‘আওয়ামী লীগ কারও স্বীকৃতির অপেক্ষা করে না। স্বীকৃতির জন্য বিদেশি কোনো শক্তির কাছে আমরা কখনো ধরনা দেইনি। এখনো দেবো না। আর যারা অতীতে ডিস্টার্ব করার চেষ্টা করেছে, তারা সামনের দিনও করবে।’বলছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটের ফের সরকার গঠন, নতুন মন্ত্রিসভা, বিরোধী দল, বিএনপির দাবির প্রসঙ্গ নিয়ে মতামত ব্যক্ত করেন জাগো নিউজের কাছে।দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অপশক্তির বিরুদ্ধে জনগণের বিজয় হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা নানান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার মধ্য দিয়ে টানা চতুর্থবার সরকার গঠন করেছি। জনগণ সব প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা রেখেছেন। আমাদের সব অর্জন জনগণের অর্জন মনে করে আমরা বাংলাদেশের মানুষকে সাধুবাদ জানাই। অভিনন্দন জানাই পাঁচবারের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে।’‘দেশের সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা বজায় রাখা এবং উন্নয়নকে ত্বরান্বিত রাখতে দেশের জনগণ বিরোধীশক্তির সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আমাদের প্রতি ভরসা রেখেছে। এবারের মন্ত্রিসভায় যেমন চমক রয়েছে তেমনি তারুণ্যের অগ্রযাত্রার স্বীকৃতিও মিলেছে। ইতিবাচকভাবেই নতুন এ মন্ত্রিসভাকে আপনি মূল্যায়ন করতে পারেন। স্মার্ট ও মেধাবী ব্যক্তিদের নিয়ে এ মন্ত্রিসভার আয়োজন। দেশের মানুষও এমন মন্ত্রিপরিষদ নিয়ে উচ্ছ্বসিত বলে মনে হচ্ছে।’আগের মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়া সদস্যদের নিয়ে বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘কে থাকলো বা কে বাদ পড়লো তা সরকার বা দলের জন্য ম্যাটার করে না। প্রবীণ বা নবীন অনেকেই বাদ পড়েছেন। আবার অনেকেই নতুন করে যুক্ত হয়েছেন। সরকারপ্রধান যাকে যোগ্য মনে করেছেন, তাকে জায়গা দিয়েছেন। সাংবিধানিক ক্ষমতা বলে মন্ত্রিসভা গঠন করার এখতিয়ার প্রধানমন্ত্রীর। আমার কাছে মনে হয়েছে এবার সবচেয়ে যোগ্যদের মন্ত্রিসভায় জায়গা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী তার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা ও বিচক্ষণতার মধ্য দিয়ে মন্ত্রিসভা ঢেলে সাজিয়েছেন। এখন হচ্ছে প্রমাণের পালা। মন্ত্রিসভার সদস্যরা যথার্থ প্রমাণ রাখতে পারবেন বলেই আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। আগাম বলাও মুশকিল।’নির্বাচন, গণতন্ত্র নিয়ে আন্তর্জাতিক মহল যে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছে সে প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কারও স্বীকৃতির অপেক্ষা করে না। স্বীকৃতির জন্য বিদেশি কোনো শক্তির কাছে আমরা কখনো ধরনা দেইনি। এখনো দেবো না। যারা অতীতে ডিস্টার্ব করার চেষ্টা করেছে, তারা সামনের দিনেও করবে। এটি তাদের মজ্জাগত বদাভ্যাসে পরিণত হয়েছে। এসব নিয়ে আমরা চিন্তিত বা বিচলিত নই। আমরা কোনো বিতর্ক দেখছি না। যারা বিতর্ক করার, তারা সব ঠিক থাকলেও করবে। এতে সরকারের কিছুই করতে পারবে না।’বিএনপির পক্ষ থেকে ফের নির্বাচনের যে দাবি তুলেছে, সে বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, ‘বিএনপি তো দাবির ওপরই আছে। বিএনপি প্রতিদিনই সরকার উৎখাতের ঘোষণা দিচ্ছে। ১৫ বছর ধরে তাই করে আসছে। এই নাকি তারেক রহমান চলে এলো। আমানউল্লাহ আমান কামান নিয়ে খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী করার ঘোষণা দিলেন। একজন তো বললো, আগামীকাল নিজ হাতে তালা খুলে খালেদা জিয়াকে বের করে আনবেন। এমন কত কথা, কত নাটক তো আমরা দেখলাম। দাবি করতে করতেই বিএনপির করুণ পরিণতি ঘটলো। আমরা বিএনপির শেষ পরিণতি দেখার অপেক্ষায় আছি।’‘সংবিধান, কার্যপ্রণালি বিধি, সংসদ নেতা, স্পিকার রয়েছেন বিরোধী দল বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে। সংসদীয় শাসনব্যবস্থায় ব্রিটিশ পার্লামেন্ট সারা বিশ্বের কাছে উদাহরণ। আমাদের পাশের দেশ ভারত বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশ। সব দেখে, বুঝেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে একটি বিষয় আমরা মনে করছি, সরকার পরিচালনার দায়িত্বে যেমন মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি থাকবে, বিরোধী দলের আসনেও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি থাকবে।’