ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২১ই নভেম্বর ২০২৪ , বাংলা - 

গুজব ছড়াতে বিএনপি-জামাত পয়সা দেয়:তথ্যমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ।।ঢাকাপ্রেস২৪.কম

2023-11-21, 12.00 AM
গুজব ছড়াতে বিএনপি-জামাত পয়সা দেয়:তথ্যমন্ত্রী

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর নিবন্ধনের ওপর বাধ্যবাধকতা আরোপ করে আগামী সংসদে আইন হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। গুজব ছড়ানোর জন্য বিএনপি-জামায়াত নিয়মিত পয়সা দেয় বলেও জানান তিনি।মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে গুজব প্রতিরোধ সেল এবং ফ্যাক্টস চেকিং কমিটির সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিং ও মতবিনিময়কালে মন্ত্রী এসব কথা জানান। এ সময় প্রধান তথ্য কর্মকর্তা মো. শাহেনুর মিয়াসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।  বিদেশে বসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যে গুজব রটানো হয়, সে বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেবেন- জানতে চাইলে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, বিদেশে বসে নানা ধরনের গুজব অনেকে ছড়ায়। আমরা এসব বিষয়ে ওয়াকিবহাল। আগের তুলনায় অনেকটা কমেছে।তিনি বলেন, দুঃখজনক বিষয় হলো এ গুজব ছড়ানোর জন্য বিএনপি-জামায়াত তাদের নিয়মিত পয়সা দেয়। এগুলো তাতের এজেন্ট। আবার পয়সা না দেওয়া ও কম দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছে, সেটির অডিও ভাইরাল হয়েছে।  তিনি আরও বলেন, দেশের বিরুদ্ধে গুজব রটানোর জন্য যদি একটি রাজনৈতিক দল গুজব রটনাকারীদের পয়সা দেয় এর চেয়ে দুঃখজনক আর কিছু হতে পারে না। আমরা তাদের চিহ্নিত করেছি যারা এ ধরনের গুজব রটায়। সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর অনেক জায়গায় তাদের নোটিফাই করা হয়েছে।  

 

মন্ত্রী বলেন, কোনো কোনো ক্ষেত্রে কয়েক জায়গায় তাদের নামে মামলাও হয়েছে। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট দেশের সংশ্লিষ্ট আইন অনুযায়ী মামলা করতে আমাদের দলের নেতাদের বলা হয়েছে। কেউ যদি মনে করেন, বিদেশে বসে বসে গুজব ছড়াবেন এবং তিনি ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকবেন, তা হবে না।  

 

গুজব রটনাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেখা যাচ্ছে না- এ বিষয়ে দল বা সরকার কোনো ব্যবস্থা নেবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, গুজব রটালে দুটি চ্যালেঞ্জ আমরা মোকাবেলা করি। দেশের মধ্যে থেকে যখন কেউ গুজব রটায় তখন তার বিরুদ্ধে মামলা হয় আইসিটি আইনে। তখন আবার বিভিন্ন পত্রিকায় নিউজ হয় কেন মামলা হলো। দেখুন, গুজব তো অনলাইনে বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো হয়। সেটা তো ডিজিটাল মাধ্যম, আর সেজন্য ডিজিটাল মাধ্যমে মামলা হবে।  

 

তিনি বলেন,  সেখানে মামলা হলে অনেকেই চেঁচামেচি করেন, যে কেন মামলা হলো এবং গ্রেপ্তার করলে তো আরও বেশি কথাবার্তা হয়। তিনি কী করেছেন, সেটি তখন ঢাকা পড়ে যায়। এটি বড় চ্যালেঞ্জ। আরেকটি হলো আমাদের বিচার প্রক্রিয়ার মধ্যে দীর্ঘসূত্রতা রয়েছে। যেকোনো মামলা পাঁচ-সাত বছরের আগে শেষ হয় না। দ্রুত বিচার আইনে মামলা করলেও এক দুই বছর লাগে। এটা যে শুধু আমাদের দেশে তা নয়, যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশেই এমন। কারো কারো শাস্তি হয়নি তা নয়। তবে বিচার প্রক্রিয়া যেহেতু দীর্ঘ, তাই একটু সময় লাগে।  

 

মন্ত্রী বলেন, আমি আপনাদের কাছে অনুরোধ জানাব, কেউ যদি সত্যিকার অর্থে অপরাধ করে থাকেন তার তো বিচার হওয়া প্রয়োজন, তা না হলে এ অপরাধ কোনোদিন বন্ধ বা কমানো যাবে না। আপনারা জানেন আইন সংশোধন করা হয়েছে। অনেক সহজীকরণ করা হয়েছে।  

 

যেসব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়াচ্ছে, সেসবের স্বত্বাধিকারীদের  সঙ্গে সরকারের কোনো আলাপ আলোচনা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসলে এটি বড় প্রতিবন্ধকতা। ভারত আইন করেছে, সব সার্ভিস প্রোভাইডার বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকে নিবন্ধিত হতে হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইউকে আইন করেছে সেখানে নিবন্ধিত হতে হবে। আমাদের দেশে আইনটি এখনও হয়নি। আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনা করছি। বার বার তাগিদ দিচ্ছি এবং এখানে অফিস খোলার কথা বলছি। পাশাপাশি বাংলাদেশি আইনে নিবন্ধিত হওয়ার কথা বলছি। কিন্তু আমাদের এখানে নিবন্ধিত হতেই হবে, সে বাধ্যবাধকতা আরোপের আইনটি এখনও হয়নি। সেটি করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আমি আইনমন্ত্রীর  সঙ্গে কথা বলেছি, এখন তো আইন করার সময় নেই। আগামী সংসদে এ বিষয়ে আইন হবে বলে আমি আশা করছি।  

সাধারণ মানুষ কীভাবে ফ্যাক্টস চেক করতে পারবেন, সে বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে পিআইডি কাজ করতে পারে। আসলে একটি গুজব যখন ছড়ায়, তখন বুঝতে পেরেও কাউন্টার পোস্ট কেউ দেয় না। ফলে এটি ছড়াতে থাকে। গুজব তো দুই-তিনজনে ছড়ায়। সবাই মিলে কাউন্টার পোস্ট দিলে গুজব ছড়াবে না। সে বিষয়ে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করা প্রয়োজন।