ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২১ই নভেম্বর ২০২৪ , বাংলা - 

চীনের মধ্যস্থতায় হামাস-ফাতাহ’র পুনর্মিলন

আর্ন্তজাতিক রিপোটার।।ঢাকাপ্রেস২৪.কম

2024-07-24, 12.00 AM
চীনের মধ্যস্থতায় হামাস-ফাতাহ’র পুনর্মিলন

যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর গাজার উপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে ‘জাতীয় ঐক্যের সরকার’ গঠনের চুক্তিতে সই করেছে ফিলিস্তিনের দুই প্রধান রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস ও ফাতাহ। মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) চীনের মধ্যস্থতায় বেইজিংয়ে গোষ্ঠী দুটির নেতারা এই চুক্তিতে সই করেন।চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেছেন, তিন দিনের নিবিড় আলোচনার পর মঙ্গলবার চীনে চূড়ান্ত হওয়া এই চুক্তিটি গাজাকে শাসন করার জন্য একটি ‘অন্তর্র্বতীকালীন জাতীয় ঐক্যের সরকার’ গঠনে ভূমিকা রাখবে। চুক্তিটি দীর্ঘমেয়াদী প্রতিদ্বন্দ্বী হামাস, ফাতাহ ও অন্যান্য ১২ফিলিস্তিনি গ্রুপ দ্বারা সই হয়েছে।বেইজিংয়ে সংবাদ সম্মেলনে হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মুসা আবু মারজুক বলেন, আজ আমরা জাতীয় ঐক্যের জন্য একটি চুক্তি সই করেছি। ঐক্য গঠন করে এই যাত্রাতে পূর্ণতা দেওয়া হবে। চুক্তিতে সই করা ১৪টি উপদলের মধ্যে একটি প্যালেস্টাইন ন্যাশনাল ইনিশিয়েটিভের মহাসচিব মুস্তাফা বারঘৌতি আল জাজিরাকে বলেছেন, চুক্তিটি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উপনীত হওয়া অন্য যে কোনো চুক্তির তুলনায় ভালো ও সুদুরপ্রসারী।এই নেতা আরও বলেন, এই চুক্তির প্রধান চারটি উপাদান হলো- একটি অন্তর্র্বতী জাতীয় ঐক্যের সরকার প্রতিষ্ঠা, ঐক্যবদ্ধ ফিলিস্তিনি নেতৃত্ব তৈরি, প্যালেস্টিনিয়ান ন্যাশনাল কাউন্সিল নির্বাচন ও চলমান ইসরাইলি আগ্রাসনের মোকাবিলায় একটি ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের ডাক।

মুস্তাফা বারঘৌতির মতে, ঐক্য সরকারের দিকে অগ্রসর হওয়া ফিলিস্তিনের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি ফিলিস্তিনি স্বার্থের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যে কোনো ষড়যন্ত্রমূলক প্রচেষ্টাকে বাধা দেবে।

অনেকের মতে, হামাস-ফাতাহ’র পুনর্মিলন ফিলিস্তিনের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হতে চলেছে। ২০০৬ সালের জাতীয় নির্বাচনে জয়লাভ করেছিল হামাস। তবে ২০০৭ সালে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এর পরপরই মূলত তারা একে অপরের তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে ওঠে।একপর্যায়ে হামাসের নেতৃত্বে গঠিত ঐক্য সরকার ভেঙে দেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট ও ফাতাহ নেতা মাহমুদ আব্বাস। এরপর গাজা থেকে ফাতাহকে সরিয়ে উপত্যকার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয় হামাস। আর অধিকৃত পশ্চিম তীরের কিছু অংশ নিয়ন্ত্রণে নেয় ফাতাহ নেতৃত্বাধীন ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ (পিএ)।

ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া

হামাস-ফাতাহ’র মধ্যে হওয়া ‍এই চুক্তির কঠোর সমালোচনা করেছে ইসরায়েল। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেছেন, হামাসের সঙ্গে সমোঝতায় গিয়ে সন্ত্রাসীদের প্রত্যাখান করার পরিবর্তে, তাদের সঙ্গেই হাত মিলিয়েছেন।ইসরায়েলি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘খুনিদের’ সঙ্গে হাত মিলিয়ে মাহমুদ আব্বাস নিজের আসল চেহারা প্রকাশ করেছেন। তবে আমরা পরিষ্কার করে বলে দিতে চাই, যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ইসরায়েল ছাড়া আর কেউ-ই গাজা নিয়ন্ত্রণ করবে না।গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ঢুকে হামলা চালান হামাসের প্রতিরোধ যোদ্ধারা। সেদিন রাত থেকেই গাজায় আগ্রাসন শুরু করে ইসরায়েল, যা এখনো চলছে। ইসরায়েলের এই বর্বরোচিত হামলায় ৩৯ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।

সূত্র: আল জাজিরা