ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১২ই ডিসেম্বর ২০২৪ , বাংলা - 

বৃষ্টিতে তলিয়ে গেলো হাওরের কোটি টাকার ধান

ষ্টাফ রিপোটার।।ঢাকাপ্রেস২৪.কম

2024-04-12, 12.00 AM
বৃষ্টিতে তলিয়ে গেলো হাওরের কোটি টাকার ধান

সুনামগঞ্জের বিভিন্ন হাওরে বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে কৃষকের সোনালী ধান। চোখের সামনে কষ্টের ধান তলিয়ে যাওয়ায় কাঁদছেন কৃষকরা। অনেকেই আবার পানির নিচ থেকে আধাপাকা ধান কেটে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। তবে এরইমধ্যে প্রায় কোটি টাকার ধান পানিতে তলিয়ে গেছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সুনামগঞ্জের হাওরে হাসছে আধাপাকা সোনালী ধান। আর মাত্র কয়েক দিনের অপেক্ষা। তারপর কৃষক গোলায় তুলবেন সেই ধান। কিন্তু এই আধাপাকা ধান নিয়েই এখন হাওরপাড়ের কৃষকরা পড়েছেন উভয় সংকটে। কখনো আগাম বন্যার আতঙ্ক আবার কখনও শিলাবৃষ্টিতে ফসল হানির শঙ্কা। তবে এই শঙ্কার মধ্যে এবার যোগ হয়েছে হাওরের জলাবদ্ধতা। হাওরে জলাবদ্ধতার কারণে এখন পর্যন্ত ৬০ হেক্টর বোরো ফসল পানির নিচে তলিয়ে গেছে। তাই নিরুপায় হয়ে সময়ের আগেই সেই আধাপাকা ধান কেটে ঘরে তুলছেন কৃষকরা।সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের মধুপুর গ্রামের কৃষক ইউসুফ আলী। মহাজনের কাছ থেকে চড়া সুধে টাকা এনে ২০ একর জমিতে করেছিলেন বোরো ধান। পরিশ্রমে ফলানো সেই ধান আর কয়েকদিন পর ঘরে তোলার কথা থাকলেও গত ৩ দিনের বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে। তাই কোমরপানিতে নেমে আধাপাকা ধান কেটে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন তিনি।ইউসুফ আলী বলেন, আমার স্বপ্নের ফসল বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে। এখন আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। ছেলে মেয়ে এবং ঋণ কীভাবে পরিশোধ করবো সেটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।

চলতি মৌসুমে সুনামগঞ্জের ১৩৭টি হাওরে বোরো ধানের আবাদ হলেও তারমধ্যে অন্যতম বৃহৎ দেখার হাওর। এই হাওরে সুনামগঞ্জ সদর, শান্তিগঞ্জ, ছাতক ও দোয়ারাবাজারসহ ৪ উপজেলার লক্ষাধিক কৃষকের ২৪ হাজার হেক্টর জমি রয়েছে। তবে গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার মোল্লাপাড়া ইউনিয়নের দরিয়াবাজ, কলাউড়া, ইছাগড়ি, হুরমত নগর, রউয়ারপাড়, গুয়ারছড়া, হরিপুরসহ ৭টি গ্রামের কয়েকশ কৃষকের ধান পানিতে তলিয়ে যায়। ফলে সেই ধান নিরুপায় হয়ে পানির নিচ থেকে কেটে কেউ নৌকায় করে শুকনা স্থানে নিয়ে আসছেন, কেউবা আবার মেশিন দিয়ে মাড়াই করছেন।হাওরপাড়ের কৃষকরা বলেন, অনেক কষ্ট করে ফসলের আবাদ করেছিলাম, কিন্তু ফসল পুরোপুরি পাকার আগেই বৃষ্টির পানিতে হাওরে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে ধান তলিয়ে গেছে। এখন এই ধানগুলো কোনো রকমে পানির নিচ থেকে তুলছি গবাদিপশুর খাবার হিসেবে।এদিকে সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক জানান, দেখার হাওরে যে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে সেটি নিষ্কাশনের জন্য আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। সেইসঙ্গে যাদের ফসল তলিয়ে গেছে তাদের তালিকা তৈরি করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।এ বছর সুনামগঞ্জ জেলায় ১৩ লাখ ৭০ হাজার ২৭০ টন বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হলেও এরইমধ্যে প্রায় ৩৫০ মেট্রিক টন ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। যার বাজারমূল্য প্রায় কোটি টাকা।