ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২১ই নভেম্বর ২০২৪ , বাংলা - 

সবসময় চ্যালেঞ্জ নিতে অভ্যস্ত লাকী

স্টাফ রিপোর্টার।।ঢাকাপ্রেস২৪.কম

2021-03-08, 12.00 AM
সবসময় চ্যালেঞ্জ নিতে অভ্যস্ত লাকী

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) মাহমুদা আফরোজ লাকী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) থেকে আইন বিষয়ে উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করে যোগ দিয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জে সহকারী জজ হিসেবে। যিনি ছিলেন দেশের প্রথম নারী জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। কিন্তু তাতে মন ভরেনি সবসময় চ্যালেঞ্জ নিতে অভ্যস্ত লাকীর। চ্যালেঞ্জিং কিছু করা এবং সরাসরি মানুষের জন্য কিছু করার অদম্য ইচ্ছা থেকেই যোগ দিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশে।২০১০ সালে বিসিএস এর মাধ্যমে এএসপি হিসেবে যোগ দেন পুলিশে। সারদা পুলিশ একাডেমিতে এক বছরের ট্রেনিংয়ে নারী-পুরুষ মিলিয়ে সব ব্যাচমেটদের মধ্যে প্রথম হয়ে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন নিজের সক্ষমতা।

‘সকালই যেমন বলে দেয় দিনটি কেমন যাবে’ তেমনি লাকীও বুঝিয়ে দিয়েছিলেন নারী বলে সামান্যতম পিছিয়ে থাকা নয়, বরং সক্ষমতায় পুরুষের সঙ্গে সমানতালে কখনো খানিকটা বেশিই এগিয়ে থাকা সম্ভব। এরপর থেকে নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সফলতার সঙ্গে দায়িত্বপালন করেছেন ডিএমপি সদর দপ্তর, মহানগর গোয়েন্দা পুলিশে (ডিবি)। পুলিশের সর্বোচ্চ পদকসহ (পিপিএম) নানা পুরস্কার পাওয়া লাকী বর্তমানে দায়িত্বরত আছেন ডিএমপি মিরপুর ক্রাইম বিভাগের এডিসি হিসেবে।

সর্বশেষ করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় নারী হিসেবে পিছিয়ে নয় বরং জীবনের ঝুঁকি নিয়েই সামনে থেকে সার্বক্ষণিক মাঠে থেকে দায়িত্বপালন করে গেছেন তিনি। রাজধানীর সর্বপ্রথম করোনার হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত হওয়া টোলারবাগ ছিলো এডিসি লাকীর দায়িত্বাধীন এলাকার আওতাভুক্ত। প্রথম থেকেই করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় তার নেওয়া নানা উদ্যোগ সর্বস্তরে প্রশংসা পায়।৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে কথা বলেছিলেন এডিসি মাহমুদা আফরোজ লাকী।  

তার মতে, ৮ মার্চ নারীদের জন্য নতুন করে শপথ গ্রহণের-নতুন কর্মপরিকল্পনা সাজানোর দিন। নিজে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেন তাই প্রত্যেকটা নারীকেই চ্যালেঞ্জ নেওয়ার আহ্বান তার। একজন ছেলে হিসেবে যা করতে পারে, তার সবই মেয়েরাও করতে পারে বলে মনে করেন তিনি।পুলিশিংয়ের মতো একটি চ্যালেঞ্জিং পেশায় একজন নারী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি পুরুষের সঙ্গে সমানতালে এগিয়ে যাচ্ছেন। এতদূর আসার পেছনের আপনার অনুপ্রেরণা-

এ পর্যায়ে আসার পেছনের গল্পটা অনেক বড়। প্রথমত, আমরা তিন বোন, আমাদের কোনো ভাই নেই। আমাদের ভাই নেই এটা নিয়ে বাবা-মা কখনো দুঃখ না করলেও আত্মীয়-স্বজনের মনে খুব বেশি দুঃখ ছিলো। সবসময়ই শুনতে হতো তিনটাই মেয়ে, একসময় চলে যাবে বুড়ো বয়সে বাবা-মাকে কে দেখবে? বিয়ের পর সব সম্পত্তি অন্যের ছেলেরা পাবেন। আমাদের যে সামাজিক প্রেক্ষাপট সেখানে সবসময়ই বাবা-মায়ের ভরসা হিসেবে ছেলেকেই দেখা হয়। আত্মীয়-স্বজনদের এই জিনিসটা ছোটবেলা থেকেই মনের মধ্যে একটু কষ্ট দিতো। এটা এক ধরনের জেদই বলতে পারেন তখন থেকেই ভেবেছি, এমন কিছু করবো যাতে কেউ কখনো বাবার নাম ধরে বলতে না পারে যে তার কোনো ছেলে নেই।

দ্বিতীয়ত, নিজের পায়ে দাঁড়ানোর একটা জেদ ছিলো। সবসময়ই মনে হতো যে এমন কিছু করবো, যা একটা ছেলে করতে পারে বলে আমরা ধারণা করি। সেভাবেই বড় হচ্ছিলাম। আইন বিষয়ক পড়াশোনা শেষ করে আমি সহকারী জজ হিসেবে যোগদান করেছিলাম নারায়ণগঞ্জে। আমিই প্রথম নারী জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। কিন্তু তারপরেও মন মানেনি। মনে হয়েছে, আরো এমন কিছু করা দরকার, যেটা আরো বেশি চ্যালেঞ্জিং। যাতে সবাই ভাবতে পারে ছেলে হয়নি, কিন্তু ছেলের চেয়ে বেশি কিছু। মনের সেই জেদটাই এতদূর নিয়ে এসেছে।

তৃতীয়ত, আরেকটা বিষয় ছিলো আমার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা। ছোটবেলা থেকেই বাবার মুখ থেকে মুক্তিযুদ্ধের গল্প শুনতাম। সেসব গল্প শুনে মুক্তিযুদ্ধে যেতে না পারার আক্ষেপ কাজ করতো। সবসময় মনে হয়েছে দেশের জন্য কিছু করতে হবে, মানুষের জন্য কিছু করতে হবে। যেখান থেকে সরাসরি মানুষের জন্য কিছু করা যায়, মানুষের পাশে দাঁড়ানো যায়।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে নারীর অধিকার-ক্ষমতায়ন নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। কিন্তু এটা বাস্তবে কতোটা সম্ভব হয়েছে বলে আপনার মনে হয়?

আমরা আসলে যতোটা চেয়েছিলাম ততটা সম্ভব হয়নি এটা যেমন সত্য, তেমনি এটা মানতেই হবে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নারীর ক্ষমতায়নের জন্য যতটুকু করেছেন, আমার বিশ্বাস এভাবে অনেক আধুনিক দেশ করতে পারেনি। এটা শুধু একা সরকারের পক্ষে বা রাষ্ট্রের পক্ষে সম্ভবনা। অনেক ক্ষেত্রে আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন হয়নি, এটা দুঃখের বিষয়। তবে, প্রধানমন্ত্রীর কিন্তু চেষ্টার কমতি নেই। এখন নারীর অংশীদারিত্ব এসেছে, কিন্তু ক্ষমতায়ন বলতে আমরা যেটা বুঝি ডিসিসন মেকিং বা নেতৃত্বের কথা সেক্ষেত্রে সবজায়গায় এখনো নারীরা যেতে পারছেন না। সেজন্য নারী-পুরুষ আমাদের সবাইকেই এগিয়ে আসতে হবে। পুলিশে নারী সদস্যদের অনুপাত অনেক কম। এটা কী প্রাতিষ্ঠানিক কারণ নাকি ব্যক্তিগত বলে মনে হয়?

আসলে আজকে আমরা যতোটা সুন্দরভাবে ভাবতে পারছি, আমাদের নানি-দাদিদের সময় এটা ভাবা হয়নি। সেজন্য একটা গ্যাপ কিন্তু থেকেই যাচ্ছে, ওই গ্যপটাই কিন্তু আমরা এখনো পূরণ করেই যাচ্ছি। সেজন্যই যে ক্ষেত্রগুলোতে নারীদের সংখ্যা কম, কিন্তু নারীদের প্রয়োজন অনেক বেশি, সে জায়গাগুলোতে কোটা দিতে হবে। কোটার মাধ্যমে সংরক্ষিত আসন দিয়ে প্রথমে নারীদের এগিয়ে নিয়ে আসতে হবে। তাহলে আমরা এই গ্যাপটা পূরণ করতে পারবো। যেমন বাংলাদেশ পুলিশেই মাত্র সাড়ে সাত শতাংশ নারী পুলিশ, অন্তত পক্ষে ১০ শতাংশ হওয়া উচিৎ। জনসংখ্যার হিসেবে আমাদের নারী-পুরুষের সংখ্যা প্রায় সমান এবং সমস্যাও কিন্তু সমান। নারী-পুরুষ মিলেই সমাজ, সমাজ মানেই দুই ধরনের সমস্যাই আমাদের দেখতে হচ্ছে। এজন্যই আমার মনে হয় এখনো আমাদের ঘাটতিটা পূরণে বিশেষ কিছু ব্যবস্থা রাখতে হবে।

কর্মক্ষেত্রে নারীর চ্যালেঞ্জগুলো কী?

আমি শুধু একজন অফিসার নই, বাসায় একজন মা, একজন স্ত্রী। আমাকে কিন্তু অফিসের কাজের পাশাপাশি আমার পরিবার-সন্তানকে সময় দিতে হয়। পুলিশে আমাদের কাজটা কিন্তু ২৪ ঘণ্টার, রাত ২টার সময়ও কোনো দরকারে আমাকে বেরিয়ে যেতে হচ্ছে। আবার প্রয়োজনে গভীর রাত পর্যন্ত আমাকে বাইরে থাকতে হচ্ছে। একটা মেয়ের জন্য এই চ্যালেঞ্জটা নিতেই হয়। কিন্তু আমি দেখেছি একজন নারী কসাই, একজন নারী ভ্যান চালাচ্ছেন, রিকশা চালাচ্ছেন। তারা তাদের সংসারকে-পরিবারকে বাঁচানোর জন্য যে যুদ্ধ করছেন, আমাকে সেটা করতে হচ্ছে না। আমি তাদেরকে দেখে অনুপ্রাণিত হই। আমি এভাবে দেখি, তারা যেহেতু এসব পারছে তাহলে আমরা মেয়েরা কেন পারবো না?
অনেক মেয়ে শিক্ষাজীবনে মেধার স্বাক্ষর রাখলেও বিবাহিত জীবনে প্রবেশ করার পর আর সেটা কাজে লাগাতে পারছেন না। এটা নারীর মানষিক দূর্বলতা নাকি পারিবারিক-সামাজিক দায়?

আসলে এক্ষেত্রে একটা মেয়ের ব্যক্তিগত দায় যতটুকু, সমাজ বা তার পরিবারকেও কিন্তু দায়বদ্ধ না করার সুযোগ নেই। একটা মেয়ের কিছু করার জেদটাও থাকতে হবে, পরিবারকেও বুঝতে হবে। বিয়ের আগেই যদি বলে দেওয়া হয়, আমি সব করব কিন্তু আমাকে কাজ করে দিতে হবে। আমি জন্মেছি এতদূর পড়াশোনা করেছি, জন্মেছি কাজ করার জন্য ঘরে বসে থাকার জন্য নয়। তাহলে কিন্তু সমস্যাটা অনেকটাই সমাধান হয়। আমি পুলিশে কাজ করছি, দিন-রাত খাটছি, এটা দেখে সবাই আনন্দিত হয়। আমি লাকীকে দেখে তারা খুশি হচ্ছে, কিন্তু তার স্ত্রী বা তার ছেলের বউ বাইরে কাজ করবে এটা তারা মেনে নিতে পারছে না। এখানে পরিবার এবং সমাজেরও কিন্তু কিছু দায় থেকে যাচ্ছে। আমাদের সবারই এজন্য চিন্তা-ভাবনাটা পরিবর্তন আনা প্রয়োজন।

নারী হিসেবে পুলিশে চ্যালেঞ্জগুলো কী?

অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের পুলিশের সংখ্যা কম। জনসংখ্যার অনুপাতে পুলিশের সংখ্যা কম থাকার কারণে আমাদের ডিউটি করতে হয় অনেক বেশি। আসলে আমরা কখন যাচ্ছি আর কখন ফিরবো সেটা ঠিক করতে পারছি না। আরেকটা বিষয় আমাদের পরিবেশ। আমাদের বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় ডিউটি করতে হচ্ছে। রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে পথে-ঘাটে কাজ করতে হচ্ছে, কিন্তু আমাদের দেশে ভালো ফ্রেসরুমের ব্যবস্থা থাকে না। দেখা গেছে সারাদিন এমন কোথাও দাঁড়িয়ে ডিউটি করতে হয়, যেখানে কোনো পাবলিক টয়লেট নেই, এটা আমাদের মেয়েদের জন্য খুবই দুঃখজনক। শহরে আমরা অনেক আধুনিক হলেও গ্রামাঞ্চলে এখনো তেমন অবস্থা হয়নি। বাড়ির মেয়েটা পুরুষের মতো পোশাক পরে পুরুষের মতো ডিউটি করবে, এটাকে অনেকে নিতে পারেন না। এর ফলে পরিবার থেকেও অনেক সময় মেয়েদেরকে এই পেশায় আসতে দেন না।

আমি সকালে বেরিয়ে যাচ্ছি রাতে ফিরছি, দুটো মেয়ে তারা বাসায় একা থাকছে। তাদের দেখাশোনা কে করবে এটা ভাবতে হয় আমাকে। আমাদের দেশে ভালো মানের কোনো ডে কেয়ার সেন্টার নেই। আমি নারী যে বাইরে কাজ করবো, তাহলে আমার বাচ্চাদের কে দেখে রাখবে? গৃহপরিচারিকার হাতে শিশুদের টর্চারের মতো ঘটনা আমাদেরকে নিরাপত্তাহীন করে তুলে। যে আমি মানুষকে বাইরে নিরাপত্তা দেবো, কিন্তু আমার পরাবারের নিরাপত্তা কে দেবে? এটা একটা বড় প্রতিবন্ধকতা।

নারীদের এগিয়ে যেতে আপনার ব্যক্তিগত মতামত কী?

প্রথমে বলবো, হতাশ হওয়া যাবে না। আজকে আমাকেও এ পর্যায়ে আসতে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। চলতে গেলে পথে অনেক ঘাত-প্রতিঘাত অনেক প্রতিবন্ধকতা আসবে। কিন্তু সবসময় মনে রাখতে হবে আমি এগিয়ে যেতে চাই, এরজন্য আমাকে পরিশ্রম করতে হবে আমাকে মেধা খরচ করতে হবে। এটা করতে পারলে অবশ্যই নিজ লক্ষ্যে এগিয়ে যাবে। আরেকটা বিষয় কেউ যদি সততা নিয়ে কাজ করে, আমার বিশ্বাস প্রকৃতির কাছ থেকে সেটা রিটার্ন পাবেই।

নিজের কর্মস্থলের নারীদের জন্য আপনার ব্যক্তিগত উদ্যোগ কী?

আমি যখন ডিবিতে ছিলাম, তখন আমিই একাই লেডি অফিসার ছিলাম। সেখানেও মেয়ে কনস্টেবলরা কাজ করতেন, সুযোগ পেলেই তাদের সঙ্গে কথা বলতাম। কারণ আমি জানি মেয়েগুলো বাইরে কাজ করছেন, তাদেরও বিভিন্ন ধরনের ফ্যামিলি ক্রাইসিস আছে। সবসময় ওদেরকে আমি মোটিভেট করার চেষ্টা করতাম। আমি ডিএমপির ট্রেনিং একাডেমিতে নিয়মিত ক্লাস নেই। সেখানে আমি সবসময় সবাইকে মোটিভেট করার চেষ্টা করি। ছেলেদেরকে শেখাই মেয়েদের প্রতি কিভাবো আরো একটু সহনসীল হওয়া যায়, কিভাবে আরেকটু শ্রদ্ধা দেখানো যায়। এছাড়া, থানাগুলোতে আমি নিয়মিত ব্রিফ করি।

বর্তমান তরুণ প্রজন্ম যারা কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে, সেসব মেয়েদের প্রতি আপনার পরামর্শ কী?

বর্তমান সময়ে একটা অস্থিরতা দেখি সবার মধ্যে। অল্প সময়ের মধ্যে উপরে উঠে যেতে হবে সেলিব্রেটি হতে হবে, ভালো বেতনে চাকরি পেতে হবে, ভালো কিছু করতে হবে এমন প্রবণতা। এ জায়গাটা থেকে একটু সরে গিয়ে সবাইকে একটু স্থির হতে হবে। নিজের ভেতরে চিন্তার গভীরতা আনতে হবে। পাশাপাশি সাবধান থাকতে হবে কাউকে অন্ধের মতন বিশ্বাস করা যাবে না, সে আমার যতো কাছেরই হোক। আমি মনে করি মা ছাড়া পৃথিবীতে অন্ধ বিশ্বাস করার মতো আর কোনো মানুষ হয় না। আমি যাকে ভালোবাসছি আজ, কালকেই যে শত্রু হয়ে দাঁড়াবে না সেই ভরসা কিন্তু নেই। তাই কাউকে সম্পূর্ণরূপে বিশ্বাস করে আমার ব্যক্তিগত বিষয়, গোপনীয় বিষয়গুলো কারো সঙ্গে শেয়ার না করে এ বিষয়ে সাবধান থাকতে হবে। পাবলিক জায়গাগুলোতে ফেসবুক বা অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কতটুকু কি প্রকাশ করা যাবে এ বিষয়টা প্রত্যেকেরই আগে সিদ্ধান্ত নিয়ে করা উচিত। হুট করে একটা পোস্ট দিয়ে মনের কথা বলে দেওয়া বা ব্যক্তিগত ছবি কাউকে শেয়ার করে দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ এগুলোই পরবর্তী জীবনে ক্ষতির কারণ হতে পারে।

বর্তমানে নারীদের কাছ থেকে যে অভিযোগ বেশি পাওয়া যায়?

নারীদের কাছ থেকে যে অভিযোগ পাই, তার কিছু একদম পারিবারিক। যৌতুকের জন্য নির্যাতন, ধর্ষণের মতো কিছু অভিযোগ ছাড়া সবচেয়ে বেশি যে অভিযোগগুলো পাচ্ছি সেটা সাইবার রিলেটেড। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কারো সঙ্গে ছবি শেয়ার করা, কোনো ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ভিডিও করা হয়েছে, পরে সেটা দিয়ে ব্ল্যাকমেলিং করা হচ্ছে। এ ধরনের অভিযোগগুলো আমরা সবচেয়ে বেশি পেয়ে থাকি।

নারী দিবসকে আপনি কীভাবে দেখেন?

মার্চ মাসটা বাঙালি জাতির জন্য গৌরবের একটি মাস। ৮ মার্চ নারীদের জন্য আরো বেশি গৌরবের, আমি বলবো আনন্দের। অনেকে বলে একদিনের সভা-সমিতি করে কি হবে? আমি এটাকে ভিন্নভাবে দেখি, আমি মনে করি এই একটা দিন হচ্ছে নতুন করে শপথ গ্রহণ করার, নতুন করে কার্যক্রম গ্রহণ করার দিন। এবছর ৮ মার্চ আমি নতুন কিছু টার্গেট করবো, আগামী ৮ মার্চের আগে সেসব পূরণ করবো। আগামী ৮ মার্চ আমরা পেছনে তাকিয়ে দেখবো কতোটুকু করতে পেরেছি, এ থেকে আমাদের কি কি ভুল ছিলো, কি কি করার ছিলো, নতুন ৮ মার্চ আমরা নতুন আরেকটা টার্গেট নেবো। আমার মনে হয় এভাবে করে এগিয়ে যাওয়ার জন্যই এই ৮ মার্চ।  এবছর নারী দিবসের থিম চুজ টু চ্যালেঞ্জ। আমিতো চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছি, আমি প্রত্যেকটা নারীকে তা-ই বলি যে, চুজ টু চ্যালেঞ্জ। এখনই সময় আমাদের চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। ছেলেরা যে কাজগুলো পারে তার সব কাজ আমরাও করতে পারি। এদিন আমাদের একটা করে শপথ নিতে হবে এবং সারা বছর সেটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।