ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২১ই নভেম্বর ২০২৪ , বাংলা - 

সেনাসদস্য পরিচয়ে ৫বিয়ে,অবশেষে আটক

এস এম মনিরুল ইসলাম,সাভার:

2024-07-01, 12.00 AM
সেনাসদস্য পরিচয়ে ৫বিয়ে,অবশেষে আটক

সেনাবাহিনীর পোশাক পড়ে ছবি দেখালে পরিবার মেয়েকে বিয়ে দিতে রাজি হয়, তাই একের পর এক বিয়ে করে চলেছেন কুষ্টিয়ার হাসিবুল ইসলাম তারেক! সহজে মেয়ের পরিবারকে রাজি করাতে পরিচয় দেন সেনাবাহিনীর সদস্য হিসেবে। পরিচয় প্রমাণ করতে সেনাবাহিনীর পোশাক পরা ছবিও দেখান। এজন্য সেনাবাহিনীর পরিচয়পত্রও বানিয়ে নিয়েছেন। পাপে ছাড়ে না বাপেরে! একের পর এক বিয়ের পিরিতে বসতে না বসতেই আশুলিয়ায় নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে বিয়ের নাটক সাজিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তারের পর বেরিয়ে আসে এসব তথ্য। রোববার সকালে আশুলিয়া থানা থেকে তারেককে ঢাকার আদালতে পাঠানো হয়। এর আগে গতকাল শনিবার বিকেলে ভুক্তভোগী ছাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে আশুলিয়ার ডেন্ডাবর নতুনপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযুক্ত হাসিবুল ইসলাম তারেক (২৩) কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী থানার দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা। এ পর্যন্ত ৫টি বিয়ের প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে। তবে এ কাজে বাবা–মাও তারেককে সহায়তা করেন বলেও জানা যায়। এ ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে তাঁর বাবা আশরাফ আলী (৫০) ও মা হাসিনা বেগমকেও (৪২) আসামি করেছেন ভুক্তভোগী ওই কিশোরী। 

ভুক্তভোগী ওই কিশোরী (১৫) আশুলিয়ার ডেন্ডাবর নতুন পাড়া এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় পরিবারের সঙ্গে বসবাস করে। সে স্থানীয় একটি বেসরকারি স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। 

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, সেনাবাহিনীর সদস্য পরিচয়ে সেই শিক্ষার্থীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন তারেক। পরে বিয়ের নাটক সাজিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ধর্ষণ করে আসছিলেন। মেয়ের পরিবারের সন্দেহ হলে খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারে, তারেক সেনাবাহিনীর কেউ নন। পরে এ ঘটনায় আশুলিয়া থানায় মামলা করে ভুক্তভোগী। 

ভুক্তভোগীর পরিবার জানিয়েছে, তারা খোঁজ নিয়ে জেনেছেন তারেক এ পর্যন্ত ৫টি বিয়ে করেছেন। এর মধ্যে দুটি ডিভোর্স হয়েছে, বাকি তিন স্ত্রী এখনো আছেন। 

গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারেক একাধিক বিয়ের কথা স্বীকার করেছে। তারেক সাংবাদিকদের বলেন, সেনাবাহিনীর পোশাক পরে ছবি দেখালে পরিবার আকৃষ্ট হয়ে মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার জন্য রাজি হয়। কেন একের পর এক বিয়ে করে আসছিলেন, সাংবাদিকরা জানতে চাইলে তারেক বলেন, ‘মেয়েদের সাথে থাকতে ভালো লাগে!’ 

তারেকের গ্রামের বাড়ি বাগুলাট ইউনিয়নের স্থানীয় ওয়ার্ড সদস্য (মেম্বার) মো. আবু সারেক বলেন, তারেকের বাড়ি আমার বাড়ির পাশেই। ছেলেটা একটু ফটকা টাইপের। বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে একাধিক বিয়ে করে। তার বাড়িতে এক বউ আছে, সেখানে দুই সন্তান আছে। গাজীপুরে একটি বিয়ে করেছে, সেখানেও একটি সন্তান আছে। এখন তিনটি বিয়ে রানিং আছে বলেও জানান ওই ইউপি সদস্য। তিনি আরও জানান, ছেলের বাবা–মাও একাধিক বিয়েতে উপস্থিত ছিল। আমরা জানি, তারেক কোন এগ্রো ফার্ম বা গরুর ফার্মে চাকরি করে।’ আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএফএম সায়েদ বলেন, সেনাসদস্য পরিচয় দিয়েই এই অপরাধ করে আসছিলেন তারেক। তাকে ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।