আগামী শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) থেকে শুরু হতে যাচ্ছে তাবলীগ জামায়াত আয়োজিত বিশ্ব ইজতেমা। এতে অংশ নিতে ময়দানে আসতে শুরু করেছেন দেশ বিদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মুসল্লি।প্রস্তুতি কিছুটা বাকি থাকলেও ইজতেমার ময়দানে বাড়ছে জমায়েত।মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেলে ইজতেমার ময়দান ঘুরে প্রস্তুতির কাজ চলতে দেখা গেছে। পুরো মাঠের চার ভাগের এক ভাগ চট দিয়ে সামিয়ানা করা হয়েছে। বাকি অংশ এখনও ফাঁকা। ইজতেমায় অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বিভিন্ন বয়সের মুসল্লিরা এসে জমায়েত করছেন। অনেককে দেখা গেছে নিজ থেকে সামিয়ানা টাঙাতে। আবার অনেকে তাদের নির্ধারিত খিত্তা খুঁজছেন। এক পাশে কিছু মুসল্লিকে রাতের খাবার রান্নার প্রস্তুতি নিতে দেখা গেছে। অপর পাশে রাতে থাকার জন্য নিজেদের মতো জায়গা প্রস্তুত করতে দেখা গেছে কিছু মুসল্লিকে। কেউ নামাজ আদায় করছেন, আবার কেউ বিকেলের নাস্তা করছেন। ইজতেমা মাঠের চারপাশ থেকে মুসল্লিরা আসছেন কেউ হেঁটে, কেউ গাড়িতে চড়ে। তবে কারও গাড়ি মাঠে ঢুকছে না। যারা এসেছেন তাদের সঙ্গে রয়েছে বিছানাপত্র, শীতের জামা, কাপড় ও রান্নার হাঁড়ি-পাতিল ও থালা-বাটি। ইজতেমার শুরুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত তারা এখানেই অবস্থান করবেন। আখেরি মোনাজাত পর্যন্ত এখানেই আল্লাহ-তায়ালার ইবাদত করবেন।গাইবান্ধার বাসিন্দা মোহাম্মদ আলী (৬২) নামে এক মুসল্লি জানান, তারা তিনজন ইজতেমায় অংশ নিতে এসেছেন। তিনি প্রথমবারের মতো এসেছেন। ময়দান দেখে তার মন জুড়িয়ে গেছে। আখেরি মোনাজাত পর্যন্ত ময়দানে অবস্থান নিয়েই তিনি তাবলীগ জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় আলেমদের বয়ান শুনবেন।
টাংগাইল থেকে আসা গফুর মিয়া (৬০) বলেন, বিকেলে ১১ জনের একটি দল নিয়ে ইজতেমায় অংশ নিতে এসেছি। থালা-বাটিসহ প্রয়োজনীয় সব জিনিসপত্র সঙ্গে নিয়ে এসেছি। আখেরি মোনাজাত শেষ করে বাড়ি ফিরব। টাকার অভাবে হজে যেতে পারি না। বিদেশ থেকে অনেকেই এখানে এসেছেন। তাদের সঙ্গে নিয়েই জামায়াতে নামাজ আদায় করবো। আল্লাহ তায়ালার বিধান সম্পর্কে জানবো, রাসুল (সা.) নির্দেশিত পথে চলার চেষ্টা করবো।
২০২৪ সালের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২ ফেব্রুয়ারি। আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এ পর্ব। পরবর্তীতে আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি আম বয়ান মধ্য দিয়ে শুরু হবে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। ১১ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এ বছরের ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব।
বিশ্ব ইজতেমার মাওলানা জোবায়ের অনুসারী মুফতি জহির ইবনে মুসল্লী বলেন, ময়দান প্রস্তুতির কাজ প্রায় শেষ। আমাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ময়দানের অধিকাংশই সামিয়ানা টানানো হয়নি। এছাড়া চট সংকট, অনেক চট নষ্ট হয়ে গেছে। নির্বাচনের কারণে সময় পাওয়া যায়নি ফলে পুরো ময়দানে সামিয়ানা টানানোর ব্যবস্থাও করা হয়নি। তবে জেলা ও থানাভিত্তিক তাবলীগ জামায়াতের সব অনুসারীদের বলে দেওয়া হয়েছে নিজ নিজ দায়িত্বে সামিয়ানা টানিয়ে নিতে হবে। তারাও সামিয়ানার সঙ্গেই নিয়েই ময়দানে আসছে। আশা করছি মঙ্গলবার রাতের মধ্যেই ইজতেমার ময়দান অর্ধেক ভরে যাবে।প্রথম পর্বে মুসল্লিদের উপস্থিতি অনেক বেশি হবে। এবার জায়গার সংকট হতে পারে বলেও আশঙ্কার কথা জানান তিনি।