স্বাধীনতার পাঁচ দশকে বাংলাদেশের অগ্রগতির সঙ্গে ঠিক কুলিয়ে উঠতে পারেনি নির্বাচন কমিশন (ইসি)। দেশের অপরাপর সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো কমবেশি এগিয়ে গেলেও বরাবরই পিছিয়ে পড়েছে ইসি। গণতন্ত্র রক্ষার অন্যতম অনুঘটক ও সাংবিধানিক সংস্থাটি বলতে গেলে কখনোই বিতর্ক এড়াতে পারেনি। দেশের ইতিহাসে যে ১২টি নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব পালন করেছে তার দু’একটি ব্যতিক্রম ছাড়া সকলেই জনগণের প্রত্যাশা পূরণে বলতে গেলে ব্যর্থ। নির্বাচন ইস্যুতে বার বার প্রশ্নের মুখে পড়েছে কমিশন।
স্বাধীন বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনের ইতিহাস পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, এ পর্যন্ত দেশে ১২টি নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। ১৯৭২ সালের ৮ জুলাই দেশের প্রথম নির্বাচন কমিশন গঠনের মধ্য দিয়ে সাংবিধানিক এ সংস্থার যাত্রা শুরু। সেই সময় থেকে এখন পর্যন্ত গঠিত ১২টি কমিশনের মধ্যে ওয়ান ইলেভেনের সময় নিযুক্ত ড. এটিএম শামসুল হুদা এবং ১৯৯৬ সালে নিয়োগ পাওয়া মোহাম্মদ আবু হেনা কমিশন ছাড়া সকলকেই বিতর্কের মধ্যে চলতে হয়েছে। অবশ্য এ দুটি কমিশনও একেবারে বিতর্কের ঊর্ধ্বে ছিল না। মজার ব্যাপার হলো ক্ষমতাসীন সব সরকারই নির্বাচন কমিশনের প্রশংসা করে এসেছে। বিপরীতে বিরোধীপক্ষ আগাগোড়াই সমালোচনায় মুখর ছিল ইসির।
দেশের কমিশনগুলোর কার্যকাল পর্যালোচনা করলে দেখা যায়-১২টি নির্বাচন কমিশনের মধ্যে তিনটিকে বিদায় নিতে হয় বেশ দুঃখজনকভাবে। এদের কেউ পাঁচ বছরের মেয়াদের দুই বছরও পার করতে পারেনি। এগুলো হলো- বিচারপতি সুলতান হোসেন খান কমিশন (এক বছর), বিচারপতি একেএম সাদেক কমিশন (এক বছর) এবং বিচারপতি এমএ আজিজ কমিশন (দেড় বছর)। এদের মধ্যে একেএম সাদেকের অধীনে বিতর্কিত ১৫ ফেব্রুয়ারির (১৯৯৬) সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। অন্য দুটি কমিশনের অধীনে কোনও সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি।
আজিজ কমিশন নবম সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করলেও ওই নির্বাচন বাতিল হয় এবং তাকে পদত্যাগ করতে হয়। বিচারপতি মো. ইদ্রিস, বিচারপতি চৌধুরী এ.টি.এম মাসুদ, এম এ সাঈদ, ড. এটিএম শামসুল হুদা, কাজী রাকিব উদ্দীন আহমেদ তাদের পাঁচ বছরের পূর্ণ মেয়াদ দায়িত্ব পালন করেছেন। নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক তৈরি হওয়ায় বিচারপতি মো. আব্দুর রউফ ও মোহাম্মদ আবু হেনা কমিশন তাদের মেয়াদ শেষ না করে বিদায় দেন।
মাগুরা উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে জনগণের আন্দোলনের মুখে সরে যায় রউফ কমিশন। অপরদিকে টাঙ্গাইলের একটি আসনে উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিতর্ক তৈরি হওয়ায় দায় নিয়ে স্বেচ্ছায় সরে যায় আবু হেনা কমিশন।
বিচারপতি মাসুদ কমিশনের অধীনে অনুষ্ঠিত হয় দুটি সংসদ নির্বাচন। তার সময় ১৯৮৬ সালে তৃতীয় সংসদ এবং ১৯৮৮ সালে চতুর্থ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ ছাড়া অন্যসব কমিশনের অধীনে একটি করে সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিচারপতি এ কে, এম নুরুল ইসলাম কমিশন দায়িত্ব পালন করেন প্রায় আট বছর।
দেশের ইতিহাসে ১১টি সংসদ নির্বাচন ছাড়াও সরাসরি ভোটে তিনটি রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ.কে.এম নুরুল ইসলামের অধীনে ১৯৭৮ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি হন। এ ছাড়া ১৯৮১ সালের ১৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিচারপতি আব্দুস সাত্তার রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। নির্বাচনটিও অনুষ্ঠিত হয় নুরুল ইসলাম কমিশনের অধীনে। এ ছাড়া সর্বশেষ সরাসরি রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হয় ১৯৮৬ সালের ১৫ অক্টোবর। যেখানে এইচএম এরশাদ নির্বাচিত হন। নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হয় মাসুদ কমিশনের অধীনে।
দেশের নির্বাচন কমিশনগুলোর মধ্যে সবগুলো নিয়ে কমবেশি বিতর্ক থাকলেও সবাইকে ছাপিয়ে গেছে বর্তমান কে এম নূরুল হুদা কমিশন। সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া এই কমিশন তাদের মেয়াদের চার বছরে কখনোই বিতর্কের ঊর্ধ্বে ছিল না। বর্তমান কমিশনের সদস্যদের মধ্যে প্রকাশ্য মতবিরোধও দেখা গেছে।
নির্বাচন ভবননির্বাচন ভবন
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম হুদা ও কমিশনার মাহব্বু তালুকদার প্রকাশ্য সভায় একে অপরের কঠোর সমালোচনা করেছেন। এ ছাড়া কমিশনার মাহবুব তালুকদার বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমকে ডেকে তাদের অধীনে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের সমালোচনা করেছেন।
বিতর্কের দিক থেকে এগিয়ে থাকলেও পূর্ববর্তী কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদ কমিশনের থেকে একটি দিক থেকে এগিয়ে বর্তমান হুদা কমিশন। তার তা হচ্ছে অংশগ্রহনমূলক নির্বাচন। সার্চ কমিটির মাধ্যমে প্রথমবারের মতো নিয়োগ পাওয়া রকিব কমিশনের অধীনে অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি ও তাদের মিত্রসহ বেশিরভাগ দল নির্বাচন বর্জন করে। ওই নির্বাচনে ১৫২ জন সংসদ সদস্য বিনাভোটে জয়ী হয়েছিলেন। পক্ষান্তরে বর্তমান কমিশন একাদশ সংসদ নির্বাচনে সব দলকে নির্বাচনে আনতে সক্ষম হয়েছে।
প্রসঙ্গত: ১২ জন নির্বাচন প্রধান কমিশনার ছাড়াও এদেশে এ পর্যন্ত ২৭ ব্যক্তি কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন। কমিশনারদের মধ্যে একমাত্র বিচারপতি সুলতান হোসেন খান প্রধান কমিশনার নিযুক্ত হয়েছিলেন। অবশ্য তিনি এক বছরের বেশি এ দায়িত্বে থাকতে পারেননি। এদিকে দেশের ইতিহাসে একমাত্র নারী কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন কবিতা খানম।
বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনকে মূল্যায়ন করতে গিয়ে প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক ও কলাম লেখক সোহরাব হাসান লিখেছেন, বাংলাদেশ এ পর্যন্ত ১২টি নির্বাচন কমিশন ও ১২ জন প্রধান নির্বাচন কমিশনার পেয়েছে। প্রথম সিইসি ছিলেন মোহাম্মদ ইদ্রিস। আর সর্বশেষ কে এম নূরুল হুদা। মাঝে আরও ১০ জন। তাঁদের মধ্যে দুটি ধারা। একটি হলো যারা জনগণের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী একটি সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন করতে পেরেছে। নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও এই তালিকায় বিচারপতি রউফ, মোহাম্মদ আবু হেনা, এম এ সাঈদ ও এ টি এম শামসুল হুদার নাম আসবে।
আরেকটি হলো যারা সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে পারেননি। এই ধারায় আছেন বিচারপতি নুরুল ইসলাম, এ টি এম মাসউদ, সুলতান হোসেন খান, রকিবউদ্দীন আহমদ প্রমুখ। আর কে এম নূরুল হুদা ও তাঁর সহযোগীদের নাম কোন সারিতে থাকবে তা দেশবাসীই বিচার করবেন।
দেশের নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন কমিশনকে এগুতে হলে গণতন্ত্রকে এগুতে দিতে হবে। আমাদের গণতন্ত্র তো সেভাবে আগায়নি। মানুষের ভোটাধিকার এখনও প্রশ্নবিদ্ধ। এটা যদি সার্বিক অবস্থা হয়, তবে নির্বাচন কমিশন নিয়ে মাথাব্যথা বাড়িয়ে লাভ কী? এ কমিশন থাকলেই কী, না থাকলেই কী?
ভারতের নির্বাচন কমিশনের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনকে পরিবর্তনের জন্য একজন ব্যক্তিই যথেষ্ট। ভারতের নির্বাচন ব্যবস্থা কিন্তু এক সময় ভাল ছিল না। কিন্তু এক টিএস সেশনই (ভারতের সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার) ভারতের নির্বাচনি ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসেন। এর ফল এখন ভারতবাসী পাচ্ছে।
শিক্ষাবিদ মনজুরুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন কমিশন যদি কিছু শক্ত মানুষের সমন্বয়ে হতো; তারা কোনও চাপের মুখে নত না হয়ে কোনও দল বা দরকারের প্রতি আনুগত্য না দেখিয়ে কেবল মানুষের চিন্তা করতেন এবং তাদের চাকরির শর্তের প্রতি বিশ্বস্ত থাকতেন তবে অনেক পরিবর্তন আসতো।
কেবল নির্বাচন কমিশন নয়, আমাদের দেশের কোনও প্রতিষ্ঠানই সরকারের অনুগ্রহ ছাড়া কাজ করতে চায় না মন্তব্য করে তিনি বলেন, এরজন্য আমি কোনও দলকে দায়ী করছি না। বিএনপির সময়ে রউফ সাহেবের কমিশন থেকে এটা শুরু হলো। যার ধারাবাহিকতা আমরা এখনও দেখছি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন শক্তিশালী করার জন্য কমিশন নিয়োগের আইন করার কোনও প্রয়োজন নেই। আমি ব্যক্তিগতভাবে আইন করার বিরুদ্ধে। দেশে অনেক আইন আছে। তাকে কী লাভ হচ্ছে? এটা আইনের বিষয় নয়। বিবেকের বিষয়। আমরা যদি সবাই মিলে কাজ করি, তবে তো গণতন্ত্র হবে।
বাংলাদেশ সব দিক থেকে এগুলেও নির্বাচনি ব্যবস্থা ও কমিশন শক্তিশালীকরণে পেছাচ্ছে মন্তব্য করে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ড. এম শাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমাদের নির্বাচন কমিশনকে কী বলে ব্যাখ্যা দেব বুঝতে পারছি না। তাদের কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে ভোটের সময় সিল-টিল মারা। এদিকের ফল ওদিক করা।
শামসুল হুদা কমিশনের সদস্য সাখাওয়াত বলেন, আমরা কী করেছি তার মূল্যায়ন জনগণ করবে। তবে পর্যালোচনা করে বলতে বললে বলবো এটা ছিল দেশের সেরা নির্বাচন কমিশন। আমরা অনেক কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে কাজ করেছি। জাতীয়-আন্তর্জাতিক অনেক চাপ সহ্য করতে হয়েছে। তবে, ঝুঁকি নিয়ে আমরা তো কাজগুলো সফলভাবে করার চেষ্টা করেছি। প্রত্যাশা ছিল আমাদের ধারাবাহিকতায় কমিশন এগিয়ে যাবে। কিন্তু সেটা ধরে রাখতে পারেনি। আমাদের পরের কমিশনটাও কোনোরকম ছিল। বর্তমান কমিশন নিয়ে কী আর বলবো!
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সারা জীবনের সংগ্রাম ছিল ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু ৫০ বছরে এসে আমরা বলতে পারছি না ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। আমি মনে করি না এটা অসম্ভব। আমরা চাইলে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামের লক্ষ্যে (ভোটের অধিকার) পৌঁছাতে পারি। কিন্তু আমরা তা চাই না। এখন জনগণও ভোটবিমুখ।
একনজরে দেশের যত নির্বাচন কমিশন
ইদ্রিস কমিশন
দেশের প্রথম প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছিলেন বিচারপতি এম ইদ্রিস। তাঁর কমিশনের মেয়াদ ছিল ১৯৭২ সালের ৭ জুলাই থেকে ১৯৭৭ সালের ৭ জুলাই। ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করে এই কমিশন।
নুরুল ইসলাম কমিশন
বিচারপতি একেএম নুরুল ইসলাম বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি সময় দায়িত্ব পালন করা প্রধান নির্বাচন কমিশনার৷১৯৭৭ সালের ৮ জুলাই দায়িত্ব নেন তিনি। অব্যাহতি নেন ১৯৮৫ সালের ১৭ ফ্রেব্রুয়ারি।
মাসুদ কমিশন
বিচারপতি চৌধুরী এটিএম মাসুদ দায়িত্ব নেন ১৯৮৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি। তিনি পূর্ণ পাঁচ বছর মেয়াদ শেষ করেন ১৯৯০ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি। এরশাদের আমলে ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এই কমিশনের অধীনে।
সুলতান কমিশন
বিচারপতি সুলতান হোসেন খান ১৯৯০ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি সিইসি’র দায়িত্ব নেন। তবে মাত্র দশ মাস দায়িত্ব পালন করেন। ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলেন তিনি।
রউফ কমিশন
বিচারপতি সুলতান হোসেন খানের পর বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রউফ সিইসি নিয্ক্তু হন। ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা করে তাঁর কমিশন। ১৯৯৫ সালের ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
সাদেক কমিশন
বিচারপতি একেএম সাদেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদে নিযুক্ত হন ১৯৯৫ সালের ২৭ এপ্রিল। তাঁর কমিশনের অধীনেই হয় ১৯৯৬ সালের বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচন। তাঁর মেয়াদ ছিল ১৯৯৬ সালের ৬ এপ্রিল পর্যন্ত।
হেনা কমিশন
ওইবারেই প্রথম কোনও আমলাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে সাবেক আমলা মোহাম্মদ আবু হেনা ১৯৯৬ সালের ৯ এপ্রিল সিইসি’র দায়িত্ব নেন। তাঁর অধীনে ১৯৯৬ সালের জুনে সপ্তম জাতীয় সংসদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ২০০০ সালের ৮ মে পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।
সাঈদ কমিশন
অষ্টম সিইসি হিসেবে এমএ সাঈদ দায়িত্ব নেন ২০০০ সালের ২৩ মে। ২০০৫ সালের ২২ মে পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয় তাঁর কমিশনের অধীনে।
আজিজ কমিশন
বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্যতম আলোচিত কমিশন আজিজ কমিশন। বিচারপতি এমএ আজিজ ২০০৫ সালের ২২ মে সিইসি’র দায়িত্ব নেন। ব্যাপক রাজনৈতিক টানাপড়েনের সময় ২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারি নবম জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। পরে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান ফখরুদ্দীন আহমদ তফসিল বাতিল করেন। ২১ জানুয়ারি পদত্যাগ করেন এম এ আজিজ।
শামসুল হুদা কমিশন
সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে এমএ আজিজের উত্তরসূরী হন এটিএম শামসুল হুদা। তাঁর কমিশন ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে নবম জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা করে। তাঁর মেয়াদ ছিল ২০০৭ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।
রকিব উদ্দিন কমিশন
২০১২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব নেয় রকিব উদ্দিন আহমেদ কমিশন। সাবেক এই সচিবকে নিয়োগ দেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান। আওয়ামী লীগ সরকারের এই মেয়াদেই সংসদে বাতিল হয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনেই এই কমিশন ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন পরিচালনা করে, যেখানে ১৫৩ জন সংসদ সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। পূর্ণ পাঁচ বছর মেয়াদ শেষ হবার পর ২০১৭ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পান রকিবুদ্দিন৷
নুরুল হুদা কমিশন
বর্তমান কমিশন হলো নুরুল হুদার কমিশন। সিইসি পদে সাবেক সচিব কেএম নুরুল হুদা নিয়োগ পান ২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি। তার মেয়াদ ইতোমধ্যে চার বছর অতিক্রম করেছে। এই কমিশনের অধীনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।