চট্টগ্রামে ছেলেকে বাঁচাতে গিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি গোলাম রসুল নিশানের অনুসারী ও ছাত্রলীগ কর্মীদের হামলায় গুরুতর আহত কোরবান আলী নামে একজন দন্ত চিকিৎসক মারা গেছেন। বুধবার (১০ এপ্রিল) ভোরে নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। নিহত ব্যক্তির স্বজন জসিম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।তিনি জানান, টানা পাঁচদিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর বুধবার ভোরে কোরবান আলীকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। সম্প্রতি কিশোর গ্যাং সদস্যদের হাত থেকে এক পথচারীকে বাঁচাতে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোনকল করেন কোরবান আলীর ছেলে আলী রেজা রানা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত শুক্রবার (৫ এপ্রিল) রাতে রানাকে মারধর করতে গেলে ছেলেকে বাঁচাতে কিশোর গ্যাং সদস্যদের হামলার মুখে পড়েন চিকিৎসক কোরবান আলী। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় শুরু থেকেই লাইফ সাপোর্টে ছিলেন তিনি।এ হামলার ঘটনার পরপরই পুলিশ জানিয়েছিল, হামলাকারীরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি গোলাম রসুল নিশানের অনুসারী এবং তারা সবাই ছাত্রলীগ কর্মী।
চিকিৎসক কোরবান আলীর স্বজন জসিম উদ্দিন বলেন, কয়েকদিন আগে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন আলী রেজা রানা। হঠাৎ তার চোখে পড়ে, একদল কিশোর একজন পথচারীকে পেটাচ্ছে। মার সহ্য করতে না পেরে লোকটি ‘বাঁচাও বাঁচাও’ বলে চিৎকার করছে। লোকটিকে বাঁচাতে ৯৯৯ নম্বরে ফোনকল করেন রানা। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলৈ গিয়ে তাদের মধ্যে কয়েকজনকে ধরে নিয়ে যায়।
তিনি আরও জনান, এই ঘটনার জেরে গত ৫ এপ্রিল রানার বাসার সামনে গিয়ে প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দেয় কিশোর গ্যাং সদস্যরা। ওইদিনই রানা বাসার পাশের দোকানে ইফতারি কিনতে গেলে কয়েকজন কিশোর গ্যাং সদস্য তার ওপর হামলা চালায়। এসময় ছেলেকে বাঁচাতে এগিয়ে যান তার বাবা কোরবান আলী। তখন তার ওপরও হামলা চালানো হয়। এতে তিনি মাথায় প্রচণ্ড আঘাত পান।ঘটনার বিষয়ে আকবর শাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ডা. কোরবান আলীর ওপর হামলার ঘটনায় ৮-১০ জনকে আসামি করে একটি মামলা হয়েছে। তবে এখনো কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি।