ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২১ই নভেম্বর ২০২৪ , বাংলা - 

বন্দিদের মুক্তি ও অধিকার নিশ্চিত করুন

নিউজ ডেস্ক ।। ঢাকাপ্রেস২৪.কম

2023-11-01, 12.00 AM
বন্দিদের মুক্তি ও অধিকার নিশ্চিত করুন

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) বাংলাদেশে রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে। বুধবার (১ নভেম্বর) হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানানো হয়।বিবৃতির শুরুতে গত ২৮ অক্টোবরের পরিস্থিতি উল্লেখ করে প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগের বরাতে বলা হয়, সেদিন রাজনৈতিক বিক্ষোভের ওপর পুলিশ অহেতুক শক্তি প্রয়োগ করেছে। সহিংসতায় অন্যান্য পক্ষ অংশ নিলেও এটি ছিল রাজনৈতিক বিরোধীদের ওপর চলমান পুলিশি দমন-পীড়নের অংশ।  ২৮ অক্টোবর এবং পরবর্তী সহিংসতায় দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ (প্রকৃতপক্ষে এক পুলিশ সদস্য নিহতের খবর গণমাধ্যমে এসেছে) কমপক্ষে ১১ জন নিহত এবং কয়েকশ লোক আহত হয়েছেন। এইচআরডব্লিউ মনে করে, বাংলাদেশ সরকার একটি শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আন্তর্জাতিক আহ্বান এবং নিজস্ব প্রতিশ্রুতি উপেক্ষা করছে। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচনের পরিকল্পনা করা হয়েছে।হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়াবিষয়ক উপ-পরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলি বলেন, অনেক বাংলাদেশি বলছেন, নির্বাচনে বিরোধীদের অংশগ্রহণ ও ভোট দেওয়ার অধিকার বাধাগ্রস্ত করার লক্ষ্যে সরকার ধরপাকড় চালানোর কারণে তারা সহিংসতা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন।তিনি বলেন, বিরোধীদের লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে, তাদের হয়রানি করে এবং কারান্তরীণ করে নির্বাচন আয়োজন করা হলে, তা যে সুষ্ঠু হবে না, সে বিষয়ে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সহযোগীদের জোর দিয়ে বলতে হবে।  হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, সরকারের উচিত সহিংস বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেন জাতিসংঘের ‘বেসিক প্রিন্সিপালস অন দ্য ইউজ অব ফোর্স অ্যান্ড ফায়ারআর্মস বাই ল এনফোর্সমেন্ট অফিশিয়ালস’ নীতিমালা মেনে চলে, সেই নির্দেশ দেওয়া।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশের আগে বিরোধী দলের দেড় হাজার লোক গ্রেপ্তার হয়েছেন। বিএনপি নেতারা বলেছেন, কর্তৃপক্ষ বিরোধী দলের সদস্যদের বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে। ২৮ অক্টোবরের সমাবেশের আগে ঢাকাজুড়ে চেকপয়েন্টও বসিয়েছিল পুলিশ। অন্য জায়গা থেকে সমাবেশে অংশ নিতে আসার সময় বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিরোধী দলের ভাষ্য, গত জুলাইয়ে একই ধরনের বিক্ষোভ হওয়ার পর থেকে প্রায় পাঁচ হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

 

হিউম্যান রাইট ওয়াচের বিবৃতিতে বলা হয়, আটক ব্যক্তিদের ওপর নির্যাতন ও অন্যান্য হয়রানিমূলক কর্মকাণ্ড চালানোর যে অভিযোগ আছে, সেগুলোর পুঙ্খানুপুঙ্খ ও স্বাধীন তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। দোষী ব্যক্তিদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, বাংলাদেশে এক দশক আগে পাস হওয়া নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন কার্যকর হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত শুধু একটি মামলায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।

 

মীনা গাঙ্গুলি বলেন, আন্তর্জাতিক অংশীদারদের স্পষ্ট দিতে হবে, নির্বাচনী হয়রানি চলতে থাকলে তারা বাংলাদেশের সঙ্গে স্বাভাবিক ব্যবসায়িক কার্যক্রম আর চালাবে না। তাদের উচিত গণগ্রেপ্তার এবং বিরোধীদের ওপর দমন–পীড়নের বিরুদ্ধে নিন্দা জানানো। বাংলাদেশ যদি নির্যাতন বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়, তবে বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক সম্পর্কের ওপর প্রভাব কী পড়বে, তারও একটি রূপরেখা তৈরি করা প্রয়োজন।