এখন যেটা হচ্ছে সেটা নির্বাচন নয়, বানরের পিঠা ভাগাভাগি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান।বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতি সৌধে শহীদ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে এই শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।এর আগে মঈন খান এ কথা বলেন।ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, গণতন্ত্র ও মানুষের ভোটের অভাবে বাংলাদেশের রাজনীতিতে সংঘাতময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এই বাংলাদেশের জন্য বুদ্ধিজীবীরা ১৯৭১ সালে জীবন দিয়েছিল কিনা, এটাই হচ্ছে আজকের প্রশ্ন।তিনি আরও বলেন, আমরা ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম। লক্ষ লক্ষ মানুষ বুকে রক্ত ঢেলে দিয়েছিল। আমাদের লক্ষ্য ছিল একটি স্বাধীন দেশ সৃষ্টি করবো। সেখানে গণতন্ত্র থাকবে। পাকিস্তানি কাঠামোর মধ্যে কোনোদিন গণতন্ত্র হতে পারে না। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের দোসর, এখানে আল বদর বাহিনী বুদ্ধিজীবী সমাজকে হত্যা করেছিল। তারা ভেবেছিল একটি দেশের বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হলে, ধ্বংস করা হলে, তাহলে হয়ত স্বাধীন বাংলাদেশ সেভাবে গড়ে উঠতে পারবে না। তাদের সেই অপচেষ্টার অংশ হিসেবে আমাদের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের জীবন হরণ করেছিল। এর চেয়ে ঘৃণ্য কাজ আর হতে পারে না।
বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য আরও বলেন, আজকে দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, স্বাধীনতার পর পঞ্চাশ বছর পেরিয়েছে। আজকে আমরা দেখছি সেই বাংলাদেশে একই ঘটনা ঘটছে। এখানে মানুষের কথা বলার স্বাধীনতা নেই, এখানে মানুষের ভোটের অধিকার নেই। এখানে গণতন্ত্র নেই, একদলীয় শাসন কায়েম হয়েছে। এখানে ভিন্নমতের কথা কেউ বলতে পারে না। এখানে মানুষ গুম হচ্ছে, বিরোধীদলকে হত্যা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আজকে আমরা একটি উদ্দেশ্য নিয়ে সংগ্রাম করছি, আর তা কিন্তু ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়। আজকে জনগণ বর্তমান সরকারকে প্রত্যাখ্যান করেছে। সরকারের নৈতিক পরাজয় ইতোমধ্যে হয়ে গেছে। তারা বুলেট, টিয়ার গ্যাস এবং সাউন্ড গ্রেনেড দিয়ে মানুষের মুখ বন্ধ রাখার চেষ্টা করতে পারে। কিন্তু আমরাও গণতান্ত্রিক নিয়ম অনুযায়ী সংগ্রাম করে আসছি। আমরা প্রতিবাদ করেই যাবো। বাংলাদেশে কোনো একদলীয় শাসন চলতে পারে না।
ড. মঈন খান বলেন, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে, মানুষ যে যার খুশি যেখানে খুশি ভোট দেবে। এখানে দিনের ভোট রাতে হতে পারবে না। মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া যাবে না। জনগণের স্রোত যখন আসবে তখন তারা ক্ষমতা ছেড়ে দিতে বাধ্য হবে। আমরা চাই বাংলাদেশের শান্তিপূর্ণ অবস্থায় এই সংঘাত ময় পরিস্থিতির সমাধান হোক। সরকার বলে অনেক উন্নয়ন করেছে, তাহলে তারা কেন ভয় পায় সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটে আসতে।
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আপনারা ভোটের ভাগাভাগি নিয়ে ব্যস্ত। এখন যেটা হচ্ছে সেটা নির্বাচন নয়, বানরের পিঠা ভাগাভাগি। এই কাজগুলো আপনারা প্রকাশ্যে করছেন, জাতিকে কলঙ্কিত করছেন। যেই দেশ গণতন্ত্রের জন্য স্বাধীন হয়েছিল, সেই দেশে এই নির্বাচনের প্রহসন চলতে পারে না।