সরকারের আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, ‘লাশের ওপর দাঁড়িয়ে আলোচনায় বসব না’।বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) দুপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কয়েকজন সমন্বয়ক সংবাদমাধ্যমকে এবং নিজেদের ফেসবুক পোস্টে এ কথা বলেন।আন্দোলনকারীরা বলছেন, আলোচনা তো আগেও হতে পারত। আলোচনা আর গোলাগুলি একসঙ্গে হয় না। লাশের ওপর দিয়ে তো আলোচনায় যাওয়া যায় না।বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আমরা কিছু দাবি জানাব। সেই দাবিগুলো পূরণ সাপেক্ষে আলোচনা হতে পারে। সেই দাবিগুলোর বিষয়ে আমাদের আলোচনা চলছে। দাবিগুলো পূর্ণাঙ্গভাবে লিখে আমরা লিখিত আকারে জানাব, যাতে করে ভুলভাবে আমাদের দাবি উত্থাপিত না হয়।বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ তার ফেসবুকে পোস্ট করেছেন, গুলির সাথে কোনো সংলাপ হয় না। এই রক্তের সাথে বেইমানি করার থেকে আমার মৃত্যু শ্রেয়! উমামা ফাতেমা নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আন্দোলনকারী সমাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন, “আমি উমামা ফাতেমা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ২৩ সদস্যবিশিষ্ট সমন্বয়ক কমিটির একজন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। একটু আগে দেখলাম কোটা আন্দোলনকারীদের সাথে সরকার আলোচনায় বসার কথা বলছে।
১২টা লাশের উপর দাঁড়ায়ে কিসের আলোচনা? খুনিদের সাথে কোনো সংলাপ হবে না। খুনিদের সাথে কোনো আপস হবে না। ”
বৃহস্পতিবার আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছেন, শিক্ষার্থীদের প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকার কোটা সংস্কারের পক্ষে আছে। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের বিষয়ে সরকার একমত।
তিনি বলেন, আমরা জানতে পেরেছি যারা কোটাবিরোধী আন্দোলন করছেন, তারা বলেছেন আন্দোলনের পাশাপাশি তারা আলাপ-আলোচনা করতেও আগ্রহী। আমরা তাদের এই আলাপ-আলোচনার প্রস্তাবকে স্বাগত জানাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাদের এই প্রস্তাবকে অভিনন্দন জানিয়েছেন এবং তাদের এই প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে (আইনমন্ত্রী) ও শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীকে দায়িত্ব দিয়েছেন। আমরা তাদের সঙ্গে বসবো। তারা যদি আজকে বসতে চান, আমরা আজকেই বসতে রাজি আছি।
আইনমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাকে ঘোষণা দিতে বলেছেন যে, কোটা সংস্কার নিয়ে ৭ আগস্ট যে মামলার শুনানিটা ছিল, সেই শুনানিটা এগিয়ে আনার জন্য ব্যবস্থা নিতে। আমি সেই মর্মে বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেলকে নির্দেশ দিয়েছি, তিনি বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতে আপিল বিভাগে আবেদন করবেন, যাতে মামলার শুনানির তারিখ তারা এগিয়ে আনেন।
কোটা সংস্কারসহ কয়েকটি ইস্যুতে আজ সারা দেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ পালক করেছেন শিক্ষার্থীরা। এতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। বিকেল ৪টা পর্যন্ত ৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।