বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের মৃত্যুতে ভিডিও বার্তা দিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।বিএনপির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) রাতে ভিডিও বার্তা দুটি আপলোড করা হয়। ওই ভিডিও বার্তায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ সাহেবের এই চলে যাওয়া নিঃসন্দেহে সংকটময় মুহূর্তে অপূরণীয় শূন্যতার সৃষ্টি হলো। আমরা মনে করি শুধু বিএনপির জন্য নয়, সমগ্র দেশের জন্য, সমগ্র জাতির জন্য একটা বড় ক্ষতি হলো।
তিনি বলেন, একজন অভিভাবক, একজন অত্যন্ত গুণী পার্লামেন্টারিয়ান, সংসদ সদস্য ছিলেন তিনি। সরকারের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের পক্ষ থেকে, দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেবের পক্ষ থেকে আমরা গভীর শোক প্রকাশ করছি। তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, সবচেয়ে বড় বিষয়টি হলো—ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ একজন গণতন্ত্রকামী মানুষ ছিলেন, গণতন্ত্রমনা মানুষ ছিলেন। আপনারা নিশ্চয়ই সবাই লক্ষ্য করেছেন, তিনি অত্যন্ত চমৎকারভাবে মার্জিত ভাষায় কথা বলতেন। তার বক্তব্যগুলো ছিল খুব পরিশীলিত।
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ সাহেবের মৃত্যুর খবরে আমরা মর্মাহত। আমি তার রূহের মাগফিরাত কামনা করে স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। তার পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করছি।
তিনি বলেন, মরহুম ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ এই উপ-মহাদেশের একজন বিশিষ্ট আইনজীবী ছিলেন। তিনি বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী। এই দুই পেশার মাঝেও তিনি একজন লেখক ছিলেন। তিনি একজন অমায়িক ব্যক্তি ছিলেন। সবার সাথে তার অত্যন্ত সুসম্পর্ক ছিল। ওনার সাথে দীর্ঘ সময় কাজ করার অভিজ্ঞতা আমার। তারপ্রতি আমার যে শ্রদ্ধাবোধ তা আমি আজকে ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না।
ড. মোশাররফ আরও বলেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আজকে আমাদের মাঝ থেকে চলে গেছেন। বাংলাদেশ একজন অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ হারালো। আমরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল একজন অভিভাবক হারালাম। বিশেষ করে আমি আমার একজন অত্যন্ত দক্ষ সহকর্মী হারালাম। তার পরিবারের সদস্যরা হারালো তাদের ওপরে একটি বটগাছ। আমার বিশ্বাস রাজনৈতিক অঙ্গনে এবং বিচারালয়ে মওদুদ আহমদের তিরোধানে যে ক্ষতি হলো সে ক্ষতি পোষানোর মতো নয়। পুনরায় তার রূহের মাগফিরাত কামনা করছি। আল্লাহ যেন তাকে বেহেস্ত নসিব করেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে তার মরদেহ ঢাকায় আসবে। সাথে আসবেন তার স্ত্রী কবি জসীমউদ্দীনের মেয়ে হাসনা জসীমউদ্দীন মওদুদ।
শুক্রবার (১৯ মার্চ) সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় প্রথম জানাজা হওয়ার কথা রয়েছে। হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে দ্বিতীয় জানাজা, নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে তৃতীয় জানাজা শেষে মরদেহ নোয়াখালীতে নেওয়া হবে। কোম্পানীগঞ্জ কলেজ মাঠে সর্বশেষ জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে বাবা-মায়ের পাশে দাফন করা হবে মওদুদ আহমদকে।