ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা (ডিবি) বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ বলেছেন, বিএনপি ভোট বর্জনের কর্মসূচির নামে যা করছে তা দেশ বিরোধী-রাষ্ট্রবিরোধী। তারা যে লিফলেট বিতরণ করছে সেখানে বলা হচ্ছে, সরকারকে সব ধরনের ট্যাক্স খাজনা, ইউটিলিটি বিল স্থগিত করুন।তারা একদিকে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে, অন্যদিকে নাশকতার কাজ করছে। হরতাল-অবরোধসহ ভোট বর্জনের কর্মসূচির নামে নাশকতার কাজে বিএনপি দিনমজুর-শ্রমিকদের ব্যবহার করছে বলেও দাবি করেন ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।রোববার (৩১ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ সব কথা বলেন।ডিবি প্রধান বলেন, বিএনপির এসব অপপ্রচার রাষ্ট্রদ্রোহী কাজ। তাদের এ অপপ্রচার সংবিধান বিরোধী, রাষ্ট্রবিরোধী, গণতন্ত্র বিরোধী এবং জন বিরোধী। এ প্রচেষ্টা থামানোর জন্য ডিএমপি বদ্ধপরিকর।তিনি বলেন, গত ২৮ অক্টোবর রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি খোরশেদ আলম সোহেল এবং কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মেহেদি হাসান পলাশসহ ১১ জনকে গ্রেপ্তারের পর ওই ঘটনায় রাজধানীর নিউ মার্কেট থানায় মামলা হয়।
ওই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) রাতে পশ্চিম ধানমন্ডি ও মোহাম্মদপুর এলাকায় ধারাবাহিক অভিযান চালিয়ে আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।গ্রেপ্তাররা হলেন নাজমুল হুদা ওরফে রাকিব (২৬), রাসেল মিয়া (২৭), নাহিদ হোসেন (৩৩) এবং বিকাশ কুমার শীল (২৮)।এদের মধ্যে নাজমুল হুদা রাকিব ছাত্রদল তেজগাঁও কলেজ শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, রাসেল ও নাহিদ নির্মাণ শ্রমিক এবং যুবদল কর্মী। আর বিকাশ কুমার শীল প্রিন্টিং দোকানের লোক।
এ সময় তাদের কাছ থেকে নির্বাচন বর্জন, সব রকমের ট্যাক্স, সেবা কর পরিশোধ থেকে বিরত থাকার আহ্বান সম্বলিত দুই হাজার পিস লিফলেট উদ্ধার করা হয়।মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, গ্রেপ্তার ছাত্রদল নেতা এবং যুবদল কর্মীরা স্বীকার করেছেন, নগদ টাকা, দলীয় পদ দেওয়ার লোভ দেখিয়ে ভোলা জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেক নির্মাণ শ্রমিক, পরিবহন শ্রমিকদের যুবদল এবং ছাত্রদলের বেশ কিছু সিনিয়র নেতার তত্ত্বাবধানে ঢাকায় আনা হয়। তাদের দিয়ে ঝটিকা মিছিল, মশাল মিছিল, ভাঙচুর-আগুন দেওয়া, বিস্ফোরণ ঘটানোসহ নির্বাচন বিরোধী লিফলেট ছাপানো এবং বিতরণের কাজ করা হচ্ছিল। সেই সিনিয়র যুবদল এবং ছাত্রদল নেতাদেরও খোঁজা হচ্ছে।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার জন্য দায়বদ্ধ। বিএনপির নেতাকর্মীরা একদিকে যানবাহন ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, বোমা বিস্ফোরণ, রেলের বগিতে আগুন দেওয়া রেলের স্লিপার চুরি করে দুর্ঘটনায় ফেলে দেওয়ার মতো জঘন্য ঘটনা ঘটিয়ে জনমনে আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা চালিয়েও সফল হতে পারেনি। এ ব্যর্থতাকে ঢাকতে নানা রকমের প্রোপাগান্ডা ছড়িয়ে জনগণকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করতে, নির্বাচন কেন্দ্রে না আসতে লিফলেট বিতরণ করছেন। লিফলেটের মাধ্যমে তারা নাগরিকদের সব প্রকারের খাজনা, কর ও বিল পরিশোধ না করে একটি অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির কুমন্ত্রণা দিচ্ছে। এভাবে তারা রাষ্ট্রদ্রোহিতার কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের এই অপপ্রচার, অপচেষ্টা সংবিধান বিরোধী, দেশ বিরোধী, গণতন্ত্র বিরোধী এবং জন বিরোধী। এ প্রচেষ্টা থামানোর জন্য ঢাকা মহানগর পুলিশ বদ্ধপরিকর।