হিমালয় কন্যা পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইছে। হিমালয় থেকে ধেয়ে আসা হিমেল বাতাস, গুমোট মেঘের ফাঁকে সূর্যের লুকোচুরি, সন্ধ্যার পর ভারী শিশির বিন্দু৷ এমন পরিবেশ বিরাজ করছে এখানে৷ হিমালয়ের অবস্থান খুব কাছাকাছি হওয়ার কারণে প্রতি বছর ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে এমন পরিবেশ বিরাজ করে৷ শুক্রবার (২২ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এনিয়ে টানা কয়েকদিন তাপমাত্রা ৯ থেকে ১০ ডিগ্রির ঘরে ওঠানামা করছে। মৃদু শৈত্যপ্রবাহের কারণে প্রচন্ড ঠান্ডার প্রকোপে জনজীবন একরকম বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যেবক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহ্ এসব তথ্য জানান।শীত উপেক্ষা করেই জীবিকার তাগিদে সকালেই কাজে যেতে দেখা যায় এ অঞ্চলের শ্রমজীবী মানুষদের। পাথর শ্রমিকরা নদীতে বরফ জলের মধ্যেই নেমে পড়েন কাজে। অপরদিকে, শীতের কারণে বাড়তে শুরু করে বিভিন্ন শীতজনিত রোগ ব্যাধি। চিকিৎসকরা শীতজনিত রোগ থেকে নিরাময় থাকতে বিভিন্ন পরামর্শ প্রদান করছেন। অভাবী মানুষজন প্রতিদিন গরম কাপড়ের জন্যে পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদে ধরনা দিচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, বিকেলের পর হিমেল বাতাসে সন্ধ্যার পর থেকে শীতের মাত্রাটা বেশি বাড়ে এখানে। রাত বাড়তে থাকলে শীতও বৃদ্ধি পায় অধিকহারে। তবে সকাল ১০টা থেকেই তাপমাত্রা বেড়ে দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকছে।
এ বিষয়ে কথা হয় জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার দর্জিপাড়া গ্রামের কৃষক আনসারুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, শীতকাল আসলে আমাদের মৌসুমি ফসল নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়। তীব্র শীতে ফসলে বিভিন্ন মড়ক দেখা দেয়। সদর উপজেলার হাফিজাবাদ এলাকার অটোরিকশা চালক জানায়, কাজ কমে যাওয়ায় সাপ্তাহিক কিস্তি আরেক দিকে সংসারের ব্যয়৷ ফলে আমাদের অনেক কষ্টে দিন কাটাতে হচ্ছে।
পাথর উত্তোলন শ্রমিক হাসিবুল করিম বলেন, নদীতে ডুবে পাথর কুড়িয়ে আমাদের সংসার চলে। গত কয়েক দিন ধরে শীতের কারণে নদীর পানিও অনেক ঠান্ডা। ঠিকমতো কাজ করতে না পারায় আমাদের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছর এ জেলায় শীত বেশি থাকে। এবারও শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিতরণ শুরু করেছি। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে শীতবস্ত্র চেয়ে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। প্রকৃত গরিব, অসহায় ও শীতার্তদের মধ্যে এসব শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে।