দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন পর্যবেক্ষণে থাকা সাতটি দেশের পর্যবেক্ষকরা৷সোমবার (৭ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান তারা। এসময় পর্যবেক্ষক দলের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতির সাবেক উপ-সহকারী ও হোয়াইট হাউস এনএসসি এর চিফ অফ স্টাফ এবং আমেরিকান গ্লোবাল স্ট্র্যাটেজিস (এজিএস) এর সিইও আলেকজান্ডার বার্টন গ্রে৷।সংবাদ সম্মেলনে গ্রে বলেন, আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ সাতটি দেশের উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক বিশ্লেষক, প্রাক্তন কংগ্রেসম্যান এবং সাংবাদিকদের একটি দল। আমরা বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছি। গতকাল আমরা ৩টি দলে বিভক্ত হয়ে ঢাকা ও আশপাশের এলাকার ২০টি ভোটকেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করেছি।
তিনি বলেন, আমরা গত ৫ জানুয়ারি বাংলাদেশে এসেছি এবং গতকাল পর্যন্ত আমরা বাংলাদেশের মানুষকে দেখেছি তাদের ভোটাধিকারের ব্যাপারে খুবই আন্তরিক যা পৃথিবীর অন্য দেশে খুব কমই পাওয়া যায়। বিশ্বের অনেক দেশ আছে যারা ভোট না দেওয়ার জন্য জরিমানা আরোপ করে এবং অনেক দেশ আছে ভোট দিতে উৎসাহিত করার জন্য অতিরিক্ত নাগরিকত্ব সুবিধা প্রদান করা হয়৷ কিন্তু বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের ভোট দেওয়ার আগ্রহ ও উৎসাহ রয়েছে যা আমরা খুবই উৎসাহব্যঞ্জক বলে মনে করি।বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো যুক্তরাষ্ট্রের মানুষও বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে বেশ আগ্রহী তারা বাংলাদেশের উন্নয়ন সহযোগী উল্লেখ করে গ্রে বলেন, সবাই বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আশা করেছে। আমরা দেখেছি যে গতকাল সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে বিকাল ৪টায় শেষ হয়েছে। বাংলাদেশের ভোট প্রক্রিয়া বিশ্বের অনেক দেশের মতই।
গ্রে বলেন, কিছু রাজনৈতিক দল নির্বাচন থেকে বিরত থাকা এবং একটি প্রধান রাজনৈতিক দলের নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করায় ভোটের উৎসবমুখর পরিবেশে কিছুটা প্রভাব পড়েছে বলে মনে করছে পর্যবেক্ষক দলটি। যদি সব রাজনৈতিক, দলগুলো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে পরিবেশ আরও সুন্দর ও আনন্দময় হতো। আমরা যেসব কেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করেছি সেখানে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে আমরা দেখেছি, তারা ভোট দিতে যেয়ে কোনো বাধার সম্মুখীন হননি। অংশগ্রহণকারী প্রার্থী বা দল দ্বারা ভোটারদের কোনো ভয় দেখানো হয়নি৷ নির্বাচনে এটা গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের জন্য ভালো ইঙ্গিত দেয়।
তিনি বলেন, আমরা কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনার কথা শুনেছি৷ যেটি অপ্রত্যাশিত। কিন্তু সার্বিক পর্যালোচনা করলে নির্বাচনী পরিস্থিতিতে সেসব ঘটনা খুবই নগণ্য। সব ধরনের পরিস্থিতি বিবেচনা করে এখানে উপস্থিত সব পর্যবেক্ষক একমত যে বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে এবং সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়েছে।এসময় যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক কংগ্রেসম্যান ও সানডিগো সিটির কাউন্সিলম্যান জিম বেটস, অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস লেজিসলেটিভ কাউন্সিলের সাবেক পার্লামেন্ট মেম্বার শাওকেট মুলেনমানে, যুক্তরায্য থেকে আসা ইউরোপিয়ান বাংলাদেশ ইকনোমিক ফোরামের কমিউনিকেশন ডিরেক্টর ক্রিস্টোফার জন ব্লাকবার্ন, আয়ারল্যান্ড থেকে আসা ইইউ রিপোর্টার এর পলিটিক্যাল এডিটর নিকোলাস হু পয়েল, জার্মানির জিবিপি ইন্টারন্যাশনাল এর সিইও ভলকার উয়ে ফ্রেডরিখ, নরওয়ে থেকে আসা ওয়ার্ল্ড পিচ অর্গানাইজেশন এর প্রেসিডেন্ট অ্যান্ডার্স নিলস হেনরি, ইব্রাকি প্রিফেকচারাল অ্যাসেম্বলি জাপানের প্রাক্তন সদস্য ইয়োশিহিরো আইডিই উপস্থিত ছিলেন৷এসময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন পর্যবেক্ষকরা। তারা জানান, বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ সাধারণ মানুষ কোনো বাধা ছাড়াই ভোট দিতে পেরেছে। তারা কোথাও কোনো সহিংসতা দেখেননি।