হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে তার দ্বিতীয় স্ত্রীসহ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের একটি রিসোর্টে অবরুদ্ধ করার পর সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে গেছেন তার সমর্থক ও হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা। শনিবার (৩ এপ্রিল) সন্ধ্যার দিকে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যান নেতাকর্মীরা। এ সময় সংবাদকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে মামুনুল হক বলেন, আমাদের বিয়ে হয়েছে দুই বছর আগে। আমি সোনারগাঁয়ে ঘুরতে এসেছিলাম। ঘোরার মাঝে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য রিসোর্টটি বুক করা ছিল। আমি যেখানে যাই সেখানেই মানুষ ভিড় করে তাই আলেম-ওলামাদের অবহিত করে এখানে আসিনি। আর যেহেতু এটি আমার পারিবারিক ভ্রমণ তাই সেভাবে কাউকে জানানো হয়নি। কারণ এমন অবস্থাও এখন দেশে হয় আমার জানা ছিল না যে স্ত্রী নিয়ে ঘোরা যাবে না।
তিনি বলেন, আমার সঙ্গে পর্যাপ্ত দুর্ব্যবহার করা হয়েছে। আমি এর জন্য আইনি পদক্ষেপ নেবো। আইনি পদক্ষেপের কথা বলার পর তারা আমাকে বলে আমাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবেন, আমরা কে জানেন? আমার কাছে প্রমাণ আছে। তবে আমি তো কাবিননামা নিয়ে ঘুরবো না। কেউ কি স্ত্রী নিয়ে বের হলে কাবিননামা নিয়ে ঘুরে?
জানা গেছে, শনিবার বিকেলে মামুনুল হক সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টে আসেন। তার সঙ্গে একজন নারী ছিলেন। ওই সময়ে বিষয়টি দেখতে পেয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম নান্নু, ছাত্রলীগ নেতা সোহাগ রনিসহ অনুগামীরা উপস্থিত হয়ে রিসোর্টের পঞ্চম তালার ৫০১ নম্বর কক্ষে তাকে অবরুদ্ধ করে ফেলেন। তারা মামুনুল হকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। খবর পেয়ে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গিয়ে সেখানে হাজির হন।
নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ জায়েদুল আলম জানান, মামুনুল হক নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানার রয়েল রিসোর্টের একটি কক্ষে এক নারীসহ অবস্থান করছেন এমন খবরে স্থানীয় লোকজন রিসোর্ট ঘেরাও করে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায়। মামুনুল হক পুলিশকে জানিয়েছেন সঙ্গে থাকা নারী তার দ্বিতীয় স্ত্রী। পরে পুলিশ তাকে নিরাপত্তা দিয়ে সেখান থেকে উদ্ধার করেছে।
সন্ধ্যা ৭টার দিকে শত শত লোকজন রিসোর্টের সামনে জড়ো হন। সেখানে তারা গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। ওই সময় মামুনুল হক ও তার স্ত্রী বেরিয়ে আসেন। বিক্ষুব্ধ জনতা তখন রিসোর্ট ভাঙচুর করেন। লোকজন মামুনুল হককে সঙ্গে নিয়ে উপজেলার আমিনপুর ঈদগাহ ময়দানে যান। সেখানে মামুনুল হক বিক্ষুব্ধ জনতাকে শান্ত থাকতে বলেন এবং সবাইকে শান্তিপূর্ণভাবে বাড়ি ফিরে যেতে বলেন। তিনি ওই এলাকা ছেড়ে গেলেও স্থানীয়রা মহাসড়ক অবরোধ করে।