পাবনার ঈশ^রদীতে দিনের পর দিন ব্যাঙের ছাতার মতো বেড়েই চলেছে বৈধ-অবৈধ ক্লিনিক বেসরকারিহাসপাতাল আর ডায়াগনস্টিক সেন্টার। এতে মানহীন চিকিৎসা ব্যবস্থার কারণে ক্লিনিক ও বেসরকারি হাসপাতালনিয়ে মানুষের মাঝে অসস্তোষ বাড়ছে রোগী মৃত্যুর মতোঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। আবারো ঈশ্বরদীতে প্রসবকালে নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। বিষয়টি এমন হয়েদাড়িয়েছে যে ক্লিনিক আর ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলো পার করেই ডুকতে হয় ঈশ^রদী সদর হাসপাতালে। সদর হাসপাতালের আশেপাশে গড়ে উঠেছে স্বাস্থ্যসেবার নামেঅসংখ্য বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক
সেন্টার। মূলত ভবন ও ফ্ল্যাটবাড়ি ভাড়া করে তৈরি করা হচ্ছে বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার । সেখানে
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের ব্যানার-সাইনবোড ঝুলিয়ে চিকিৎসা সেবার নামে দেওয়া হয় একগাদা টেস্ট। এতে চিকিৎসা করাতে
গিয়ে রোগী এবং তাদের স্বজনরা হয়রানির পাশাপাশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। দালালনির্ভর বেশির ভাগ ক্লিনিক ও
ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নেই মানসম্মত চিকিৎসাব্যবস্থা। সম্পতি জমজম স্পেশালইড হাসপাতালে ঝাড়–দার দিয়ে নরমাল
ডেলিভারি ( সন্তান প্রসব) করাতে গিয়ে আবারও এক নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় মৃত নবজাতকের পিতা সাইদুর রহমান বাদী হয়ে ঈশ্বরদী থানায়
একটি এজাহার দায়ের করেছেন। এর আগে চলতি বছরের গত মার্চ মাসে এই হাসপাতালে নরমাল ডেলিভারির সময় আরও দুই
নবজাতকের মৃত্যু হয়, একই হাসপাতালে পরপর তিন নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন এলাকাবাসী।
অভিযোগকারী সাইদুর রহমান লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, আমার গর্ভবতী স্ত্রীকে গত ৬ জুন জমজম হাসপাতালে এনে
ডা. নাফিসা কবীরকে দেখানো হয়। তিনি ইসিজি, আলট্রাসনোগ্রামসহ প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করে জানান সব
স্বাভাবিক আছে। শুক্রবার আমার স্ত্রী জিমুর প্রসব বেদনা শুরু হলে রাত ১টার দিকে জমজম হাসপাতালে ভর্তি করি। ডা. নাফিসা আবারও প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষা করেন এবং বলেন সব স্বাভাবিক আছে ২ ঘণ্টার মধ্যে স্বাভাবিক ডেলিভারির
সম্ভাবনা আছে, এরপর তিনি বাড়ি চলে যায়। রাত ৩টার দিকে প্রসূতির তীব্র ব্যথা শুরু হলে তাকে ডেলিভারির জন্য অপারেশন
থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় ডা. নাফিসা হাসপাতালে ছিলেন না। নার্স ও আয়াদের দিয়ে ডেলিভারি করানো হয়।
কিছুক্ষণ পর আমাকে বলা হয় মৃত সন্তান হয়েছে। পরে ডা. নাফিসা কবীর হাসপাতালে এসে একই কথা বলেন। সাইদুর রহমান বাদী হয়ে ওই হাসপাতালের মালিক ডা. নাফিসা কবির,
নার্স বা আয়া পারুল খাতুন, সাথী ও রাসেলের নাম উল্লেখ করে
ঈশ্বরদী থানায় অভিযোগটি দায়ের করেন।
ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রফিকুল ইসলাম ঘটনার
সত্যতা স্বীকার করে বলেন, অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে
আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের
স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মালেকুল
আফতাব বলেন, এ খবর পাওয়ার পর পরই সরেজমিনে ঘটনাস্থল
পরির্দশন করেছি। সেখান থেকে এসে হাসপাতালের তিনজন
চিকিৎসকের সমন্বয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তদন্ত
রিপোর্ট পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।