ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২১ই নভেম্বর ২০২৪ , বাংলা - 

বিটিভিতে হামলার নেপথ্যে বিএনপি-জামাত

ষ্টাফ রিপোটার।।ঢাকাপ্রেস২৪.কম

2024-07-25, 12.00 AM
বিটিভিতে হামলার নেপথ্যে বিএনপি-জামাত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি চলাকালে বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) রামপুরা ভবনে ব্যাপক হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। বিএনপি, জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের অজ্ঞাতনামা তিন থেকে চার হাজার কর্মী দলবদ্ধ হয়ে এ হামলা চালায়। গত ১৮ জুলাই এ হামলার ঘটনায় পরদিন ১৯ জুলাই বিটিভির ঢাকা কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার মাহফুজা আক্তার বাদী হয়ে রামপুরা থানায় একটি মামলা করেন। সেই মামলার এজাহারেই হামলার নেপথ্যে বিএনপি-জামায়াতের পরিকল্পনা ও প্ররোচনার বিষয়টি উঠে আসে। মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, দলটির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুসহ অজ্ঞাতনামা আরও শীর্ষ নেতাদের পরিকল্পনা, প্ররোচনা ও অর্থ জোগানের মাধ্যমে এ ধরনের অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। এতে বিটিভির ৫০ কোটি টাকার সমপরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

 

মামলাটি দণ্ডবিধির ১৪৩/১৪৭/১৪৮/১৪৯/১৮৬/৩৫৩/৩৮৪/৪৩৬/৩০৭/১০৯/১১৪/৫০৬ ধারাসহ ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫(৩) ধারায় করা হয়। মামলার অভিযোগগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে।

 

আমীর খসরুসহ ২০ জনের সম্পৃক্ততার তথ্য পেয়েছে ডিবি

 

মামলার পর বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ ২০ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নেওয়া হয়। সবশেষ বুধবার (২৪ জুলাই) এ মামলায় আমীর খসরুকে তিনদিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়।আদালতে রিমান্ড আবেদনে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ ইয়াসিন শিকদার উল্লেখ করেন, গ্রেফতার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে এবং বিশ্বস্ত সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আসামিরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে জানা যায়। আসামিরা জামিনে পলাতক হলে চিরতরে পলাতক হবার সম্ভাবনা রয়েছে।এ মামলায় গ্রেফতার অন্য আসামিরা হলেন- বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুন রায় চৌধুরী, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সায়েদুল আলম বাবুল, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্যসচিব আমিনুল হক, বিএনপির এমএ সালাম, মাহমুদুস সালেহীন, আনোয়ারুল আজম অনু, বিল্লাল হোসেন, আব্দুল হক, রাহাত বিন হক, আজহারুল হক শাহীন, আকতার হোসেন, নূরুল হুদা, শাহাদাত হোসেন, ওবায়দুল হক, কাদির মিঝি, আব্দুর রশিদ খান ও রুহুল আমিন।

 

পুলিশ ও আনসার সদস্যদের বাধা উপেক্ষা করে বিটিভি ভবনে প্রবেশ

 

মামলার অভিযোগে বাদী মাহফুজা আক্তার আরও উল্লেখ করেন, গত ১৮ জুলাই বেলা সাড়ে ১১টার সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি চলাকালে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন লেখা সম্বলিত ব্যানার নিয়ে ডিআইটি রোডগামী রামপুরা ট্রাফিক পুলিশ বক্স ও বিটিভি ভবনের সামনের সড়কে অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে পুলিশ সদস্যরা তাদের বুঝিয়ে সেখান থেকে সরিয়ে দেন। এরপরই বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের নির্দেশ এবং সক্রিয় অংশগ্রহণে অজ্ঞাতনামা তিন-চার হাজার কর্মীরা বেআইনি জনতায় দলবদ্ধ হয়ে সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকে।আসামিরা দায়িত্বরত পুলিশ ও আনসার সদস্যদের বাধা উপেক্ষা করে অবৈধভাবে বিটিভি ভবনের প্রধান চারটি গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে এবং জনমনে ব্যাপক আতঙ্ক সৃষ্টির লক্ষ্যে ভবনের ভেতর ব্যাপক ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালায়। টেলিভিশন ভবনে কর্মরত বিভিন্ন কর্মকর্তাদের নাম ও পদবি উল্লেখ করে খোঁজাখুঁজি করে প্রাণনাশের হুমকি দিতে থাকে। একটি নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পরিকল্পিতভাবে অন্তর্ঘাতমূলক সন্ত্রাসী কার্যকলাপের মাধ্যমে ‘ক’ শ্রেণির কেপিআইভুক্ত বাংলাদেশ টেলিভিশনের ভেতরে থাকা সরকারি মালামাল ভাঙচুর ও ক্ষতিসাধন করে। যার ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ৫০ কোটি টাকা। একপর্যায়ে পুলিশ ও বিজিবি রাত ৯টার দিকে সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা লুটপাট, রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস ও হত্যার উদ্দেশে লাঠিসোটা ও অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অবৈধভাবে বিটিভি ভবনের ভেতরে প্রবেশ করেন। এরপর তারা ভবনটিতে আক্রমণ চালায় এবং ইট পাটকেল ও ককটেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। একই সঙ্গে চলে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ- বলা হয় অভিযোগে।সেখানে বাদী আরও বলেন, বিশ্বস্ত সূত্রের মাধ্যমে জানতে পারি যে, জামায়াত ও বিএনপির কতিপয় শীর্ষ পর্যায়ের নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী (৭০), সুলতান সালাউদ্দিন টুকু (৫৪), নিপুন রায় চৌধুরী (৩৮), এমএ সালাম (৫৬), কাজী সায়েদুল আলম বাবুল (৬২), মিয়া গোলাম পরওয়ার (৬৬), আমিনুল হক (৪৭) ও মাহমুদুস সালেহীনসহ (৩৭) অজ্ঞাতনামা আরও শীর্ষ নেতাদের পরিকল্পনা, প্ররোচনা ও অর্থ জোগানের মাধ্যমে এ ধরনের অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ড ঘটানো হয়েছে।

 

বিটিভির ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ

 

মামলার এজহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি সম্প্রচারকাজে নিয়োজিত পোর্টেবল ডিএসএনজি সিস্টেমের সব সম্প্রচার যন্ত্রপাতি এবং এসব যন্ত্রপাতি পরিবহন কাজে ব্যবহৃত মাইক্রোবাস, কেন্দ্রীয় শীতাতপ ব্যবস্থার প্রভূত ক্ষতিসাধন ও অগ্নিসংযোগ, ১৭টি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ৯টি গাড়ি ভাঙচুর, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ২১টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর, বিটিভির মূল ভবনের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট, ঢাকা কেন্দ্রের রিসিভশনে অগ্নিসংযোগ, ট্রান্সপোর্ট ভবনে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর, ক্যান্টিনে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট এবং ভাঙচুর, অডিটোরিয়ামে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর, মেকআপ শাখা ভাঙচুর, ডিজাইন শাখার মেকআপ (ওয়ার্কশপ, স্টোর, ওয়ারড্রব ও গ্রাফিক্স রুম) রুমে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট।

 

এছাড়াও বিটিভির প্রধান কার্যালয়ের প্রথম তলা থেকে ষষ্ঠ তলা পর্যন্ত লুটপাট ও ভাঙচুর চালানো হয়। এতে বৈদ্যুতিক সংযোগ, ক্যামেরা, ট্রাইপটসহ, প্রকৌশল যন্ত্রপাতি, অর্থ, ডিজাইন, প্রশাসন, অনুষ্ঠান শাখার বিভিন্ন আসবাবপত্রসহ কম্পিউটার সামগ্রী ও দাপ্তরিক নথি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একই সঙ্গে মনিটর ১০টি, স্মার্ট টিভি ৮টি, কম্পিউটার সিপিইউ ১৬টি, ইউপিএস ৩০০০ ভিএ তিনটি, ইউপিএস ১৭টি, আন্ডার ভেহিকল স্ক্যানার মেশিন একটি, ব্যাগেজ স্ক্যানার মেশিন একটি, আর্চওয়ে মেশিন তিনটি, ফিঙ্গার প্রিন্ট মেশিন চারটি, সিসি ক্যামেরা ৪০টি, পিওই সুইচ ১৫টি, মিডিয়া কনভার্টার ১৬ সেট, অপটিক্যাল ফাইবার ৩০০০ মিটার, ক্যাট-৬-ইন্টারনেট ক্যাবল ১৫ বক্স, নরমাল সুইচ ১০টি, সিলিং ফ্যান ৩০টি, স্ট্যান্ড ফ্যান ১০টি, এয়ার কন্ডিশনার পাঁচটি, এয়ার কার্টার আটটি, মূল গেট চারটি, পকেট গেট একটি, তালা ২০টি, প্রিন্টার তিনটি, স্ক্যানার একটি, কি-বোর্ড তিনটি ও ৫০টি ফায়ার এক্সটিংগুইসার ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

 

উপস্থাপন শাখা

 

হামলাকারীরা উপস্থাপন শাখার পাঁচটি কম্পিউটার, দুটি প্রিন্টার মেশিন এবং একটি ফটোকপি মেশিন ভেঙে ফেলে।

 

অর্থ ও হিসাব শাখা

 

এজহারে উল্লেখ করা হয়, হামলায় অর্থ ও হিসাব শাখার ব্যবহৃত চেক বিতরণ কক্ষগুলোসহ সব রুমের চেয়ার, টেবিল, দরজা-জানালা, গ্লাস টেবিল, আলসা হ্রম ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বিশেষত শিল্পী সম্মানী রুম ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

 

প্রকৌশল শাখা

 

মামলার এজহারে বাদী উল্লেখ করেন, হামলার সময় ক্যামেরা, ক্যামেরার লেন্স, ভিডিও সুইচার, অডিও মিক্সার ইত্যাদিতে আগুন দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি লাইভে ব্যবহৃত সম্প্রচার সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি আগুনে পুড়ে গেছে। ঢাকা কেন্দ্রের সেন্ট্রাল এসি শিল্ড ওয়াটার লাইন আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাঁচটি এএইচইউ, ২০টি এফসিইউ ইউনিট অচল হয়ে গেছে। এছাড়া প্রায় ৩০টি স্প্লিট এসি আগুনে পুড়ে নষ্ট হয়েছে। চিলারের পাঁচটি  পাম্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঢাকা কেন্দ্রের মূল হাউজ লাইটসহ স্টুডিও লাইটিংয়ের সোর্স ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ডিজাইন সংশ্লিষ্ট হাই ভল্টেজ ইলেকট্রিক্যাল লাইন, ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম আর্থ স্টেশন ইউপিএস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

 

তৃতীয় তলার প্রকৌশল স্টোরে সংরক্ষিত ক্যামেরা, ট্রাইপড, খুচরা যন্ত্রপাতি আগুনে পুড়ে গেছে। কম্পিউটার ওয়ার্ক স্টেশন ১০টি ও ১০০টি টিভি সেট নষ্ট হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডে ঢাকা কেন্দ্রের ডিজাইনশেডসহ ভবনের দক্ষিণ ব্লগের দেয়াল, পাশের দেয়াল, ছাদ স্টুডিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় অবস্থিত প্রশাসন ও হিসাব শাখার রুম, মূল ভবনে প্রবেশমুখের গেট, ডিজাইন, ক্যামেরা ও প্রকৌশল শাখার অফিসকক্ষ ও করিডোর, মেকআপরুম, টেলিফোন বোর্ড রুম, লিফট, ইএনজি শাখা, অডিটোরিয়াম ও অডিটোরিয়াম সংলগ্ন অফিস কক্ষসহ ইত্যাদি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মুজিব কর্নার ও মিউজিয়ামে রাখা অমূল্য অ্যান্টিক সামগ্রী, ক্যামেরা অন্যান্য জিনিস ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। দ্বিতীয় তলায় কম্পিউটার ল্যাব ও প্রশিক্ষণ যন্ত্রপাতি ভাঙচুর এবং অনেকগুলো কম্পিউটার ও ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী লুটপাট করা হয়।

 

যানবাহন শাখার ১১ রুম ভাঙচুর ও আসবাবপত্র লুট

 

মামলার এজহারে বলা হয়, বিটিভি ভবনের নিচ তলায় একটি স্টোর রুমে ভাংচুর ও লুটপাট, দ্বিতীয় তলায় চারটি স্টোর রুম, দুটি অফিস রুম এবং নিচতলার একটি অফিস রুমে অগ্নিসংযোগ করা হয়।

 

আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ির তালিকা

 

এজহারে উল্লেখ করা হয়, ঢাকা মেট্রো-খ-১১-৯৫৩০, ঢাকা মেট্রো-গ-২৮-৭৫৬৪, ঢাকা মেট্রো-ঘ-১১-৩৯৮২, ঢাকা মেট্রো-ট-৫১- ০২৩৫, ঢাকা মেট্রো-৮-৫৩-৭৮৬৩, ঢাকা মেট্রো-চ-৫৩-৬৬২৫, ঢাকা মেট্রো-দ-১২-০০০১, ঢাকা মেট্রো-দ- ১২-০০০২, ঢাকা মেট্রো-দ-১২-০০০৩, ঢাকা মেট্রো-হ-২৪-৭৬৬৩, ঢাকা মেট্রো-৪৬২২, ঢাকা মেট্রো-চ-৫২- ৪১৫৭, ঢাকা মেট্রো-ঘ-১১-২৯৫০, ঢাকা মেট্রো-ঘ-১১-১৮০৪, ঢাকা মেট্রো-ঠ-১৩-৫৭৯৩, ঢাকা মেট্রো-ব-১৩- ৬২৭৭, চট্ট মেট্রো-৬-৫১৬।

 

ভাঙচুর করা গাড়ির তালিকা

 

এজহারে বাদী আরও উল্লেখ করেন, ঢাকা মেট্রো-ঘ-১১-০৩২৪, ঢাকা মেট্রো-ঠ-১৫-০০৩০, ঢাকা মেট্রো-ঝ-০৫-০০০২, ঢাকা মেট্রো-স-১১-০২৭৪, ঢাকা মেট্রো-স-১১-০২৭৫, ঢাকা মেট্রো-উ-৪৮৩, ঢাকা মেট্রো-চ-৫৬-৩৬৪১, ঢাকা মেট্রো-চ-৫৩-৩৯৩৪ ও ঢাকা মেট্রো-চ-৫৩-৭৭১২।গত ১৮ জুলাই দিনগত রাত ১২টা থেকে পর দিন ১৯ জুলাই দুপুর আনুমানিক ১২টার মধ্যে ফায়ার সার্ভিসের মাধ্যমে বিটিভি ভবনের আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। ভবনের অভ্যন্তরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে ককটেল, পেট্রোল বোমাসহ অবিস্ফোরিত বিস্ফোরক জাতীয় দাহ্য পদার্থ, প্রচুর ধোঁয়া, প্রচণ্ড তাপ এবং বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত রুমগুলোতে প্রবেশ করে ওইদিন ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি। ফলে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগে ক্ষতিগ্রস্ত বিভিন্ন শাখার সম্পদসহ অন্যান্য ক্ষয়ক্ষতির হিসাব (অসম্পূর্ণ) ও ক্ষতিগ্রস্ত গাড়িগুলোর তালিকা করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে কিছুটা দেরিতে থানায় এজাহার দায়ের করা হলো।বিএনপিপন্থি আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ বলেন, বিটিভি ভবনে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় করা মামলার এজাহার বিশ্লেষণ করে দেখছি, বিএনপি নেতাকর্মীদের নাম দিতেই মামলাটি করা হয়েছে। মামলার এজহারে বলা হয়েছে, আসামিদের নাম গোপন সূত্রে জানতে পেরেছি। কিন্তু গোপন সূত্র কীভাবে জানতে পারলো তার কোনো ভিডিও ফুটেজ বা ভয়েস রেকর্ড নেই।

‘আগে যেমন বিভিন্ন সময় মামলাগুলো করা হয়েছে, ঠিক এখনো সেভাবেই মামলা করা হচ্ছে। বিরোধীদলকে দমনের জন্যই এ মামলা। কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়াই আসামিদের গ্রেফতার করা হয়েছে’- বলেন তিনি।এদিকে রাষ্ট্রপক্ষ বলছেন, আসামিদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সত্য। আসামিরা রাষ্ট্রের ক্ষতিসাধন করার জন্য বিটিভি ভবনে হামলা চালিয়েছে। এতে রাষ্ট্রের অনেক ক্ষতি হয়েছে।