মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকারের সহিংসতার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিবে জাতিসংঘ। এরইমধ্যে প্রমাণ সংগ্রহ ও তদন্ত শুরু করেছে সংস্থাটি। এদিকে বিক্ষোভ দমাতে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দিয়েছে সেনাবাহিনী। ছয় সপ্তাহ ধরে চলা সেনা বিরোধী বিক্ষোভে মৃতের সংখ্যা ২'শ ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এপি। মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে প্রমাণ সংগ্রহ করছে জাতিসংঘের তদন্তকারী দল। সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে দেশটির সামরিক কর্মকর্তাদের নানা অপরাধের তথ্য-প্রমাণ নথিভূক্ত করছে দলটি।
শীঘ্রই জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নাগরিকদেরও প্রমাণ সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করতে অনুরোধ জানিয়েছে জাতিসংঘের তদন্তকারী দল।
অভ্যুত্থানবিরোধী প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধের জন্য আহ্বান জানিয়েছে দেশটির প্রভাবশালী বৌদ্ধ ভিক্ষু সমিতি। অভ্যুত্থানের পর থেকে নিরীহ মানুষকে হত্যা ও নির্যাতনের নিন্দাও জানিয়েছেন বৌদ্ধ ভিক্ষুরা।
এদিকে, দাঙ্গা পুলিশকে আটকাতে ইয়াঙ্গুনে বেরিকেডে আগুন দিয়েছে বিক্ষুব্ধরা। সেনা অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারে সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী দিন ছিল রোববার। এদিন, বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে প্রাণ গেছে ৫৩ জনের। তবে, গুলি করেও দমন করা যাচ্ছে না গণতন্ত্রকামীদের। সোমবারও উত্তাল ছিল রাজপথ। ঘটেছে প্রাণহানিও।
চীনের সংবাদ মাধ্যম গ্লোবাল টাইমস জানিয়েছে, গত রোববার মিয়ানমারে ৩২টি চীনা কারখানায় হামলা-ভাঙচুর চালায় দুর্বৃত্তরা। ক্ষতি হয়েছে ৩৭ মিলিয়ন ডলারের। আহত হন চীনের দুই নাগরিক। এ ঘটনায় মিয়ানমারে চীনা নাগরিক-সম্পত্তির সুরক্ষা নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে বেইজিং।
বিক্ষোভ দমাতে দেশজুড়ে ইন্টারনেট সংযোগের ওপর কড়াকড়ি আরোপ করেছে সেনাবাহিনী। বন্ধ করা হয়েছে দেশটির শেষ বেসরকারি পত্রিকাও।
এর আগে গত ১ ফেব্রুয়ারি এক বিতর্কিত সামরিক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। কারাবন্দি করা হয় দেশটির গণতান্ত্রিক নেত্রী অং সান সু চিসহ ক্ষমতাসীন দলের অধিকাংশ নেতাকে। দেশজুড়ে আগামী এক বছরের জন্য জারি করা হয়েছে জরুরি অবস্থা।
পরবর্তীতে জরুরি অবস্থা ভেঙে রাজপথে নেমে আসে মিয়ানমারের সর্বস্তরের জনতা। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করা সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলেন। সেই আন্দোলনে গত রোববার ও সোমবার ৬৫ জন সহ এ পর্যন্ত পুলিশের গুলিতে প্রায় ২'শ জন মানুষ নিহত হয়েছেন। আটক করা হয়েছে ২ হাজারের বেশি মানুষকে। এ ছাড়া পুলিশি হেফাজতে সু চির দলের আরও দুই নেতার মৃত্যু হয়েছে।