ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২ই মে ২০২৪ , বাংলা - 

তিন দিনব্যাপী ব্রিটিশ কাউন্সিলের স্কুলস নাও!

ষ্টাফ রিপোটার।।ঢাকাপ্রেস২৪.কম

2024-03-04, 12.00 AM
তিন দিনব্যাপী ব্রিটিশ কাউন্সিলের স্কুলস নাও!

দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে অনুষ্ঠিত হয়েছে তিন দিনব্যাপী ব্রিটিশ কাউন্সিলের স্কুলস নাও! ২০২৪ সম্মেলন। ২৭ থেকে ২৯ ফেব্রুয়ারি এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে অফলাইনে ও অনলাইনে অংশগ্রহণ করেন ১ হাজারের বেশি নেতৃস্থানীয় বেক্তিবর্গ। আন্তর্জাতিক শিক্ষাক্ষেত্রে সেরা অনুশীলন এবং এ সংশ্লিষ্ট সম্যক জ্ঞান (ইনসাইট) একে অন্যের সাথে আদান-প্রদান এবং পারস্পরিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধিতে কার্যকরী প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ভূমিকা রাখে এ সম্মেলন।  বাংলাদেশ থেকে ২৮ জন প্রতিনিধি সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। এদের মধ্যে ছিলেন ব্রিটিশ কাউন্সিল, অ্যাকাডেমিয়া, চেরি ব্লসমস ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ডিপিএস এসটিএস স্কুল, আর্থ হাউস অল্টারনেটিভ স্কুল, জুভেনাইল ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল, মানারাত ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মেপল লিফ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, মাস্টারমাইন্ড ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল, অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, প্লেপেন, প্রিমিয়ার স্কুল ঢাকা, স্কলাস্টিকা, স্যার জন উইলসন স্কুল এবং সানিডেল বাংলাদেশের প্রতিনিধিগণ। 

 

সম্মেলনে আন্তর্জাতিকীকরণ ও প্রেক্ষাপট-ভিত্তিক পাঠ্যক্রমের পাশাপাশি ডিজিটাল শিক্ষা, নেতৃত্ব, সুস্থতা ও সুরক্ষা প্রতিপাদ্যে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজনে বক্তাদের মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপনের পাশাপাশি কর্মশালা এবং প্যানেল আলোচনাও অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উদ্ভাবনী শিক্ষাপদ্ধতি, আরও সমৃদ্ধ পাঠ্যক্রম গঠনের কৌশল এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রযুক্তির একীভূতকরণ নিয়ে আলোচনা করেন।

 

এ সম্মেলনে নিয়ে ব্রিটিশ কাউন্সিলের হেড অব গ্লোবাল এক্সামস সার্ভিসেস মার্টিন লোডার বলেন, “স্কুলস নাও! সম্মেলনের উদ্দেশ্য শিক্ষাক্ষেত্রে যারা কাজ করছেন তাদের মধ্যে বৈশ্বিক যোগাযোগ স্থাপন এবং আন্তর্জাতিক শিক্ষায় ভাবনা ও অর্জিত জ্ঞানের আদান-প্রদান এবং উদ্ভাবনের সুযোগ খুঁজে বের করা। উদীয়মান বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করার মাধ্যমে আমাদের লক্ষ্য শিক্ষাবিদদের ক্ষমতায়ন, যেনো পরিবর্তনশীল শিক্ষাক্ষেত্রে জটিলতা মোকাবিলা করে শিক্ষার্থীদের জন্য ইতিবাচক ফল নিশ্চিত করা যায়।” 

বাংলাদেশে ব্রিটিশ কাউন্সিলের এক্সামস ডিরেক্টর ম্যাক্সিম রেইম্যান বলেন, “ইউকে অ্যাওয়ার্ডিং বডিজের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে ১৭৫ -এর বেশি সহযোগী স্কুলের জন্য ইউকে ইন্টারন্যাশনাল স্কুল কোয়ালিফিকেশনস নিশ্চিতে সহায়তা করে ব্রিটিশ কাউন্সিল পার্টনার স্কুলস প্রোগ্রাম। আমাদের শিক্ষাসংশ্লিষ্ট সহায়তা স্কুলগুলোকে শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষাগ্রহণ অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ করতে এবং শিক্ষাকে আরও ফলপ্রসূ করতে ভূমিকা রাখে।”  

 

স্কলাস্টিকার হেড অব অ্যাকাডেমিক অ্যাফেয়ার্স সাবিনা মুস্তাফা বলেন, “প্রযুক্তিগত উন্নয়নের কারণে শিক্ষাখাত ধারাবাহিক রূপান্তরের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ও ডিজিটাল রিসোর্স জ্ঞান অর্জনের সুযোগ ও প্রাপ্যতাকে নতুন করে সঙ্গায়িত করেছে। এ পরিবর্তন মোকাবিলায় এবং শিক্ষায় সমতা (ইক্যুইটি) নিশ্চিত করতে অংশীজনদের মাঝে অংশীদারিত্ব গুরুত্বপূর্ণ। এ সংশ্লিষ্ট জ্ঞান ও দক্ষতার আদান-প্রদানের মাধ্যমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উদ্ভাবন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমাদের মতো শিক্ষাবিদদের জন্য ‘দ্য স্কুলস নাও!’ সম্মেলনটি একটি অনন্য প্ল্যাটফর্ম।”

 

সম্মেলনে স্বাগত মূলবক্তব্য প্রদান করেন কারিকুলাম ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী ভিক্টোরিয়া পেন্ড্রি। বক্তব্যে তিনি স্কুলের ক্ষমতায়নে পাঠ্যক্রমের উন্নয়ন, পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়নের ওপর গুরত্বারোপ করেন। বক্তব্যে মানসম্মত ও ন্যায্য শিক্ষার ভিত্তি হিসেবে ডিজিটাল শিক্ষা, নেতৃত্ব, সুস্থতা ও সুরক্ষার মধ্যে আন্ত:সম্পর্কের গুরুত্বের কথা তুলে ধরেন তিনি।                     

 

সম্মেলনে অন্যান্য বিশিষ্ট বক্তাদের মধ্যে ছিলেন ঘানার আল রায়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের হেড অব ওয়েলবিয়িং ডিভিশন ও চাইল্ড প্রোটেকশন লিড ড. ফাঙ্ক বাফোর-আউয়াহ; ব্রিটিশ কাউন্সিল এডুকেশন কনসালটেন্ট ক্যাথলিন ও’হেয়ার; ডেপুটি হেড প্যামেলা ও'ব্রায়েন এবং ব্রিটিশ কাউন্সিল স্কুল মাদ্রিদের ডেপুটি হেড অ্যাকাডেমিক জো পার্কেস। 

   

ভার্চুয়াল ডেলিগেটদের জন্য ‘ডিজিটাল লার্নিং’র ওপর একটি সেশন পরিচালনা করেছেন হেরিটেজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, মোলদোভার ডেপুটি অ্যাকাডেমিক ডিরেক্টর ও আইএসসি ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশন ইনফ্লুয়েন্সার ২০২৩ তাতিয়ানা পোপা। সেখানে, স্কুলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ব্যবহার এবং শিক্ষামূলক উপকরণ, শিক্ষণ অনুশীলন ও অন্যান্য ক্ষেত্রে তার প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেন তিনি। 

 

কেপ টাউনের স্টেলেনবোশ ইউনিভার্সিটির সিনিয়র লেকচারার কুদজাই তারিসাই; মিশরের নারমাইন ইসমাইল ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের মিডল অ্যান্ড হাই স্কুল এডুকেশন ডিরেক্টর রেহাম আলী এবং জো পার্কেসের অংশগ্রহণে ‘এআই ইন এডুকেশন’ -এর ওপর একটি বিশেষজ্ঞ প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এআই ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যৎ প্রয়োজনের জন্য প্রস্তুত কিনা তা নিশ্চিত করতে স্কুলগুলো যা করণীয় তা নিয়ে মূল্যবান কিছু পরামর্শ নিয়ে আলোচনা করেন তারা। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রতি একটি ইতিবাচক দৃষ্টিভিঙ্গি চিহ্নিত করে প্রায় ৯০ শতাংশ অংশগ্রহণকারীরা এআই-এর পক্ষে কথা বলেন।