ঢাকা, বুধবার ৮ই মে ২০২৪ , বাংলা - 

রক্তাক্ত দিন,গুলিতে মিয়ানমারে নিহত ১৪

আন্র্তজাতিক ডেস্ক।।ঢাকাপ্রেস২৪.কম

2021-03-14, 12.00 AM
রক্তাক্ত দিন,গুলিতে মিয়ানমারে নিহত ১৪

মিয়ানমারে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভে পুলিশের গুলিতে ১৪ জন নিহত হয়েছেন। রোববার (১৪ মার্চ) দেশটির বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুনে এ ঘটনা ঘটে।স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাতে লন্ডন ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে এ দিনের বিক্ষোভে একজন পুলিশও মারা গেছেন।ইয়াঙ্গুনের হ্লাইং থারিয়ার এলাকায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তাবাহিনীর সংঘর্ষ হয়। এ সময় জান্তাবিরোধীরা লাঠি ও ছুরি হাতে নিজেদের আত্মরক্ষার চেষ্টা করে। সংঘর্ষ শুরু হলে নিরাপত্তাবাহিনী গুলি ছোড়ে। সংঘর্ষের পর সামরিক সরকার চীনা কারখানা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থাকা এলাকাটিতে মার্শাল ল জারি করেছে।

চিকিৎসাকর্মীদের বরাতে খবরে বলা হয়েছে, নিরাপত্তাবাহিনী রাবার বুলেট ও তাজা গুলি ছোড়ে। এতে অন্তত ১৪ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে মিয়ানমার নাউ ওয়েবসাইট। তবে স্থানীয় অপর স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে নিহতের সংখ্যা আরও বেশি বলে দাবি করা হচ্ছে।

চীনের দূতাবাস মিয়ানমারের জান্তা সরকারকে তাদের সম্পত্তি ও নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য আহ্বান জানিয়েছে। চীন অর্থায়ন করা দুটি পোশাক কারখানায় অজ্ঞাত হামলাকারীরা আগুন দেওয়ার পর এই আহ্বান জানানো হয়।

স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, ইয়াঙ্গুনের হ্লাইংঠায়া জেলায় নিরাপত্তা বাহিনী বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালিয়েছে। এটি সারা দেশ থেকে আগত অভিবাসীদের আবাসস্থল। এই অঞ্চল কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে গেছে।

স্থানীয় হাসপাতাল ও একজন উদ্ধারকর্মী জানিয়েছে, কমপক্ষে ১৪ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানানো হয়েছে।

মিয়ানমার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন (এমআরটিভি) বলেছে, জেলায় সামরিক আইন জারি করা হয়েছে।

এক চিকিৎসাকর্মী এএফপিকে বলেন, আমি চিকিৎসার দেওয়ার সময় চোখের সামনেই তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। আমি আরও দুজনকে হাসপাতালে পাঠাচ্ছিলাম। এই মুহূর্তে এটুকুই আমি বলতে পারি।

সারা দিন গুলির শব্দ শোনা গেছে এবং রাস্তায় সামরিক ট্রাকের টহল ছিল বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। এক পুলিশ সদস্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, পুলিশ ভারি অস্ত্র ব্যবহারের পরিকল্পনা করছে।

পরে মুছে ফেলা টিকটক পোস্টে ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেছেন, হ্লাইং থারিয়ারে কোনও দয়া দেখাবো না। বিক্ষোভকারীরাও জানপ্রাণ লড়বে কারণ এখানে অনেক ধরনের মানুষ আছে।

গত মাসে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকে মিয়ানমারে চলমান আন্দোলনে শনিবার পর্যন্ত ৮০ জনের বেশি মানুষের নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিকাল প্রিজনার্স। একই সময়ে দুই হাজার ১০০ জনের বেশি মানুষকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।

অং সান সু চির ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসি পার্টির (এনএলডি) নির্বাচিত পার্লামেন্ট সদস্যদের মধ্যে যারা গ্রেফতার এড়িয়ে আত্মগোপন করতে সক্ষম হয়েছেন তারা একটি নতুন গোষ্ঠী প্রতিষ্ঠা করেছেন। এর নাম কমিটি ফর রিপ্রেজেন্টিং পাইডাংসু লুত্তাও বা সিআরপিএইচ। মান ‍উয়িন খাইং থান এর অস্থায়ী প্রধান নিযুক্ত হয়েছেন।

সিআরপিএইচ মিয়ানমারের বৈধ সরকার হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

শনিবার গোপন অবস্থান থেকে ফেসবুকের মাধ্যমে দেওয়া ভাষণে খাইং থান বলেন, এটি জাতির সবচেয়ে অন্ধকার মুহূর্ত কিন্তু নিকটেই ভোর।

সিআরপিএইচ মিয়ানমারে একটি ফেডারেল গণতন্ত্র তৈরির লক্ষ্য নিয়ে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছে। এর নেতারা দেশটির বৃহত্তম নৃগোষ্ঠীগুলোর সশস্ত্র সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা করছে এবং ইতোমধ্যে কিছু গোষ্ঠী সিআরপিএইচের প্রতি সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বলে রয়টার্স জানিয়েছে।

এই বিদ্রোহী সশস্ত্র সংগঠনগুলো মিয়ানমারের বিস্তৃত বহু অঞ্চলে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে রেখেছে।