পুরষ্কার প্রাপ্ত ‘বনায়ন’, ‘প্রবাহ’ এবং ‘দীপ্তর’ মত কার্যক্রম গ্রহণ করেছে
বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নের কথা ভাবলে প্রথমেই মনে পড়ে সাম্প্রতিক দশকগুলোতে বাংলাদেশের দ্রুত বর্ধমান ও শক্তিশালী শিল্পখাতের কথা। বিভিন্ন সফল অবকাঠামোমূলক কার্যক্রমগুলো অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। একইভাবে, বিএটি বাংলাদেশ এর নেয়া দায়িত্বশীল টেকসই পদক্ষেপের জন্য প্রতিষ্ঠানটি ‘প্রেসিডেন্ট’স এওয়ার্ড’ সহ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করেছে। এই প্রতিষ্ঠানটি তাদের কারখানা তরল রাসায়নিক বর্জ্য পরিশোধন পদ্ধতি বা এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টের (ইটিপি) অথবা স্যুয়েজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (এসটিপি) স্থাপন করেছে যা দেশের প্রথম সারির কারখানাগুলোর জন্য একটি উদাহরণ হিসেবে দেখা হয়ে থাকে। বিএটি বাংলাদেশ এর অসংখ্য পরিবেশবান্ধব পদক্ষেপগুলোর ভেতর এটি অন্যতম।
বিশ্বের ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলোর একটি হওয়ার ক্ষেত্রে দেশের তরুণ জনসংখ্যা অন্তহীন সম্ভাবনা নির্দেশ করে। প্রায় ১৩ লাখ ৫০ হাজার মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বিএটি বাংলাদেশের কার্যক্রমের ওপর নির্ভরশীল হওয়ায় ইএসজির আওতায় প্রতিষ্ঠানটির মূল অগ্রাধিকার মানব সম্পদ উন্নয়ন। বিএটি বাংলাদেশ শীর্ষ ব্যবসায়িক নেতৃত্ব তৈরির জন্যও সুপরিচিত, যারা শীর্ষস্থানীয় পদে দেশে ও বিদেশি কর্মরত আছেন। এমনকি বিএটি বাংলাদেশের কারখানা কর্মীরা এতটাই দক্ষ যে, তারা এদেশের গণ্ডি পেরিয়ে ইউরোপের বাজারের কারখানা কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতে যাচ্ছেন। তাছাড়াও দেশে ও বিদেশে অন্যান্য কর্পোরেট জগতে বিভিন্ন স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে প্রতিনিধিত্ব করছেন।
বিশ্বের শীর্ষ নারী নেত্রীদের একজন সফলভাবে দেশ পরিচালনা করছেন এবং দেশকে সম্ভাবনাময় এক আগামীর পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন এবং অদম্য কর্মক্ষম নারীরাও অনেক বছর ধরেই সফলভাবে এ পথ ধরে এগিয়ে যাচ্ছেন। নারী ক্ষমতায়নে দীর্ঘদিনের প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে বিএটি বাংলাদেশ দেশের অন্যতম নারীবান্ধব প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী প্রতিষ্ঠানটিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শাখার নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত ভোক্তা, কর্মী, অংশীদার ও সমাজের সর্বোচ্চ স্বার্থে কাজ করে দেশের টেকসই উন্নয়নে ভূমিকা রেখে যাচ্ছে বিএটি বাংলাদেশ। বাংলাদেশের এই সফল যাত্রায় অংশীদার হতে পেরে গর্বিত বিএটি বাংলাদেশ এবং এই সম্ভাবনাময় আগামীর ধারা বজায় রাখতে কাজ করে যাবে প্রতিষ্ঠানটি।