দেশের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেতে বর্তমানে প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা দিয়ে পাস করে নিবন্ধন সনদ পেতে হয়। এরপর গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিয়োগের চূড়ান্ত সুপারিশ মেলে। ২০০৫ সাল থেকে চলে আসা এ প্রক্রিয়া পরিবর্তনে উদ্যোগ নিয়েছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। এজন্য নতুন একটি আইনের খসড়া তৈরি করা হয়েছে। সেটি অনুমোদন হলে বিলুপ্ত হবে এনটিআরসিএ। সূত্র বলছে, খসড়া আইনের আলোকে ‘সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)’- এর আদলে একটি নতুন বিধিবদ্ধ সংস্থা গড়ে তোলা হবে। এর নাম হবে ‘বেসরকারি শিক্ষক নির্বাচন ও নিয়োগ সুপারিশ কর্তৃপক্ষ’। এ সংস্থা পরিচালনায় ১৪ সদস্যের নির্বাহী বোর্ড থাকবে। এর অধীনে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সরাসরি পরীক্ষার মাধ্যমে বেসরকারি স্কুল-কলেজ ও মাদরাসায় নিয়োগ হবে, শিক্ষক নিবন্ধন সনদের ভিত্তিতে নয়।গত ১২ ডিসেম্বর এনটিআরসিএর জন্য নতুন আইন তৈরি সংক্রান্ত সভা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান। সভায় খসড়া আইনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হয়।জানতে চাইলে বুধবার (৩ জানুয়ারি) সকালে এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) এস এম মাসুদুর রহমান বলেন, ‘একটি খসড়া আইন করা হচ্ছে। এটি একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে। এতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সায় দিয়েছে। এজন্য আমরা এটির পূর্ণাঙ্গ রূপ দেওয়ার চেষ্টা করছি। সেটা হতে অনেক সময় লাগবে। এত তাড়াতাড়ি এটা নিয়ে বলার মতো কিছু নেই।’২০০৫ সাল থেকে শিক্ষক নিবন্ধন সনদ দিচ্ছে এনটিআরসিএ। প্রথম দিকে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষমতা ছিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটির হাতে। ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর এ প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনা হয়। এনটিআরসিএ-কে সনদ দেওয়ার পাশাপাশি শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশের ক্ষমতাও দেওয়া হয়।দেশে বর্তমানে বেসরকারি স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৩৪ হাজার। এর মধ্যে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ২০ হাজার ৩১৬টি, কলেজ দুই হাজার ৬৬৪টি, আলিয়া মাদরাসা ৯ হাজার ২৯২টি। বাকিগুলো কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিবন্ধনধারীদের নিয়োগের চূড়ান্ত সুপারিশ করে এনটিআরসিএ।