বাংলাদেশে করোনা যখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে তখন নতুন উৎকণ্ঠা হিসেবে এসেছে টিকা। দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেয়ার মতো পর্যাপ্ত টিকা বাংলাদেশের হাতে নেই। ভারত মার্চ মাসে যে টিকার চালান দেয়ার কথা ছিল, সেই টিকার চালান আসে নি। ইতিমধ্যে ভারত ঘোষণা করেছে, তাদের চাহিদা মেটানোর জন্য তারা আপাতত টিকা রপ্তানী বন্ধ করেছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ বাংলাদেশের যে টিকার আমদানি সেটি যেনো অব্যাহত থাকে সে ব্যাপারে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত ভারতের পক্ষ থেকে কোনো টিকা বাংলাদেশে আসার খবর পাওয়া যায় নি।
বাংলাদেশে ভারতের টিকা আমদানি করছে ওষুধ কোম্পানি বেক্সিমকো। বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস সূত্রে জানা গেছে যে, তারা সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে যোগাযোগ করছে কিন্তু এখন পর্যন্ত সেখান থেকে আশাবাদি হওয়ার মতো কোনো খবর তারা পান নি। বাংলাদেশে ইতিমধ্যে প্রথম ডোজ টিকা দেয়া হয়ে গেছে এবং ৬০ লাখের বেশি মানুষ প্রথম ডোজ টিকা পেয়েছেন। দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেয়ার জন্য যে টিকা দেয়ার কথা সেটি নেই। গতকাল স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেছেন, শেষ পর্যন্ত যদি টিকা না আসে তাহলে বাংলাদেশে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেয়া সম্ভব হবে না।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিকল্প চিন্তার কথা বলেছেন, তবে সেই বিকল্প চিন্তা কি সে সম্পর্কে তিনি কোনো কথা বলেন নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টিকা নিয়ে একপাক্ষিক অবস্থান অর্থাৎ শুধু ভারত নির্ভরতার কারণেই বাংলাদেশকে বিপদে পড়তে হয়েছে। কারণ যদি একাধারে ফাইজার, মর্ডানা এবং চীনের ভ্যাকসিনের জন্য অনুমোদন দেয়া হতো তাহলে হয়ত বাংলাদেশ টিকা নিয়ে এই বিপদে পড়তো না।
ভারত বিভিন্ন সময় বাংলাদেশের সংকটে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং বাংলাদেশকে একটি জটিল পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে। এর আগে পেঁয়াজ নিয়েও একই সমস্যা হয়েছিল। যখন ভারত বাংলাদেশে হঠাৎ করেই পেঁয়াজ রপ্তানী বন্ধ করে দিয়েছিলো। এখন টিকা নিয়েও ভারতের এই উল্টো যাত্রা বাংলাদেশকে এক ধরনের বিপদেই ফেলছে বলে চিকিৎসক এবং বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।