ঢাকা, মঙ্গলবার ৩ই ডিসেম্বর ২০২৪ , বাংলা - 

'কোভিডের কোনও চিকিৎসা পৃথিবীর নেই'

ডা. শাহজাদ হোসাইন মাসুম

2021-03-13, 12.00 AM
'কোভিডের কোনও চিকিৎসা পৃথিবীর নেই'

কয়েকদিন ধরে আবারও করোনা সংক্রমণের হার বাড়ছে। একদিকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে অনীহা আরেকদিকে জোরেশোরে চলছে টিকা কার্যক্রম। এমন পরিস্থিতিতে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় দেখা দিয়েছে নতুন শঙ্কা। কোভিডের কোনও চিকিৎসা পৃথিবীর বিজ্ঞানীদের হাতে নেই বলে বলে মন্তব্য করেছেন কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের অ্যানেস্থেসিওলজি অধ্যাপক শাহজাদ হোসাইন মাসুম।
দেশে করোনা শনাক্তের এক বছর পার হওয়ার পর দুই মাসের ব্যবধানে বুধবার আবারও হাজারের ঘরে পৌঁছায় করোনা শনাক্ত। সর্বশেষ শুক্রবার (১২ মার্চ) স্বাস্থ্য অধিদফতরের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত হয়েছে একহাজার ৬৬ জন এবং মারা গেছেন ১৩ জন।

কোভিড পরিস্থিতির পরিবর্তন হয়েছে উল্লেখ করে ডা. শাহজাদ হোসাইন মাসুম তার ফেসবুক পোস্টে সম্প্রতি হাসপাতালের বদলে যাওয়া চিত্র তুলে ধরে কোভিড থেকে বাঁচতে সাতটি অনুরোধ জানিয়েছেন।

তিনি লিখেছেন,  ‘মাস দুয়েক একটু শ্বাস ফেলার সুযোগ পেয়েছিলাম। কখনও একটা বেডও খালি রাখতে না পারলেও রোগীদের ওয়ার্ডে শিফট করা যাচ্ছিল। মৃত্যুহার অনেক কম ছিল। এক সপ্তাহের মাঝে পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। আক্ষরিকভাবে রোগীদের বাঁচিয়ে রাখতে আমরা এখন যুদ্ধ করছি এবং হেরে যাচ্ছি বারবার। এই পরিবর্তন আমরা আমাদের চোখের সামনে ঘটতে দেখছি।’

অনেকে কানে কথা তুলতে না চাওয়ায় একটু হতাশা নিয়েই তিনি লিখেছেন, ‘আমাদের কথায় আপনারা বিরক্ত হন জানি, কিন্তু আমাদের কিছু করার নেই। আমরা বারবার বলে যাই। কেউ না শুনলেও, সবাই মুচকি হাসলেও আমাদের বলে যেতে হবে। একটুখানি শ্বাস বুকের ভেতরে নেওয়ার জন্য মানুষের তীব্র কষ্টটা আপনারা কেউ পাশে দাঁড়িয়ে দেখেন না, শেষ সময়ের কষ্টটা কি তীব্র! আমার তেমন কোনও শত্রু নেই, থাকলেও আমি তার এমন মৃত্যু চাইতাম না।’

হয়তো আমরা আরেকটি ওয়েভের শুরুর পথে উল্লেখ করে তিনি স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘এর বিস্তার বাইরে থেকে তেমন বোঝা যায় না। যেই পরিবারের কেউ এর মাঝ দিয়ে যায় শুধু তারা জানেন। হয়তো আমরা আরেকটি ওয়েভের শুরুর পথে। এই সময়ে রোগীরা দ্রুত খারাপ হচ্ছেন। মনে রাখবেন, এখনও কোভিডের কোনও চিকিৎসা পৃথিবীর বিজ্ঞানীদের হাতে নেই। তাই এর প্রতিরোধই একমাত্র পথ।’

পরিস্থিতি খারাপ হওয়া ঠেকাতে সাতটি অনুরোধ জানান তিনি। সেগুলো হলো:

১. সব সামাজিক জমায়েত থেকে অসামাজিকভাবে দূরে থাকুন।

২. পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠদের নিরাপদ রাখুন। (তবে এটাও মনে রাখবেন এবার আমরা প্রচুর তরুণ রোগীও পাচ্ছি।)

৩. গত বছর মার্চ মাসে যে সব সাবধানতা পালন করেছিলেন সেগুলোই একইভাবে পালন করুন, রিলিজিয়াসলি।

৪. মাস্ক নিজে পরুন, অন্যকে পরতে বাধ্য করুন। প্রয়োজনে সিন ক্রিয়েট করুন।

৫. হাত সাবান দিয়ে বারবার ধুয়ে নিন। না পারলে স্যানিটাইজ করুন।

৬. অপ্রয়োজনে বাড়ি থেকে বের হওয়া একদম বন্ধ করে দিন, এই মুহূর্ত থেকে।

৭. বিপদে মাথা ঠান্ডা রাখতে হয় আর হৃদয় প্রসারিত করতে হয়।