ঢাকা, বুধবার ২৯ই জানুয়ারি ২০২৫ , বাংলা - 

নির্বাচিত সরকার আসলেই দেশের মঙ্গল : আলাল

স্টাফ রিপোটার।। ঢাকাপ্রেস২৪.কম

2025-01-26, 12.00 AM
নির্বাচিত সরকার আসলেই দেশের মঙ্গল : আলাল
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন,নির্বাচনের কথা এই কারণে আমরা বলছি যে ১৪,১৮,২৪ সালে নির্বাচনে যা হয়েছে মানুষের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে নিজেদের ভোট প্রয়োগ করতে চায়। একটা নির্বাচিত সরকার যা করতে পারবেন একটা অন্তর্বর্তী সরকার তা করতে পারবে না। নির্বাচিত সরকার যত দ্রুত আসবে দেশের মঙ্গল তত দ্রুত হবে।
 
রবিবার (২৬ জানুয়ারি) ঢাকার রিপোর্টার্স ইউনিটিতে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের উদ্যোগে রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এর ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এর ঘোষণাধি মহান মুক্তিযুদ্ধের তুর্যধ্বনি শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
 
আলাল বলেন, ঝড়ের মধ্যে একটি জাহাজ পড়লে একজন দক্ষ নাবিক পারে সেটা নিয়ন্ত্রণ করতে তেমনি বাংলাদেশের এই অবস্থায় একজন দক্ষ নাবিক প্রয়োজন। সেই দক্ষ ভান্ডারটা বিএনপির মধ্যে আছে। বিএনপির দেশ পরিচালনার দক্ষতা রয়েছে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান প্রথম বিভিন্ন নদীর পানির ভাগাভাগি নিয়ে জাতিসংঘে প্রস্তাব উত্থাপন করেছিল। আর আওয়ামী লীগ সরকার শুধু দিয়েই গেছে। শেখ হাসিনার সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছিল ভারতকে আমি যা দিয়েছি তারা সারা জীবন মনে রাখবে। ভারত কেন? চায়না হোক আমেরিকা হোক  ভারত হোক পাকিস্তান হোক আর বিশ্বের যে কোন দেশেই হোক সবার সাথে বন্ধুত্ব হবে সমান্তরাল ভিত্তিতে। আমার দেশের মর্যাদা আর তার দেশের মর্যাদা দুটো যখন সমান্তরাল হবে তখনই তাদের সাথে বন্ধুত্ব হবে।
 
তিনি বলেন, আমাদের ছোট বন্ধুরা, আমাদের সন্তান সমতুল্য যারা তাদেরকে বলছি আপনারা পাকা ফল ঝাকি দিয়ে পেরেছেন। ১৫-১৬ বছর আমরা ত্যাগের মধ্য দিয়ে বিশেষ করে জিয়া পরিবার বেগম খালেদা জিয়া যে অববনীয় কষ্টের মধ্য দিয়ে একাগ্র চিত্রে এই ফ্যাসিস সরকার পতনের জন্যে মানসিকভাবে কঠোর ছিলেন। তারই ধারাবাহিকতায় একটা পর্যায়ে এসে আপনারা গাছে ঝাকি দিয়েছে আর পাকা ফল পড়েছে। আমি নিশ্চিত এই ফল পড়তো হয়তো আর কিছুদিন সময় লাগতো। তার মানে এই নয় আপনারা সব কৃতিত্ব নেবেন এই আন্দোলনে আরও যাদের ভূমিকা রয়েছে তাদেরকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করবেন। এটা কখনোই কাম্য হতে পারে না। 
 
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের উদ্দেশ্যে যুবদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, আপনারা কেন সরকারে গেলেন? আন্দোলনে থাকলে আন্দোলনের মাধ্যমেই তো দাবি আদায় করা যায়। সরকারে যেহেতু গিয়েছে তখন মানুষের মধ্যে প্রশ্ন জেগেছে আপনারা সারাদেশে যে কম্বল বিতরণ করছেন এর টাকা দিচ্ছে কে? আপনারা রাজনৈতিক দল করার জন্য বৈঠক করছেন। খোলা জিপে চড়ে মালের পর মাইল ঘুরে বেড়াচ্ছে টাকা দিচ্ছে কে? এই প্রশ্ন করলেই অপরাধ হয়ে যাবে? এ প্রশ্ন করার অধিকার সবার রয়েছে। আগে এ প্রশ্ন করতে পারে নাই বলেই আন্দোলনে মায়েরা,মুগ্ধরা পানি দিয়েছে জীবন দিয়েছে। তারা দেখিয়ে দিয়েছে  যারা মরতে জানে তাদেরকে মারা যায় না। আবার প্রমাণ করতে পারবে না এমন নিশ্চয়তা কিন্তু নাই। সুতরাং নিজেদেরকে সবকিছুর ঊর্ধ্বে ভাবাটা আপনাদের ঠিক হচ্ছে না।
 
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন নেতাদের  উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, জাতিকে যদি বিভক্ত করেন তাহলে আওয়ামী লীগের প্রকৃতি ঢেকে দেওয়ার অপচেষ্টা করা হবে। পৃথিবী বিভাজন সৃষ্টি করেন মানুষের দৃষ্টি সেদিকে যাবে। আওয়ামী লীগের কুকীর্তি নিচে নেমে যাবে ঢেকে যাবে। সুতরাং এই বিভাজন করবেন না। কারণ আওয়ামী লীগ যা করে গেছে হাজার বছরের ইতিহাসে তা লিপিবদ্ধ থাকবে।
 
আলাল বলেন, দ্রব্যমূল্যে ঊর্ধ্বগতির কারণে সংস্কার ও সংসারের মধ্যে একটা দ্বন্দ্ব তৈরি হয়ে গেছে। অনেকে বলে আমরা সংস্কারের প্রস্তাব দুই বছর আগে দিয়েছি কিন্তু না ৬ বছর আগে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সংস্কারের প্রস্তাব মিডিয়ার সামনে রেখে ছিলেন। সুতরাং সংস্কার উপহার দিয়েছে বিএনপি। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার ঘোষণা যেমন দিয়েছে বিএনপি তেমনি সংস্কার উপহার দিয়ে নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে
তা বাস্তবায়ন করবে বিএনপি ।
 
তিনি বলেন, কাউকে কখনো ছোট করতে নেই। কিন্তু আওয়ামী লীগ সবাই ছোট করে নিজে বড় হতে চেয়েছে। শেখ হাসিনা বেগম জিয়াকে অন্যায় ভাবে জুলুম নির্যাতন করেছি আর দেশের মানুষ শেখ সহ তার গুষ্টির সবাইকে দেশ ছাড়া করেছে। এখন সে বিদেশে বসে ক্যু দেয়। ভারতে বসে আসাদুজ্জামান কামাল বলেন জুলাই আগস্ট আন্দোলনের ভূমিকা ইসলামী দলগুলো এবং ছাত্রদের তাহলে আমাদের বিএনপির যে ৫০০ নেতা কর্মী নিহত হলো। গত ১৫-১৬ বছর নেতাকর্মী গুম হয়েছে,জেল জুলুম সহ্য করেছে কিসের জন্য। চেষ্টাতেই বেগম খালেদা জিয়ার আদরের সন্তান আরাফাত রহমান কোকোকে আওয়ামী লীগ সরকার নির্যাতন করে বিদেশে থেকে তার মৃতদেহ দেশে আসার পরে বেগম খালেদা জিয়া ৯২ দিন বন্দী ছিল। তিনি বাড়িছাড়া হয়েছিলেন। এই ইতিহাস মানুষকে এত তাড়াতাড়ি ভুলে যাবে? 
 
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বলেন, ভারতকে বাংলাদেশের বিচার বিভাগে হস্তক্ষেপ করার জন্যও আসাদুজ্জামান কামাল বলেছে। সে নাকি মুক্তিযোদ্ধা। সে মুক্তিযোদ্ধা নয় সে হচ্ছে চুক্তি যোদ্ধা। সেই সময় চুক্তি করে হয়তো মুক্তিযুদ্ধের সার্টিফিকেট নিয়েছে। তা না হলে অন্য দেশে বসে এত বড় কথা কেউ বলতে পারে? যেখানে বাংলাদেশ রক্ষার জন্য এখনো মানুষ জীবন দিতে প্রস্তুত সেখানে এ ধরনের কথা সে বলতে পারে? এ ধরনের কথা বলার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে তার নামে মামলা হওয়া উচিত। 
 
জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইজতিয়াক আজিজ উলফাত এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফেজ উদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম সহ সংগঠনটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।