ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২১ই নভেম্বর ২০২৪ , বাংলা - 

আবু সাঈদ ও মুগ্ধের যুদ্ধ শেষ হয়নি:সেলিম উদ্দিন

স্টাফ রিপোটার।। ঢাকাপ্রে২৪.কম

2024-11-15, 12.00 AM
আবু সাঈদ ও মুগ্ধের যুদ্ধ শেষ হয়নি:সেলিম উদ্দিন

আবু সাঈদ ও মুগ্ধের যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি বরং আওয়ামী-বাকশালীদের রাজনীতি থেকে চিরতরে বিদায় ও মাফিয়াতান্ত্রিক ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় এই আন্দোলন অব্যাহত রাখার আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন। তিনি আজ বিকাল ৩টায় রাজধানীর ভাটারার নতুন বাজার মাদানী এভিনিউ-এ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের ভাটারা থানা আয়োজিত এক কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। থানা আমীর এডভোকেট রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি আহমেদ সালমানের পরিচালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমীর আব্দুর রহমান মূসা এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম,ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি নাজিমুদ্দিন মোল্লা। বক্তব্য রাখেন জামায়াতের ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য হেদায়েত উল্লাহ,মজলিসে শূরা সদস্য কুতুবউদ্দিন, ফজলে আহমেদ, আ.সবুর ফরহাদ,ইঞ্জিনিয়ার আবুল বাশার,সিরাজুল ইসলাম, আহমেদ ওজায়ের  প্রমূখ।
সেলিম উদ্দিন বলেন, ছাত্র-জনতার বিপ্লবের তিন মাস অতিক্রান্ত হলেও পতিত স্বৈরাচারের প্রতিভূদের বিচারের ক্ষেত্রে আশাবাদী হওয়ার মত কোন অগ্রগতি নেই বরং তারা অর্জিত বিজয়কে নস্যাৎ ও বিতর্কিত করার জন্য নানাবিধ ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। তারা কখনো আনসারের ছদ্মবেশে, কখনো সংখ্যালঘুর ছদ্মাবরণে; আবার কখনো পরীক্ষার অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের ব্যানারে অন্তর্র্বতী সরকারকে বিব্রত করার ষড়যন্ত্র করে ব্যর্থ হয়েছে। সবকিছুতে ব্যর্থ হয়ে তারা এখন নতুন করে ভিন্ন আঙ্গিকে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। তাই স্বৈরতান্ত্রিক ও ফ্যাসীবাদীদের রাজনৈতিক দর্শনের দাফন নিশ্চিত করার জন্যই এদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। তাই এসব মানবতাবিরোধীদের অপরাধীদের বিচারের জন্য কোন ভাবেই কালক্ষেপন করার সুযোগ নেই বরং অনতিবিলম্বে তাদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। তিনি স্বৈরাচার ও ফ্যাসীবাদমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে দলমত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার  বিপ্লবের মূল উদ্দেশ্যই ছিল দেশে সকল প্রকার বৈষম্যের অবসান। কিন্তু আগস্ট বিপ্লবের পরও দেশের সর্বক্ষেত্রে বৈষম্য বিরাজমান। মূলত, মানবরচিত মতবাদের মাধ্যমে মানুষের কল্যাণ ও মুক্তি কোন ভাবেই সম্ভব নয়। জামায়াতের দীর্ঘ আন্দোলন- সংগ্রামের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, জামায়াত দীর্ঘদিন যাবৎ দেশের মানুষের মাঝে যে আদর্শ প্রচার করেছে সময়ের ব্যবধানে তার অপরিহার্যতা প্রমাণ হয়েছে। জামায়াত নির্বাচনকালীন কেয়ারটেকার সরকারের প্রয়োজনের কথা অনুভব করলেও অপরাপর রাজনৈতিক দলগুলো তা মোটেই আমলে নেয়নি। কিন্তু পরবর্তীতে তা সকলের কাছেই জিকিরে পরিণত হয়েছিল। বিগত ৫৩ বছর ধরে জামায়াত দেশে আল্লাহর আইন ও সৎলোকের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠিত হলে দেশে ক্ষুধা, দরিদ্র ও অর্থনৈতিক বৈষম্যের অবসান হবে; প্রতিষ্ঠিত হবে সুশাসন। তিনি সেই ক্ষুধা, দারিদ্র ও বৈষম্যমুক্ত নতুন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় আগামী নির্বাচনে জামায়াতের পক্ষে রায় দিতে নগরবাসীর প্রতি আহবান জানান।  
মহানগরী উত্তর আমীর বলেন, জামায়াত একটি গণমুখী রাজনৈতিক সংগঠন। তাই প্রত্যেক ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদেরকে মানুষকে সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন এবং ভালবাসতে হবে। আমরা দেশকে এমন একটি কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চাই যেখানে প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক অধিকার ও মানবিক মর্যাদা সংরক্ষণ করা হবে। নাগরিকরাই হবেন দেশের  মালিক। তারা নিজেদেরকে রাষ্ট্রের প্রজা বা শ্রমিক মনে করবে না। কেউ কারো ওপর অন্যায়ভাবে লাঠি ঘোরাতে পারবে না। কেউ কারো অধিকার বা ইজ্জত লুন্ঠন করতে পারবে না। বাংলাদেশকে পরিণত করা হবে ন্যায়- ইনসাফভিত্তিক ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্রে। যেখানে ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, দলমত নির্বিশেষে প্রত্যেক নাগরিক সমান অধিকার ভোগ করবেন। থাকবে না কোন  ক্ষুধা, দারিদ্র ও বৈষম্য। তিনি সেই কাক্সিক্ষত ও কল্যাণমুখী সমাজ প্রতিষ্ঠায় ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদেরকে ময়দানে আপোষহীন ভূমিকা পালনের আহবান জানান। 
ড. রেজাউল করিম বলেন, স্বৈরাচারি-মাফিয়াতান্ত্রিকদের পতন হলেও ষড়যন্ত্র এখনো  বন্ধ হয়নি বরং তারা ছাত্র-জনতার অর্জিত বিজয়কে নস্যাৎ ও বিতর্কিত করার জন্য নানাবিধ অপতৎপরতা অব্যাহত রেখেছে। তাই ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের ঘরে বসে থাকার সুযোগ নেই বরং যার যতটুকু সামর্থ আছে তা নিয়েই তা নিয়েই আমাদেরকে ময়দানে আপোষহীন ভূমিকা পালন করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে এডভোকেট রেজাউল করিম বলেন, আমরা পরাজিত হওয়ার জন্য ময়দানে নামিনি বরং যেকোন মূল্যে দ্বীনকে বিজয়ী করতে আমরা বদ্ধপরিকর। আমরা হয় বিজয় হবো, না হয় শাহাদাতকে বরণ করতে সদা প্রস্তুত।