চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) রসায়ন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র নাইমুল হাসান মিশন (২১) গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। একটি সুইসাইড নোটে তিনি লেখেন, ‘এ দুনিয়া আমার জন্য না, সবাই পারলে আমাকে মাফ করে দিবেন। বিদায়।’শনিবার সকালে শয়নকক্ষ থেকে পরিবারের সদস্যরা তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেন। মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন বলে পারিবারিকভাবে জানা গেছে। নাইমুল হাসান খাগড়াছড়ির রামগড়ের ফেনীর কুল এলাকার সেনাবাহিনীতে চাকরিরত মোহাম্মদ কামাল উদ্দীনের বড় ছেলে।
পরিবারের সদস্যরা জানান, রাতে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে বাসায় ফেরেন মিশন। খাবার খেয়ে স্বাভাবিকভাবে ঘুমাতে যান। সকালে কক্ষের দরজা না খোলায় ছোট ভাই জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে মিশনকে ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। পরে দরজা ভেঙে পরিবারের সদস্যরা তার লাশ নামিয়ে আনে।
এদিকে, মিশনের রুম থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়েছে; যেখানে তিনি লিখেছেন, ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। আমার বেঁচে থাকার জন্য কোনো ইচ্ছে নেই। তাই আমি এ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি। ডারউইন বলেছিলেন ঝঁৎারাধষ ভড়ৎ ভরঃঃবংঃ. নঁঃ র হড়ঃ বাবহ ভরঃ. আমার জন্য কেউ কখনো কষ্ট পেয়ে থাকেন পারলে মাফ করে দিয়েন। আম্মু আমাকে মাফ করে দিয়েন। লিমনের (ছোট ভাই) খেয়াল রাখিয়েন। আব্বু আমাকে সফল করার জন্য অনেক কিছু সহ্য করেছেন। আমি পারিনি। তাই আমি ক্ষমাপ্রার্থী। এ দুনিয়া আমার জন্য না, সবাই পারলে আমাকে মাফ করে দিবেন। বিদায়।’
পরিবারের সদস্যরা জানান, সে মানসিকভাব অসুস্থ ছিল। বেশ কয়েকবার চিকিৎসাও করানো হয়। দীর্ঘদিন ধরে বিষন্নতা এবং হতাশায় ভুগছিলেন। তবে আজ তার আচরণ স্বাভাবিক ছিল।
এদিকে, মিশনের অকাল মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে পুরো এলাকায়। সে খুবই মেধাবী একজন শিক্ষার্থী ছিল। পিএসসি, জেএসসি, এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়েছিল। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়নে ভর্তি হওয়ার কিছুদিন পর থেকে সে বিষন্নতায় এবং হতাশায় ভুগতে থাকে।
রামগড় থানার এসআই অজয় চক্রবর্তী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আত্মহত্যা করেছে বলে শুনেছি। তবে পুরোপুরি নিশ্চিত হতে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য খাগড়াছড়ি প্রেরণ করা হবে।