আর্লিং হালান্ডের জোড়া গোলে মঙ্গলবার টটেনহ্যাম হটস্পারকে ২-০ ব্যবধানে পরাজিত করে ইংলিশ লিগ ইতিহাসে প্রথম দল হিসেবে টানা চতুর্থ শিরোপা জয়ের পথে অনেকটাই এগিয়ে গেছে ম্যানচেস্টার সিটি। নরওয়েজিয়ান এই ফরোয়ার্ড কেভিন ডি ব্রুইনার নিখুঁত ক্রস থেকে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে সিটিকে এগিয়ে দেন। শেষ মুহূর্তে পেনাল্টি থেকে সিটির তিন পয়েন্ট নিশ্চিত করেছেন হালান্ড। এর মিনিটখানেক আগে সিটির বদলী গোলরক্ষক স্টিফান ওরটেগা প্রতিপক্ষ সন হেয়াং-মিনের একটি শট দুর্দান্ত দক্ষতায় রুখে না দিলে তখনই হয়তো সমতায় ফিলতে পারতো স্পার্সরা। এই হয়ে পেপ গার্দিওলার দল ৩৭ ম্যাচ পর আর্সেনালের থেকে দুই পয়েন্টে এগিয়ে টেবিলের শীর্ষে অবস্থান করছে। আগামী রোববার ইত্তিহাদ স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট হ্যামের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে জয়ী হতে পারলেই টানা চতুর্থ শিরোপা জয় নিশ্চিত হবে। তবে অন্য ম্যাচে এভারটনের বিপক্ষে গানার্সরা যদি শেষ ম্যাচে জয়ী হতে না পারে তাহলেও সিটির শিরোপা নিশ্চিত হবে।
ইংলিশ শীর্ষ লিগে কোন দলই টানা চারবার শিরোপা জয় করতে পারেনি।
এদিকে টটেনহ্যামের পরাজয়ে এ্যাস্টন ভিলার চতুর্থ স্থানে থেকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলা নিশ্চিত হয়েছে। আগামী মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগ থেকে সিটি, আর্সেনাল ও লিভারপুলের সাথে ভিলাও সরাসরি ইউরোপের সর্বোচ্চ ক্লাব আসরে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে।
ম্যাচ শেষে গার্দিওলা বিবিসিকে বলেছেন, ‘শেষ ম্যাচের ভাগ্য এখন আমাদের উপর নির্ভর করছে। সবকিছুর পরও বলতে হয় শেষ ম্যাচটিই এবারের লিগের সবচেয়ে কঠিন ম্যাচ। ২০২২ সালে এ্যাস্টন ভিলার বিপক্ষেও আমাদের এমনই হয়েছিল। এছাড়া অনেক বছর আগে কিউপিআর এর বিপক্ষে ৯৩ মিনিট ২০ সেকেন্ডে সার্জিও এগুয়েরোর গোলে আমাদের জয় নিশ্চিত হয়েছিল। ঐ ম্যাচগুলো এখনো স্মরণীয় হয়ে আছে।’
এবারও শিরোপা জয়ের মিশনে গার্দিওলা সিটির সমর্থকদের সহযোগিতা কামনা করেছেন, ‘আমরা জানি কি জন্য আমরা খেলতে নামি। টেনশন থাকবেই, প্রতিপক্ষ ভাল দল। এ কারনেই ম্যাচটি কঠিন, আমরা সবাই সেটা জানি। সবাই যেন স্টেডিয়ামে এসে আমাদের সমর্থন করে। ম্যাচটি কঠিন হলেও তোমরাই সেটা সহজ করে দিতে পারবে। আর একটি মাত্র দিন, যার আগে দুই দিনের প্রস্তুতির সুযোগ রয়েছে। আমরা নিজেদের সেরাটা দিতে প্রস্তুত।’
কাল স্পার্স সমর্থকরা ঘরের মাঠে অন্তত সিটিকে পরাজয়ের আশা নিয়েই মাঠে এসেছিল। প্রথম সুযোগটি তারাই পেয়েছিল। রডরিগো বেনটানকারের শট রুখে দেন সিটি গোলরক্ষক এডারসন। পোস্টের খুব কাছে থেকে ফিল ফোডেনকে সফল হতে দেননি স্পার্স গোলরক্ষক গুগলিয়েমো ভিকারিও।
২১ লিগ ম্যাচে অপরাজিত থাকা সিটি প্রথমার্ধে নিজেদের সেরা ফর্মের থেকে কিছুটা হলেও পিছিয়ে ছিল। ডি ব্রুইনার একটি শট ডাইভ দিয়ে রক্ষা করেন ভিকারিও। কিন্তু ৫১ মিনিটে আর শেষ রক্ষা হয়নি। বার্নার্ডো সিলভার পাস থেকে ডি ব্রুইনার ক্রসে হালান্ড দারুন ফিনিশিংয়ে সিটিকে এগিয়ে দেন। এ সময় হাজারো স্পার্স সমর্থক চিৎকার করে বলে উঠে, ‘আর্সেনাল তোমরা কি দেখছো।’
৬৯ মিনিটে ডি ব্রুইনা পেশীর ইনজুরিতে ও ক্রিস্টিয়ান রোমেরোকে আটকাতে গিয়ে এডারসন মাথায় আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়েন। এডারসনের পরিবর্তে মাঠে নামা জার্মান গোলরক্ষক ওরটেগা মাঠে নেমেই বদলী খেলোয়াড় ডিয়ান কুলুসেভিস্কির শট রুখে দেন। ম্যাচ শেষের পাঁচ মিনিট আগে সনের শট পা দিয়ে কোনমতে রুখে দেন ওরটেগা। ইনজুরি টাইমে পেড্রো পোরোর বিপক্ষে পেনাল্টি আদায় করে নেন বদলী খেলোয়াড় জেরেমি ডকু। স্পট কিক থেকে ৯১ মিনিটে হালান্ড দলের জয় নিশ্চিত করেন। এনিয়ে এবারের লিগে ২৭ গোল করলেন হালান্ড।
গত বছরের ট্রেবল জয়ী সিটি রোববার মৌসুমের শেষ ম্যাচের জন্য প্রস্তুতি শুরু করবে। ঐ ম্যাচের পুরো ৯০ মিনিট তাদের মাথায় শুধু একটি চিন্তাই থাকবে, আরো একটি দারুন ইতিহাসের সাক্ষ্মী হয়ে সবাইকে পিছনে ফেলা।