খালেদার জিয়ার চিকিৎসা বাংলাদেশে কঠিন হয়ে পড়ছে জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অবিলম্বে তার মুক্তির দাবি জানিয়েছেন।শুক্রবার (১২ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের জাতীয় সম্মেলনে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার কথা তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব।তিনি বলেন, আমরা একটা কঠিন সময় পার করছি, একটা সংকট মুহূর্ত পার হচ্ছি। আমাদের দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে আটক করে রাখা হয়েছে। তিনি অসুস্থ।
সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা তাকে (খালেদা জিয়া) গৃহবন্দি করে রেখেছেন। তিনি চিকিৎসার জন্য বাইরে যেতে চেয়েছেন, সেটাও আপনারা দেন নাই। আপনারা তাকে বাংলাদেশে রেখেই চিকিৎসা করতে বলছেন। যেখানে তার চিকিৎসা অত্যন্ত কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে দিনে দিনে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা অবিলম্বে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই। আমরা এর নিচে কিছু চাই না। মুক্তি দিতে হবে, নিঃশর্তভাবে মুক্তি দিতে হবে। আমাদের যেসব নেতা-কর্মী বন্দী আছেন তাদের সবাইকে মুক্তি দিতে হবে। আমাদের নেতা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেবের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে, আমাদের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ৩৫ লাখ মামলা আছে তা প্রত্যাহার করতে হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সরকার এখন পর্যন্ত কৃষকদের জন্য এমন কিছু করেনি যা দিয়ে তারা বলতে পারবে—আমরা কৃষকদের জন্য এই এই কাজগুলো করেছি। কোভিড-১৯ এর প্রণোদনা দিয়েছে বিভিন্ন সেক্টরে, কৃষি ক্ষেত্রেও দিয়েছে কিন্তু কৃষি ক্ষেত্রের টাকাগুলো তাদের নেতারা (আওয়ামী লীগ) পকেটে ভরে নিয়েছেন। আড়াই হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ার কথা ছিল, সেটাও তারা পকেটে ভরে নিয়েছেন। এই সরকার লুটেরা সরকারে পরিণত হয়েছে।
সরকার উন্নয়নের নামে মেগা লুট করছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকের পত্রিকায় দেখলাম দ্রুতগামী ট্রেন চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার জন্য দুটি চীনা কোম্পানি তারা সাপ্লাইয়ার্স ক্রেডিটে করে দিতে চায়। পয়সা দেবে কে? পয়সা ওরা (চীন) দেবে এবং সরকার আমাদের পকেট থেকে কেটে নেবে।
টানা ২২ বছর পর কৃষক দলের এই জাতীয় সম্মেলন হচ্ছে। সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিলো ১৯৯৮ সালের ১৬ মে। শুক্রবার সকাল ১০টায় মহানগর নাট্যমঞ্চের প্রাঙ্গণে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, রঙিন বেলুন ও সাদা কবুতর উন্মুক্ত করে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ও কৃষক দলের আহ্বায়ক শামসুজ্জামান দুদু। এ সময় প্রথমে জাতীয় সঙ্গীত এবং পরে দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়।
এদিন বিকেল তিনটায় গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্ব কাউন্সিল অধিবেশন রয়েছে। এই সম্মেলনে সারাদেশে থেকে আসা সংগঠনটির ৫৪৮ জন কাউন্সিলর অর্থাৎ ৭৯টি সাংগঠনিক জেলার ৩৯৫ জন এবং কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির ১৫৩ জন প্রতিনিধি অংশ নিয়েছেন।
গত বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি শামসুজ্জামান দুদুর নেতৃত্বে কৃষক দলের ১৫৩ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছিল।