সড়কে ঝরলো সংগীতের দুই তাজা প্রাণ হানিফ আহমেদ ও পার্থ গুহ। দু’জনেই দেশের অন্যতম পারকাশন ও প্যাড বাদক।তাদের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন হানিফের বড় ভাই মানিক ও সংগীতশল্পী ইমরান।তারা জানান, শনিবার (১৩ মার্চ) ভোর ৫টার দিকে নির্ধারিত স্টেজ শোতে অংশ নিতে কক্সবাজার যাওয়ার পথে চট্টগ্রামের মিরসরাই এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। মিরসরাই এলাকায় উল্টো দিক থেকে আসা একটি লরি ট্রাক তাদের মাইক্রোবাসটিকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এ সময় গাড়িটি ছিটকে পড়ে। মারাত্মক আহত হন মাইক্রোবাসে থাকা হানিফ আহমেদ, পার্থ গুহ, বিউটি খানসহ অন্যরা।
ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান পার্থ গুহ। গুরুতর আহত অবস্থায় অন্যদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা হানিফ আহমেদকেও মৃত ঘোষণা করে। এছাড়া গাড়িতে থাকা কণ্ঠশিল্পী বিউটি খান, মিউজিশিয়ান নন্দন, রাহাত, পাপ্পু ও তাওহীদ মারাত্মক আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
তবে বিউটি খানের অবস্থা বেশ জটিল বলে জানিয়েছে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।
জানা গেছে, শুক্রবার (১২ মার্চ) রাতে চাঁদপুরে একটি স্টেজ শো শেষ করে রাত ৩টার দিকে মেঘনা ব্রিজের কাছ থেকে বিদায় নেন হানিফ আহমেদ। যুক্ত হন ঢাকা থেকে আগত পার্থ গুহসহ অন্য শিল্পী-মিউজিশিয়ানদের নিয়ে অপেক্ষমান আরেকটি মাইক্রোবাসের সঙ্গে। সেখান থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন তারা।
এই মাইক্রোতে ছিলেন হানিফ-পার্থরা
হানিফ আহমেদ ও পার্থ গুহ দুজনেই দেশের ব্যস্ত স্টেজ মিউজিশিয়ানদের মধ্যে অন্যতম। দেশের বেশিরভাগ শিল্পীর সঙ্গে স্টেজ শেয়ার করে আসছেন দুই দশক ধরে। হানিফ আহমেদের শেষ শো ছিল শুক্রবার (১২ মার্চ) রাতে কণার সঙ্গে, চাঁদপুরে। একই মঞ্চে অন্য মিউজিশিয়ানদের নিয়ে গান করেছেন ইমরানও।
ইমরান বলেন, ‘আমি আর কণা আপু একই শোতে ছিলাম। যদিও সময়ের ব্যবধানে আমাদের দেখা হয়নি। তবে হানিফ ভাই ছিলেন কণা আপুর সেটআপে। জানতে পেরেছি, রাতে ঢাকায় ফেরার পথে মেঘনা ব্রিজের কাছে হানিফ ভাই নেমে পার্থ দা’র সঙ্গে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন। এটা সত্যিই মানা যায় না। এমন তাজা প্রাণ চলে যাবে, ভাবতেও পারি না। এটা আমাদের মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির জন্য অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেল।’
দুই প্রিয় মিউজিশিয়ানকে হারিয়ে শোকের ছায়া পড়েছে সংগীতাঙ্গনে। শনিবার সকাল থেকে ফেসবুকজুড়ে চলছে বিস্ময়, হতাশা আর ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।
কণার সঙ্গে হানিফের শেষ শো চাঁদপুরে:
কণা বলেন, ‘মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে আমরা একসঙ্গে ছিলাম। চাঁদপুরে শো করলাম। বাসায় ফিরে চোখে ঘুম না লাগতেই শুনলাম হানিফ ভাই নেই! হানিফ ভাই গতকালও বলছিলেন, আমার সঙ্গে একটা জরুরি আলাপ আছে। ঢাকায় ফিরে বলবে। আর শোনা হলো না, সেই জরুরি কথাটা।’