ঢাকা, বুধবার ২৯ই জানুয়ারি ২০২৫ , বাংলা - 

মানিলন্ডারিং মামলায় খালাস মিয়া নুরুদ্দিন অপু

স্টাফ রিপোটার।। ঢাকাপ্রেস২৪.কম

2025-01-27, 12.00 AM
মানিলন্ডারিং মামলায় খালাস মিয়া নুরুদ্দিন অপু

আওয়ামী স্বৈরশাসন আমলে প্রদত্ত প্রতিহিংসামূলক মানিলন্ডারিংয়ের মামলায় বেকসুর খালাস পেয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাবেক একান্ত সচিব, ছাত্রদলের সাবেক নেতা, শরীয়তপুর-৩ (গোসাইরহাট-ডামুড্যা-ভেদরগঞ্জ) আসনের ধানের শীষের জনপ্রিয় প্রার্থী মিয়া নুরুদ্দিন আহাম্মেদ অপু।সোমবার (২৭ জানুয়ারি) জেলা জজ আদালতের বিশেষ জজ রেজাউল করিম তাকে খালাস প্রদান করেন।মিয়া নুরুদ্দিন অপুর কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট খান মোহাম্মদ মইনুল হাসান বলেন, সম্পূর্ণ বানোয়াট মানিলন্ডারিংয়ের মামলা দিয়ে মিয়া নুরুদ্দিন আহাম্মেদ অপুকে দীর্ঘদিন কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। আমাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শুনানি শেষে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক তাকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন। তিনি ন্যায়বিচারের মাধ্যমে খালাস পাওয়ায় আমরা খুবই সন্তুষ্ট। ছাত্র-জনতার তুমুল আন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট দ্বিতীয় স্বাধীনতার পর ৬ আগস্ট মুক্তি পান অপু।মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৪ ডিসেম্বরের ঘটনায় মতিঝিল থানায় মামলা করে র‍্যাব। মামলায় ২০১২ সালের মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের ৪(২) এবং ২০১৩ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ৭ ও ৩০ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।

মামলার নথিতে উল্লেখ করা হয়, ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ ও দেশকে অস্থিতিশীল করতে মতিঝিল সিটি সেন্টারে ইউনাইটেড এন্টারপ্রাইজ এবং ইউনাইটেড করপোরেশনের অফিসে বিপুল পরিমাণ অর্থ মজুতের অভিযোগ পায় র‍্যাব-৩। সংবাদ পেয়ে ২০১৮ সালের ১৪ ডিসেম্বর র‍্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলমের নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ইউনাইটেড এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাহমুদুল হাসানের ভাগনে এ এম হায়দার আলীকে আটক করে র‍্যাব।

এ সময় তার কাছ থেকে ৩ কোটি ১০ লাখ ৭৩ হাজার টাকা জব্দ করা হয়। ওই ঘটনায় ছয়জনসহ অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে মামলা হয়। বাস্তবতা হলো- এই ঘটনাটি ছিল সম্পূর্ণ পূর্ব পরিকল্পিত ও সাজানো। অপু ছিলেন রাজনীতির প্রতিহিংসা-জিঘাংসার নির্মম বলি মাত্র। ২০১৮ সালের নিশিরাতের ভোট ডাকাতির ৬ দিন আগে ২৩ ডিসেম্বর শরীয়তপুর-৩ (গোসাইরহাট-ডামুড্যা-ভেদরগঞ্জ) আসনের বিএনপির প্রার্থী অপুর প্রচার মিছিলে হামলা করে প্রাণনাশের চেষ্টা চালায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সশস্ত্র ক্যাডাররা।শেখ হাসিনার নির্দেশে গোসাইরহাট উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ভবনের সামনের সড়কে এই হামলা চালিয়ে অপুর মাথা ফাটিয়ে দেয় এবং গোটা শরীর থেঁতলে দেয়। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে ঢাকায় এনে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে মাথায় ১৭টি সেলাই দিতে হয়। চিকিৎসাধীন মুমূর্ষু অবস্থায় নির্বাচনে টাকা বিলি করার হাস্যকর মিথ্যা অভিযোগে অর্থ পাচার আইনের ভুয়া মামলায় তাকে ২০১৯ সালের ৪ জানুয়ারি গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

তার আগে র‌্যাব ব্যাগভর্তি নতুন টাকার বান্ডিল, চেক বই আর অপুর নির্বাচনী রঙিন পোস্টার উদ্ধারের নাটক সাজিয়ে অপুর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায়। এই টাকা দিয়ে নাকি নির্বাচনকে প্রভাবিত করার ষড়যন্ত্র করছিলেন অপু। তারপর ওই নির্বাচন থেকে সরিয়ে দেওয়ার নীল নকশা অনুযায়ী একাধিক মিথ্যা মামলা দিয়ে অপুকে জিজ্ঞাসাবাদের নামে দফায় দফায় রিমান্ডে নির্যাতন করে প্রায় পঙ্গু করে দেওয়া হয়। গুরুতর অসুস্থ অপুকে কখনো ফাঁসির আসামিদের জন্য নির্দিষ্ট কনডেম সেলে, কখনো কেরানীগঞ্জ, কখনো কাশিমপুর কারাগারে রাখা হচ্ছে। বারবার অসুস্থ হয়ে পড়লেও কারা কর্তৃপক্ষ তার চিকিৎসার উদ্যোগ নেয় না। তৎকালীন সরকার তাকে অবর্ণনীয় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছে।