সব বাধা অতিক্রম করে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে টানা চারবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার লক্ষ্য দেশকে এগিয়ে নেওয়া। শুক্রবার (১৭ মে) রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (আইইবি) মিলনায়তনে বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির ২২তম দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, উত্থান-পতন, চড়াই–উতরাই থাকবেই। কেউ হতাশ হবেন না। আমি অনেক বাধা অতিক্রম করে এসেছি। গুলি, বোমা সবকিছু হজম করেছি। আমার লক্ষ্য এ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। যত বাধা-ই আসুক, সে বাধা বাধা নয়। আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব। জাতির পিতা বলেছেন, ‘কেউ দাবায়ে রাখতে পারবা না। ’ আসলেই কেউ দাবায়ে রাখতে পারেনি, পারবেও না।দেশকে এগিয়ে নিতে অর্থনীতিবিদদের সহযোগিতা চেয়ে সরকারপ্রধান বলেন, দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে আপনাদের পরিকল্পনা বা নীতিমালা করুন। কেউ এসে পরামর্শ দিয়ে যাবে, শুনতে হবে, তা নয়। হ্যাঁ, বাইরে থেকে (বিদেশিদের কাছ থেকে) আমরা শিখব। তবে কাজ করার সময় আমাদের দেশের মানুষের প্রয়োজন দেখব। আমাদের যতটুকু সম্পদ আছে, তা দিয়েই কাজ করব। জাতির পিতার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করাই আমার লক্ষ্য, সেখানে আপনাদের (অর্থনীতিবিদ) সহযোগিতা চাই।
দেশের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করতে ব্যবসায়ীদের ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করুন। আমরা সবসময় আপনাদের (ব্যবসায়ীদের) পাশে আছি। ব্যবসায়ীদের উদ্ভাবনী ধারণা কাজে লাগিয়ে রপ্তানি বাড়াতে নতুন বাজার ও পণ্য খুঁজে বের করতে হবে। এ জন্য সরকার সর্বদা তাদের পাশে থাকবে।
আওয়ামী লীগ কখনো কোনো ব্যবসায়ীকে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা দেখে বিচার করে না জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ব্যবসায়ীদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমরা সব সময় দেশের মানুষের কল্যাণের কথা ভাবি। আজকের বাংলাদেশ পরিবর্তিত বাংলাদেশ। এ বাংলাদেশকে আরও টেনে নিয়ে যেতে হবে এবং এ দায়িত্ব আপনাদের (ব্যবসায়ীদের) নিতে হবে।
তিনি বলেন, শিক্ষা, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটলে মানুষের আর্থিক অবস্থা ভালো হবে। এ লক্ষ্যে সরকার ইতোমধ্যে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়েছে এবং বাকি প্রতিবন্ধকতাগুলোও শিগগিরই সমাধান করা হবে।
এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা আরও বলেন, অন্তত বলতে পারি যে আমি ‘হাওয়া ভবন’-এর মতো কোনো ‘খাওয়া ভবন’ করিনি, যা ব্যবসার জন্য অসুবিধা তৈরি করবে। সরকার ব্যবসায়ীদের সবসময় সহযোগিতা করবে। আমরা চাই, ব্যবসায়ীরা ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে এগিয়ে আসুক।
আগামী ৬ জুন বাজেট পেশ করা হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ৬ তারিখে বাজেট দেব। বাজেট আমরা ঠিকমতো দিতে পারব, বাস্তবায়নও করব। দেশি-বিদেশি নানা কারণে জিডিপি কিছুটা হয়তো কমবে, তা পরে উত্তরণ করতে পারব, সে আত্মবিশ্বাসও আছে।
গ্রামের অর্থনীতি বদলে গেছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, গ্রামের অর্থনীতি পাল্টে গেছে। যারা একবেলা ভাত খেতে পারত না, চারবেলা খায়। হাটবারের বাইরে কিছু পাওয়া যেত না, এখন সুপার মার্কেট হয়েছে।
তিনি বলেন, আমাদের গ্রামের বাজার পাটগাতি থেকে ঈদের আগে ২০০ ফ্রিজ বিক্রি হয়েছে। গ্রামীণ অর্থনীতি যত বেশি মজবুত হচ্ছে, শিল্প কলকারখানা বাড়ছে। অর্থনীতি সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবুল বারকাতের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সমিতির সাধারণ সম্পাদক আইনুল ইসলাম ও সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক ড. জামাল উদ্দিন আহমদ।