মেডিকেল বোর্ডের সদস্য বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে খালেদা জিয়ার লিভার সিরোসিসের চিকিৎসায় যে ট্রান্সপোর্টেশন অব টিপস (টিআইপিএস) বসানো হয়েছিল তা সফলভাবে কাজ করায় তিনি অনেকটাই সুস্থ। তবে এই সুস্থতা ক্ষণস্থায়ী, স্বাভাবিক হতে লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করা জরুরি।বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) রাতে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপার্সনের বাসভবন ফিরোজায় খালেদা জিয়াকে আনার পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, টিআইপিএস বসানো এই চিকিৎসা পদ্ধতির মাধ্যমে আপাতত খালেদা জিয়ার লিভার ট্রান্সপ্লানটেশন করার আগ পর্যন্ত যত ধরনের পূর্ব প্রস্তুতি নিতে হয়, তার জন্য ডাক্তারদের হাতে কিছুটা সময় দেবে। ওনার এই সুস্থতাকে ধরে রাখতে চাইলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করতে হবে।
ডা. এ জেড এম জাহিদ বলেছেন, খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের বিষয় লাখো কোটি জনগণের দোয়া এবং হাসপাতালে চিকিৎসক থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রচেষ্টায় প্রায় ১৫৫ দিন পরে তিনি তার বাসভবন ফিরোজায় আসতে সক্ষম হয়েছেন। চিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শ করে তিনি বাসায় এসেছেন।
বাড়িতে নিয়ে আসা হলেও চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলবে জানিয়ে ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, ডা. শাহাবুদ্দিন তালুকদার এবং ডক্টর ফখরুদ্দিন মোহাম্মদ সিদ্দিকীর সরাসরি তত্ত্বাবধানে এবং মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে থেকে তিনি বাসা থেকে চিকিৎসা নেবেন।
তিনি জানান, খালেদা জিয়ার ক্রনিক লিভার ডিজিজের চিকিৎসা করা হয়েছিল। একই সঙ্গে ওনার শরীরে ট্রান্সপোর্টেশন অব টিপস (টিআইপিএস) স্থাপন করা হয়েছিল। আমরা চিকিৎসকরা এবং পরিবারের পক্ষ থেকে অনেক চেষ্টা করার পরও খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়া সম্ভব হয়নি।
পরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিশ্বখ্যাত জনস হপকিন্সের চিকিৎসক ডা. হামিদ আহমেদ আব্দুর রব, ডা. ক্রিসটোস স্যাভাস জর্জিয়াডেসসহ ডা. জেমস পিটার অ্যাডাম হ্যামিলটনের তত্ত্বাবধানে এনে বাংলাদেশে গত ২৬ অক্টোবর খালেদা জিয়ার প্রথমবারের মতো সফলভাবে টিপস প্রতিস্থাপন করা হয়। আর এই টিপস এখন পর্যন্ত সফলভাবে কাজ করছে। যার জন্য খালেদা জিয়া এখন অনেকটাই স্বাভাবিক ও সুস্থ বোধ করছেন। তাই উনি আজকে বাসায় এসেছেন।
খালেদা জিয়ার লিভার ট্রান্সপ্লান্ট একমাত্র সম্ভব জনস হপকিন্স হাসপাতালে এমনটা জানিয়ে খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের এই সদস্য বলেন, এই হাসপাতাল প্রতিদিনই চার থেকে পাঁচটা ট্রান্সপ্লান্ট করে থাকে। তারা এই বিষয়ে খুবই দক্ষ চিকিৎসক। আমরা সার্বক্ষণিক তাদের সঙ্গে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য বিষয়ে আলাপ আলোচনা করছি।
করোনার পর থেকে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য গুরুতরভাবে খারাপ হতে থাকে জানিয়ে ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, গত আড়াই বছর ধরে খালেদা জিয়াকে বেশ কয়েকবার এভার কেয়ার হাসপাতালে আনা হয়েছিল। এবারই তিনি দীর্ঘ সময় হাসপাতালে থেকেছেন, শুধু ওনার এই রোগের সুস্থতার জন্য। হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে টেকনিক্যাল স্টাফ সবাই খুব মমত্ববোধের সঙ্গে খালেদা জিয়ার চিকিৎসা করেছেন।ডা. জাহিদ হোসেন বলেন, খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার বিষয়ে আমরা চাইবো সরকারের সকলেই যেন তাদের নিজ জায়গা থেকে সঠিক দায়িত্ব পালন করেন।