ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২১ই নভেম্বর ২০২৪ , বাংলা - 

গ্রেপ্তার বাণিজ্যের প্রমাণ পেলে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা:বিপ্লব

ষ্টাফ রিপোটার।।ঢাকাপ্রেস২৪.কম

2024-07-30, 12.00 AM
গ্রেপ্তার বাণিজ্যের প্রমাণ পেলে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা:বিপ্লব

কোনো পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে যদি গ্রেপ্তার বাণিজ্যের প্রমাণ পাওয়া যায়, তাকে শুধু প্রত্যাহার নয়, তার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার (অপারেশনস) বিপ্লব কুমার সরকার এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) দুপুরে ডিএমপি সদর দপ্তরের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ হুঁশিয়ারি দেন তিনি।থানায় থানায় গ্রেপ্তার বাণিজ্য চলছে- এ নিয়ে জানতে চাইলে বিপ্লব বলেন, গ্রেপ্তার বাণিজ্য অনেক পুরনো একটি শব্দ। ডিএমপি কমিশনার যেদিন থেকে ব্লক রেইডের নির্দেশ দিয়েছেন, সেদিন থেকেই গ্রেপ্তার বাণিজ্য শব্দের বিষয়ে সবাইকে সতর্ক করা হয়েছে। যদি এ ধরনের কোনো অভিযোগ আসে, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে দায়ী পুলিশ সদস্যকে শুধু প্রত্যাহার নয়, তার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ দেখা যাচ্ছে নিরস্ত্র মানুষকে পুলিশ গুলি করছে। এ নিয়ে পুলিশ বিব্রত কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএমপির এ যুগ্ম কমিশনার বলেন, প্রতিটি ঘটনার পূর্বাপর বিচার করতে হবে। আমাদের সদস্য যদি গুলি করে থাকেন, কোন প্রেক্ষাপটে গুলি করেছেন, তা পর্যালোচনা করা হবে। প্রতিটি মামলার সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করা হবে, যেন প্রশ্ন না ওঠে, পুলিশ মামলা নিয়ে পক্ষপাত করছে।  

তিনি বলেন, যখন একটি মামলা হয়, তখন কে কোন দলের, কে কোন মতের, কে পক্ষের, সেসব আমাদের কাছে বিচার্য বিষয় থাকে না। সাধারণ মানুষ যখন একটি এজাহার দায়ের করে, তখন পুলিশের হস্তক্ষেপের কোনো সুযোগ থাকে না। তাই এখানে কোনো দল-মত কিংবা পক্ষ-বিপক্ষ নেওয়ার সুযোগ নেই। মামলার সুষ্ঠু তদন্ত হবে এবং যে দোষী, তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

অভিযোগ আছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। এমন প্রশ্নের জবাবে বিপ্লব বলেন, ব্লক রেইড পরিচালনার ক্ষেত্রে কোনো সাধারণ মানুষ, সাধারণ শিক্ষার্থী এবং নিরপরাধ কাউকে ধরার বিন্দুমাত্র কোনো সুযোগ নেই। ডিএমপি কমিশনারের স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। ব্লক রেইডে ডিএমপির সিনিয়র অফিসারদের মোতায়েন করা হয়েছে, যেন ব্লক রেইডে কোনো ধরনের আইনের ব্যত্যয় না ঘটে, নিরপরাধ কেউ যেন বিন্দুমাত্র পুলিশের দ্বারা হয়রানির শিকার না হয়। এরপরও যদি কোনো ব্যত্যয় হয়, সঙ্গে সঙ্গে যথাযথ ব্যবস্থা নিই। তবে যে অপরাধী, তাকে ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।  

সাধারণ কোনো শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাংলাদেশ পুলিশ তথা ডিএমপির কোনো বিরোধ নেই জানিয়ে তিনি বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীরা আমাদের সন্তান সমতুল্য। সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিষয়ে পুলিশ অত্যন্ত সংবেদনশীল। পুলিশের টার্গেট যারা নাশকতাকারী, যারা মেট্রোরেল, সেতু ভবন, টোল প্লাজা ও বিভিন্ন জায়গায় গাড়ি পুড়িয়েছে। আমাদের শত্রু জামায়াত-শিবির চক্র এবং বিএনপির সন্ত্রাসীরা। তাদের ধরার জন্য ভিডিও ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে দেখে কাজ করছি।

তিনি বলেন, গত কয়েক দিনে ঢাকা শহরে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ও প্রাণহানির ঘটনায় ডিএমপির ৫০টি থানায় ২৬৪টি মামলা রুজু হয়েছে। আরও চার-পাঁচটি মামলা প্রক্রিয়াধীন। এসব মামলায় দুই হাজার ৮৫০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রিমান্ডে আনা হয়েছে অসংখ্য আসামিকে। রিমান্ডে থাকা আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে যেসব তথ্য পেয়েছি, সেসব তথ্য যাচাই-বাছাই করে দেখছি।  

২৬৪টি মামলার মধ্যে নিহতের ঘটনায় কোনো মামলা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঢাকায় বিভিন্ন থানায় ৫৩টি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে নিহতের পরিবার বাদী হয়েছে এবং কিছু মামলার বাদী পুলিশ।  

বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, এসব মামলার শতভাগ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত করা হবে। পুলিশ এখানে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করে তদন্ত করবে। এসব মামলা ডিএমপি কমিশনার নিজে তদন্ত তদারকি করবেন। সিনিয়র অফিসারদের এসব মামলা মনিটরিংয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যেকোনো হত্যাকাণ্ড অবশ্যই দুঃখজনক। পুলিশ কোনো মৃত্যু প্রত্যাশা করে না।  রাজধানীতে কিছু এলাকায় ব্লক রেইড কিছু এলাকায় টার্গেট অভিযান চলছে। অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।