সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলের পর থেকে প্রায় প্রত্যেকদিন বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হচ্ছে মিয়ানমারজুড়ে। আর তা ঠেকাতে পুলিশ ছুড়ছে গুলি।বিক্ষোভে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে অসংখ্য তাজা প্রাণ। আর এ প্রাণহানি ঠেকাতেই হাঁটু মুড়ে এক সন্ন্যাসিনী পুলিশের কাছে অনুরোধ জানিয়েছিলেন তার সন্তানদের দিকে যেন গুলি ছোড়া না হয়। এমনই একটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে। কিন্তু কার কথা কে শোনে! পুলিশ ঠিকই গুলি ছোড়ে। এতে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।
সিস্টার অ্যান রোজ নু তং এর অনুরোধ পুলিশের মন গলাতে পারেনি। কিন্তু যতটুকুই করেছেন তাতেই বাজিমাত। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে তার সাহসিকতার প্রশংসা ছড়িয়ে পড়েছে।
জানা যায়, মিয়ানমারের উত্তরাংশের মিটকিনা শহরে এই ঘটনা ঘটে। সাদা পোশাক পরিহিত ওই নারী এক জন ক্যাথলিক সন্ন্যাসিনী। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী দেশে এক সন্ন্যাসিনীর এই কাতর আবদেন আরও এক বার সামনে এনেছে সেনা শাসনে থাকা মিয়ানমারের ভয়ঙ্কর ছবি। সেনার সামনে এই সাহসিকতার জন্য প্রশংসিতও হয়েছেন তিনি।
ওই সন্ন্যাসিনী বলেন, আমি হাঁটু গেড়ে বসে কাতর অনুরোধ করেছি আমার সন্তানদের মেরো না। তাদের অত্যাচার করো না। বদলে আমাকে মেরে ফেলো।
‘সেনা যখন কয়েক জনকে গ্রেফতার করতে উদ্যত হয়েছিল তখন আমার ভয় লাগছিল। ছেলেগুলো ছুটে প্রাণে বাঁচার চেষ্টা করছিল। ওদের বাচাতে আমি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি’, যোগ করেন তিনি।
কিন্তু বৃথা গেছে সেই অনুরোধ। বিক্ষোভকারীদের লক্ষ করে গুলি ছোড়ে পুলিশ। মাথায় গুলি লেগে লুটিয়ে পড়ে এক কিশোর বিক্ষোভকারী।
তং বলেন, প্রচণ্ড গুলির শব্দ শুনলাম, তারপর দেখলাম একটা বাচ্চা ছেলের মাথা উড়ে গেছে, রাস্তা রক্তে ভেসে যাচ্ছে।
ফেব্রুয়ারি থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশের দখল নিয়েছে সেনাবাহিনী। তারপর থেকেই রাস্তায় নেমে সেনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। প্রায় প্রতিদিনই পুলিশের গুলিতে বিক্ষোভকারীদের মৃত্যুর খবর মিলছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে। সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা