সাভারে অটোরিকশা চালককে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে পা ভেঙ্গে ফেলার অভিযোগ উঠেছে ঢাকা জেলা ট্রাফিক বিভাগের এক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সেই রেকার চালক মো. সোহেল রানাকে ক্লোসড করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অবস ও ট্রাফিক) আব্দুল্লাহিল কাফি এ প্রতিবেদককে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে সাভারের গেন্ডায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে রিকশাচালককে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করে ওই পুলিশ সদস্য। আহত রিকশাচালক মো. ফজলুল হককে উদ্ধার করে প্রথমে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে সাভার বাসস্ট্যান্ডের পাশে বেসরকারি সুপার মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহত রিকশাচালক ফজলুল হক এ প্রতিবেদককে বলেন, "আমি সকাল ৭ টার দিকে পাকিজার সামনে থেকে এক যাত্রীকে নিয়ে গেন্ডার উদ্দেশ্যে রওনা দেই। এসময় মোটরসাইকেল নিয়ে র্যাকারচালক সোহেলসহ দুইজন ধাওয়া করে আমার অটোরিক্সাটি আটক করেই কোন কিছু না বলেই আমার উপর পুলিশ সদস্য সোহেল লোহার রড দিয়ে হামলা করে দুই পা ভেঙে দেয়। এরপর আমি রাস্তায় পড়ে যাই, আর উঠে দাঁড়াতে পারি না"। পুলিশের এমন অমানবিক নির্যাতনের দৃশ্য দেখে স্থানীয়রা এসে ওই পুলিশকে ঘিরে ধরে। তখন অভিযুক্ত সোহেল সবার উদ্দেশ্য বলেন, "আমি ভুল করেছি, এখন রিকশাচালককে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করাতে হবে। পরে স্থানীয়রা চলে যায়। কিন্তু আমাকে অপর একটি রিকশায় তুলে দিয়ে সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলে সোহেল পেছন থেকে পালিয়ে যান। পরে ওই রিকশাচালক নিজেই আমাকে সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান।
আহত ফজলুল হক আরও বলেন,আমার কথা হলো আমার রিকশা নিয়ে যাবে, কিন্তু আমার পা ভেঙে দিল কেন? আমার বোনজামাই সরকারি মেডিকেল থেকে সুপার মেডিকেলে নেওয়ার এক থেকে দেড় ঘন্টা পর রেকার ইনচার্জ মোস্তফা এসে আমাকে এক্সরা করাতে বলে। এর কিছুক্ষণ পরে সাদা কাগজ ও কলম নিয়ে এসে আমাকে আর আমার পরিবারকে স্বাক্ষর দিতে চাপসৃষ্টি করেছে বলেও জানান ওই ভুক্তভোগী।
এ ঘটনা শুনে সাভার থানাস্ট্যান্ড মুক্তির মোড় এলাকায় সাভার প্রেসক্লাবের সামনে অন্য রিকশাচালকরা রেকার চালক সোহেলের বিচারের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। রিকশাচালক রুবেল বলেন, 'আহত ফজলুল হককে নিয়ে সরকারি হাসপাতালে যাওয়ার সময় রেকার চালকের দুই দালাল আমাদের গতিরোধ করেন। পরে অন্যান্য রিকশাচালকরা বিষয়টি জানতে পেরে প্রেসক্লাবের সামনে থানা রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। খবর পেয়ে পুলিশ তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়।'
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহিল কাফি বলেন, 'রিকশাচালককে মারধরের অভিযোগ ওঠার পরপরই রেকার চালককে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। তদন্ত করে দোষী প্রমাণিত হলে তাকে সাসপেন্ড করা হবে।'