বেতন বাড়ানোর দাবিতে চতুর্থদিনের মতো আন্দোলনে নেমেছে গাজীপুরের কোনাবাড়ী, শফিপুর ও মৌচাক এলাকার গার্মেন্টস শ্রমিকরা। এসময় তারা অন্তত অর্ধশত বাস, ট্রাক, প্রাইভেটকারসহ বিভিন্ন যানবাহন ভাঙচুর করে এবং একটি জিপে আগুন ধরিয়ে দেন। এতে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে।বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) সকাল ৯টার পর থেকেই কোনাবাড়ী, শফিপুর ও মৌচাক এলাকার আশপাশের শ্রমিকরা মহাসড়কে নেমে আন্দোলন শুরু করে। এসময় তারা বেতন বাড়ানোর দাবি জানান। পরিস্থিতি বিবেচনায় কয়েকটি কারখানায় ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি বিবেচনায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ।আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানান, বর্তমানে যাদের বেতন সাত হাজার থেকে আট হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে, তাদের বেতন ২৩ হাজার টাকা করার দাবি করেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে বর্তমান বেতনে তাদের চলতে খুব কষ্ট হচ্ছে। মাস শেষ হওয়ার আগেই বেতনের টাকা ফুরিয়ে যাচ্ছে। এক প্রকার তাদের অমানবিক জীবনযাপন করতে হচ্ছে।
কারখানা শ্রমিক ও শিল্প পুলিশ জানায়, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক ও তেলিরচালা এলাকায় অবস্থিত লাগেজ এ্যাপারেলস লিমিটেড, এটিএস এ্যাপারেলস লি. হাইড্রোঅক্সাইড লিমিটেড এবং কোনাবাড়ী এলাকার এলজেড লিমিটেড, ওরিয়েন্ট এলিউর লিনজেরি লিমিটেড নামক কারখানার শ্রমিকরা সকালে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। শ্রমিকরা তাদের বেতন ২৩ হাজার টাকা করার দাবি জানায়। এছাড়া মৌচাক এলাকার গ্লোবাস, কোকোলাসহ বেশ কয়েকটি কারখানা শ্রমিকরা একই দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেছে।শিল্পপুলিশ জানায়, শ্রমিকদের বিক্ষোভের কারণে তেলিচালা এলাকার বেশ কয়েকটি কারখানায় আজ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশ-২ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মঈনুল হক জানান, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই শ্রমিকরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কোনাবাড়ী, মৌচাক ও শফিপুর এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে জড়ো হয়ে মহাসড়ক অবরোধ করছে। আমরা গিয়ে তাদের বুঝিয়ে মহাসড়কে থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরপরই তারা মহাসড়কের অন্য অংশে অবরোধ করছে। এতে মহাসড়কে যান চলাচলের বিঘ্ন হচ্ছে।
গাজীপুর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) নাজমুস সাকিব খান বলেন, শ্রমিকরা মহাসড়কের যে স্থানেই অবরোধ করছে পুলিশ সঙ্গে সঙ্গেই সেখানে গিয়ে তাদের বুঝিয়ে সরিয়ে দিচ্ছে। আবার মহাসড়কের অন্য আরেক জায়গায় তারা অবরোধের চেষ্টা করছে। সাধারণ মানুষের চলাচলে বিঘ্ন ও জানমালের যেন কোনো ক্ষতি না হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা কাজ করছি। এখনো আমরা পরিস্থিতি বিবেচনা করে হার্ড লাইনে যাওয়ার কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা সতর্ক অবস্থানে আছি।